নেত্রকোনার বারহাট্টায় প্রেমের প্রস্তাবে ব্যর্থ হয়ে এক স্কুলছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে মো. কাওছার মিয়া (২০) নামে একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে আসামির উপস্থিতিতে জেলা ও দায়রা জজ মো. হাফিজুর রহমান এ রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মো. কাওছার মিয়া নেত্রকোনা সদরের বারহাট্টা উপজেলার প্রেম নগর গ্রামের মো. শামছু উদ্দিনের ছেলে।
হত্যাকাণ্ডের শিকার মুক্তি রানী বর্মণও একই গ্রামের নিখিল চন্দ্র বর্মণের মেয়ে। সে প্রেম নগর ছালিপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। এমন রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে মুক্তির বাবা-মা ও স্বজনরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানান।
জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার বাউসী ইউনিয়নের প্রেম নগর ছালিপুড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী মুক্তি রানী বর্মণকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় একই গ্রামের বখাটে মো. কাওছার মিয়া। তার প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় প্রায় সময় বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে উত্যক্ত করতো। এর প্রতিবাদ করায় ২০২৩ সালের ২ মে প্রতিদিনের ন্যায় সহপাঠী ও বন্ধুদের সাথে স্কুল থেকে ফেরার পথে প্রেম নগর গ্রামের ঈদগাহ মাঠের কাছে পৌঁছতেই পেছন থেকে দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে মুক্তিকে। এ সময় তার সহপাঠীরা ভয়ে পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসী মুক্তিকে উদ্ধার করে বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্ত্যব্যরত চিকিৎসক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরদিন মরদেহ বাড়ি নিয়ে আসে স্বজনরা। এ ঘটনায় প্রেম নগর জেলে পাড়ার নিহত মুক্তি রানী বর্মণের বাবা নিকিল চন্দ্র বর্মণ বাদী হয়ে বারহাট্টা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এদিকে পুলিশ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই জঙ্গলে পালিয়ে থাকা কাওছারকে গ্রেফতার করে। পরে ৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী শেষে আদালতের মাধ্যমে আসামিকে জেল হাজতে প্রেরণ করে। পুলিশ তদন্ত শেষে একই বছরের ৩১ জুলাই আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। আদালতে ১৭ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামির উপস্থিতিতে বিচারক এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামিকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ে উল্লেখ করা হয়, আসামি সাত দিনের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপীল করতে পারবে। এদিকে দুই বছরের মধ্যে রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আবুল হাসেম সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ