বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে সৃষ্ট বৈরী আবহাওয়ার কারণে বরিশালের অভ্যন্তরীণ সব রুটে আজ শুক্রবারও দ্বিতীয় দিনের মতো লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। নদী ও সাগর এখনো উত্তাল থাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে স্বস্তির খবর, ঢাকা-বরিশাল রুটের নৌযান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা সেলিম রেজা আজ সকালে জানিয়েছেন, আবহাওয়ার সংকেত এখনো বলবৎ আছে এবং নদীতে ঢেউয়ের রোলিং থাকায় অভ্যন্তরীণ রুটের ছোট লঞ্চগুলোর চলাচলে নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা হয়েছে। আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি হলে দ্রুতই এসব রুটে লঞ্চ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে। যাত্রীদের নিরাপত্তাই যে তাঁদের প্রধান অগ্রাধিকার, সেকথাও তিনি উল্লেখ করেন।
বরিশাল আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক আনিসুর রহমান নিশ্চিত করেছেন, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নিম্নচাপটি উপকূল অতিক্রম করলেও এর প্রভাব আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকবে। ফলে আজও বিভিন্ন এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। নদী বন্দরে ২ নম্বর এবং সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে, যা বর্তমান পরিস্থিতির গুরুত্ব তুলে ধরছে।
আনিসুর রহমান আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত, ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তিনি পূর্বাভাস দিয়েছেন, ভারী বর্ষণ আরও দু-এক দিন চলতে পারে, তবে এরপর ধীরে ধীরে নিম্নচাপের প্রভাব কেটে যাবে এবং আবহাওয়া স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
এদিকে, নিম্নচাপের প্রভাবে গত দু'দিন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সাতটি নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করলেও আজ পরিস্থিতি অনেকটাই স্থিতিশীল। পানি উন্নয়ন বোর্ড বরিশালের জলানুসন্ধান বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, আজ বিভাগের কোনো পয়েন্টে কোনো নদীর পানি বিপদসীমার উপরে নেই। আমাদের ১৯টি পয়েন্টের পর্যালোচনা বলছে, সবখানে নদীর পানি স্বাভাবিক উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। এটি বন্যার আশঙ্কা অনেকটাই কমিয়ে এনেছে।
সামগ্রিকভাবে, নিম্নচাপের কারণে জনজীবনে কিছুটা বিঘ্ন ঘটলেও, কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ এবং পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার প্রবণতা আশাব্যঞ্জক। স্থানীয় প্রশাসন ও আবহাওয়া অফিসের নির্দেশাবলী মেনে চলতে সকলের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল