কোরবানির ঈদ সামনে রেখে চাঁদপুরের প্রায় ১,৫০০ কামারশালায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রায় ৩ হাজার কারিগর। দিন-রাত খেটে দা, বটি, ছুরি সহ লোহার বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তৈরি করছেন তারা। তবে ক্রেতারা বলছেন, আগের চেয়ে দাম কিছুটা বেশি। অপরদিকে কারিগরদের দাবি, কাঁচামাল ও অন্যান্য উপকরণের দাম বাড়ায় আগের মতো লাভ হচ্ছে না। এই শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা সরকারের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছেন।
হাতুড়ির ‘টুং-টাং’ শব্দ যেন জানান দিচ্ছে কামারশালাগুলোর কর্মতৎপরতা বেড়েছে। বছরের অন্যান্য সময় লোহার জিনিসের চাহিদা কম থাকলেও ঈদুল আজহা সামনে রেখে তাদের দম ফেলার ফুরসত নেই। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসে, ততই বাড়ে ব্যস্ততা, বাড়ে নির্ঘুম রাতের কাজ। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্ডার সরবরাহ করার চাপও বাড়ছে। জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১,৫০০ কামারশালা রয়েছে।
স্থানীয় কামার দীপক চন্দ্র কর্মকার বলেন, ‘আমি ও আমার সহকর্মীরা দিনরাত পরিশ্রম করছি। বর্তমানে শ্রমিকদের পারিশ্রমিক, কয়লা ও লোহার দাম বেড়েছে। এসব লোহার জিনিসপত্র তৈরি করতে অনেক খরচ পড়ে। ফলে দাম একটু বেশি নিতে হলেও, তাতেও পুষিয়ে উঠতে পারছি না। ব্যবসা টিকিয়ে রাখাই এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। পূর্বপুরুষদের পেশা বলে ছেড়েও দিতে পারছি না।’
ক্রেতা আ. কুদ্দুস মুন্সি ও মজিবুর রহমান বলেন, ‘প্রতিটি দা ও বটি ৫০০ থেকে ১,০০০ টাকা, ‘হাত দা’ বা চাপাতি ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, এবং ছুরি আকারভেদে ১০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এবার দাম অনেকটাই বেশি। তাই অনেকে পুরনো দা-ছুরি ধার করিয়ে নিচ্ছেন।’
চাঁদপুর বিসিক জেলা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. শাহরিয়ার খান বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে কামার শিল্পকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে। বিসিক-এর পক্ষ থেকে আমরা সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত। তারা যদি প্রশিক্ষণ বা আর্থিক সহায়তার জন্য আসে, তাহলে আমরা সহায়তা দেব। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে বিসিক ট্রেনিং ইনস্টিটিউটসহ ১৫টি জেলায় দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম ও মাইক্রোক্রেডিট লোনের ব্যবস্থা রয়েছে। আগ্রহীরা প্রশিক্ষণের পাশাপাশি লোনও পেয়ে থাকেন। ইতোমধ্যে অনেকেই ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প থেকে ঋণ নিয়েছেন। এখন কেউ চাইলে, তারাও সহযোগিতা পাবেন।’
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ