কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকার দায়ে একটি হোটেলে অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে আটক করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এর মধ্যে ৩ তরুণকে সাজা দিয়ে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং অপর ৩ তরুণীকে মুচলেকা দিয়ে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বিকালে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব মহাসড়কের পাশে কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা ইউনিয়নের হোটেল রিলাক্সে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাইদুল ইসলামের নির্দেশে এবং উপস্থিতিতে হোটেল রিলাক্স-এ অভিযান পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লাবনী আক্তার তারানা।
আটক ও সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, হোটেল রিলাক্সের রাঁধুনি মো. শফিকুল ইসলাম (২৫), মো. হোসেন (১৯) ও পাপন সূত্রধর (১৯)। ভ্রাম্যমাণ আদালত শফিকুল ইসলামকে তিন মাস এবং হোসেন ও পাপনকে এক মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের সময় থেকে তখনকার প্রশাসন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় আর্থিক সুবিধা দিয়ে হোটেল পরিচালনা করে আসছিল হোটেল মালিক মাহাতাব উদ্দিন গরম। এতে কটিয়াদীসহ আশপাশের স্কুল-কলেজসহ উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীদের হোটেলের ভেতরের গোপন গোল ঘরে একান্তে সময় কাটানোর সুযোগ দিয়ে আসছে। ফলে অসামাজিক কার্যকলাপ ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। এই বিষয়ে প্রশাসনকে এমন অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে যেখানে অপরাধ হবে সেখানেই তারা কঠোর পদক্ষেপ নেবেন বলে তারা প্রত্যাশা করেন।
কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাইদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমে বলেন, আমরা গোপন সংবাদে খবর পেয়েছি এখানে অনৈতিক কর্মকাণ্ড হয় সেই ভিত্তিতে হোটেলে অভিযান চালানো হয়। এ সময় অনৈতিক কাজে জড়িত থাকায় ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। তারা সবাই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ৩ তরুণকে সাজা দিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং অপর ৩ তরুণীকে মুচলেকা দিয়ে তাদের অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অভিযানের সময় হোটেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পালিয়ে গেছেন। এ সময় রেস্টুরেন্টটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, এসব হোটেলগুলো যেন অনৈতিক কাজের নিরাপদ স্থানে পরিণত হয়েছে। বেশিরভাগ হোটেল দিয়ে চলছে এসব ব্যবসা। এতে খুব সহজেই অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া তরুণ-তরুণীরা। এছাড়া পরকীয়া প্রেমিক-প্রেমিকারাও সহজেই অসামাজিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। ভিতরে ছোট ছোট কক্ষ রয়েছে। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের গার্ডিয়ানদের আরও সচেতন হতে হবে তাদের সন্তানদের সবসময় তদারকির মধ্যে রাখতে হবে।
অভিযান পরিচালনা করার সময় উপস্থিত ছিলেন-কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাইদুল ইসলাম, উপজেলা ভূমি অফিসের অফিস সহকারী কামরুল ইসলাম ও কটিয়াদী মডেল থানার পুলিশের একটি টিম।
বিডি প্রতিদিন/এএ