কক্সবাজারে উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য পরীক্ষার জন্য একটি পরীক্ষাগার স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে দ্রুত মাদক সংক্রান্ত মামলার তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত ও নিষ্পত্তি সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সোমেন মন্ডল।
রবিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ কক্সবাজার এলাকায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের জন্য গঠিত টাস্কফোর্স’ এর প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য সোমেন মন্ডল এই টাস্কফোর্সের সদস্য সচিব।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, মাদকের মূল ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে কক্সবাজারকে ব্যবহার করছে চক্রগুলো। এ কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছে সদ্য গঠিত টাস্কফোর্স।
সেনাবাহিনী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়ে পরিচালিত সাড়াশি অভিযানে গত এক মাসে জব্দ হয়েছে ২১ লাখের বেশি ইয়াবা, ক্রিস্টাল মেথ, গাঁজা ও বিদেশি মদ। আটক হয়েছে শতাধিক কারবারি। সীমান্ত দিয়ে মাদক প্রবেশ ঠেকাতে সবগুলো সংস্থা একসাথে কাজ করছে। গোয়েন্দা নজরদারি ও অভিযান দুই দিকেই জোর দেওয়া হয়েছে।
টাস্কফোর্স বলছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা ও আইনি প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার মাধ্যমে মাদক নেটওয়ার্ক ধ্বংস করা হবে।
চলতি বছরের ১৪ জুলাই কক্সবাজার বিয়াম আঞ্চলিক কেন্দ্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এক বৈঠকে টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তীতে ২০ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ কক্সবাজার এলাকায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের জন্য টাস্কফোর্স’ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বিত অভিযান জোরদার, সমাজে মাদকবিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মাদক মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি নিশ্চিতকরণ এই তিনটি কৌশলে কাজ করছে টাস্কফোর্স।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কক্সবাজারের উপপরিচালক ও টাস্কফোর্সের সদস্য সচিব সোমেন মণ্ডল জানান, গঠন হওয়ার পর থেকে চলতি সময়ে অভিযান চালিয়ে জব্দ করা হয়েছে ২১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৮৩ পিস ইয়াবা, প্রায় দেড় হাজার লিটার দেশি মদ, ৩৮ কেজি গাঁজা, ৭৩৫ ক্যান বিয়ার ও আড়াই কেজির বেশি ক্রিস্টাল মেথ। একই সঙ্গে গ্রেফতার হয়েছে ৩৪৭ জন মাদক ব্যবসায়ী।
টাস্কফোর্সের মতে, কেবল আইন প্রয়োগ নয়, সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ ছাড়া মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। এজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় নেতা, জনপ্রতিনিধি ও তরুণদের সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গণমাধ্যমকেও প্রচারণায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ