রংপুরে গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কর্মকাণ্ডে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাক্ষীরা। রবিবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এই প্রতিবাদ জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মামলার অন্যতম সাক্ষী শাহরিয়ার সোহাগ বলেন, শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিতে ট্রাইব্যুনালের তরফ থেকে কোনো সাক্ষীর সাথে যোগাযোগ করা হয়নি। অথচ ট্রাইব্যুনাল তিনবার সাক্ষী আনতে ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলার চেষ্টা করা হয়েছে, আবু সাঈদ হত্যা মামলায় সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিতে আসছে না। বিষয়টি জানতে পেরে মামলার কমপক্ষে পাঁচ জন সাক্ষী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ জানিয়েছেন। আমরা টাইব্যুনালের এমন কর্মকান্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
শাহরিয়ার সোহাগ আরও বলেন, আবু সাঈদ হত্যা মামলার বিচারটি দুই হাজার শহীদদের বিচার পাওয়ার একটি প্রতীক হিসেবে দেখতে পাই। এ মামলার রায়ের জন্য সারাদেশের মুক্তিকামী মানুষ তাকিয়ে রয়েছে। আমরা চাই অতিদ্রুত বিচারিক কার্যক্রম উজ্জীবিত করা হোক। সাক্ষীরা মামলায় সাক্ষ্য দিতে মুখিয়ে রয়েছে। আমরা চাই নির্বাচনের আগে এ মামলার রায় হোক। এ বিচার কার্যক্রম মাপকাঠি হবে গণঅভ্যুত্থানে সফল নাকি ব্যর্থ।
আবু সাঈদ হত্যা মামলার এই সাক্ষী অভিযোগ করেন, যারা বিগত সময়ে ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়েছে এবং যাদের শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় রাখা সম্ভব হয়নি তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি মামলা করেছে। অস্ত্র ও সন্ত্রাসী তৎপরতার মামলা হওয়ার কথা থাকলেও তারা বিস্ফোরক আইনে মামলা করেছে। এতে করে মামলার গুরুত্ব হারিয়েছে। অথচ ২৮ জন শিক্ষক-কর্মকর্তাদের নামসহ তথ্য প্রমাণ প্রশাসনের কাছে দিলেও তারা মামলায় ১৩ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে। এতে ১০ থেকে ১২ জন সাক্ষী হলেও মামলার ৭ থেকে ৮ মাসে মাত্র একজন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
ইউজিসির কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কিছুদিন আগে ইউজিসি থেকে জুলাই আন্দোলনকারীদের তালিকা চাওয়া হয়েছিল। আমরা সেই অনুযায়ী তালিকা প্রেরণ করেছি। সম্প্রীতি ইউজিসি’র প্রধান কর্মকর্তা জুলাই যোদ্ধাদের সতর্ক থাকতে বলে যে বার্তা দিয়েছেন তার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সম্প্রীতিদেশে দুই জন জুলাই যোদ্ধা আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। আমরা শহীদ আবু সাঈদ হত্যার বিচার এবং জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তার দাবি করছি।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের গেজেটেড জুলাইযোদ্ধাদের নিয়ে ‘জুলাই সংগ্রাম ঐক্য পরিষদ’ নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দেন শাহরিয়ার সোহাগ।
বিডি প্রতিদিন/কামাল