জাদুকর মেজ কাকা

তোয়াবুর রহমান

প্রিন্ট ভার্সন

জাদু বিদ্যা; কেউ বিশ্বাস না করলেও ধোঁকাবাজিতে চাম্পিয়ন ছিল মেজো কাকা। বাড়ির এক রকম- কর্তাও বলা যায় তাকে। ও বলা হয়নি, মেজো কাকা কে? সে হলো- আমাদের বাড়ির জাদুকর। মেজো কাকা বাড়ির সবচেয়ে চালাক, চতুর, জ্ঞান, বিদ্যা, বুদ্ধি সব তার একটু হলেও বেশি। বাড়ির সব বাচ্চা তার কাছে নানান ধরনের আবদারও করে। কাকা প্রতিদিন নানা কৌশলে পাশ কাটিয়ে চলে যায়, বাচ্চারাও নাছোড়বান্দা, এভাবে কদিন চলবে। কাকাকে বাগে পেলে ঘাড় মটকাবে কাকার। মজার বিষয় হলো মেজো কাকা টুকটাক জাদুও জানত, তাই নির্দ্বিধায় কাকা বাচ্চাদের ঠকাতে থাকে। চলতে চলতে এক দিন কাকাকে পেয়ে যায় বাচ্চারা। আজ এর একটা বিহিত করেই ছাড়বে। তাদের একটাই বায়না আজ টাকা দিতে হবে, খাবার দিতে হবে, আরও কত কী! কাকা পড়ে গেল বেকায়দায়। এবার কাকা বুদ্ধি খাটিয়ে বললো, যাও বাচ্চারা কিছু মাটি নিয়ে আসো। আমি সেই মাটি দিয়ে তোমাদের সব আবদার পূরণ করব। বাচ্চারা যে যার মতো মাটি নিয়ে এলো। কাকা বললো, একে একে সবাই আমার ঘরে মাটি দিয়ে যাবে। যার যা চাওয়া তাই চাইবে। তবে কথা হলো- আবদার একটার বেশি হওয়া যাবে না। বাচ্চারা রাজি হয়ে গেলো। সবাই এক লাইনে দাঁড়িয়ে গেলো। ওরা ঘরে যায়। আর চাওয়া পূরণ করে হাসতে হাসতে বেরিয়ে আসে। যেন খুশিতে পাগলপারা ওরা। কিন্তু মজার বিষয় হলো- জিনিসগুলো অস্থায়ী, দশ মিনিট পরে আবার মাটি হয়ে যাবে। এটা কাকার পালিয়ে যাওয়ার ফন্দি। এভাবে কাকা ওদের আবদার পূরণ করে চলে যায়। কিছুক্ষণ পরে তাদের দেওয়া জিনিসগুলো আবার মাটি হয়ে গেছে। ওরা তো কেঁদে অস্থির। কেঁদে কেঁদে ওরা চোখ-মুখ ফুলিয়ে ফেলেছে। আর বলছে, আজ কাকার মাথা ফাটাবে। এই বলে অনশন করছে কাকার ঘরে। রাত গভীর হলো। কাকা চুপিচুপি ঘরে ঢুকতেই বাচ্চারা ধরে ফেলে। আর ভালোবাসার নরম হাতে কান, চুল, নাক, ধরে মলতে থাকে। সেই রাতে কাকার কোন জাদু কাজে লাগল না। তাই তাকে পকেট থেকে টাকা বের করে সব বাচ্চার আবদার পূরণ করতে হলো। আর কাকা মনে মনে বলছে, চোরের দশ দিন গেরস্তের এক দিন। সব বাচ্চা কাকার গালে চুমু দিয়ে- যে যার ঘরে ফিরে গেলো।