১১ মে, ২০২২ ১৬:২৫

এসটিএস সিমুলেশন কোর্স শুরু মেরিন একাডেমিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

এসটিএস সিমুলেশন কোর্স শুরু মেরিন একাডেমিতে

মেরিন একাডেমিতে এসটিএস সিমুলেশন কোর্সের উদ্বোধন

মেরিনারের জন্য দেশের ইতিহাসের প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিতে শুরু হয়েছে দুই দিন ব্যাপী এসটিএস সিমুলেশন কোর্স। 

দেশের শীর্ষ স্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ এবং বেলজিয়ামের ‘এক্সমার’র উদ্যোগে বুধবার সকালে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির নবনির্মিত সিমুলেশন সেন্টারে এ কোর্স শুরু হয়। 

বেলজিয়াম ও ভারতের অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে এলপিজি, এলএনজি গ্যাস শিপ টু শিপ ট্রান্সফারের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে মেরিনারদের।

উদ্বোধন পর্বে মেরিন একাডেমির কমান্ড্যান্ট ড. সাজিদ হোসেন বলেন, ‘আজ আমাদের জন্য বিশেষ দিন। বাংলাদেশে মেরিটাইম সেক্টরে বিপ্লব ঘটেছে। মেরিন একাডেমিতে নতুন নতুন কোর্স, আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন, অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি বিশ্বমানের মেরিনার তৈরি করছে। এ কোর্সের মাধ্যমে মেরিন একাডেমির মুকুটে আরেকটা পালক যুক্ত হল। এ কোর্সের মেরিনাররা আরো দক্ষ হবে।’  

বসুন্ধরা গ্রুপের জিএম মাহমুদ নাসের বলেন, এসটিএস অপারেশনের জন্য একজন কি-পারসন (মুখ্য ব্যক্তিত্ব) প্রয়োজন হয়। যাকে পারসন ওভার অল অ্যাডভাইজরি কনট্রোল (পিওএসি) বলা হয়। পিওসিরা ইতিপূর্বে বিদেশ থেকে এসে কুতুবদিয়াতে এসটিএস অপারেশন করতেন। বর্তমানে এ কোর্সের মাধ্যমে বাংলাদেশি ক্যাপ্টেনরা পিওএসি হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করবেন। বাংলাদেশি ক্যাপ্টেনরা বিশ্বমানের পিওএসি হয়ে দেশ-বিদেশে এসটিএস অপারেশন করে দেশের সুনাম বৃদ্ধির পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবেন। বিদেশ থেকে এসটিএস অপারেশনের জন্য পিওএসি হায়ার করতে হবে না।’ 

তিনি বলেন ‘বহির্নোঙরে মাদার ভ্যাসেল থেকে ডটার (ছোট) জাহাজে গ্যাস খালাস করার কাজটা খুবই ঝুঁকিপূণ। কারণ গ্যাসের জাহাজটি বোমার মতো। নিরাপদে কাজটি করার জন্য দুই জাহাজের ক্যাপ্টেনের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া থাকতে হয়। না হলে বড় দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। তাই জাহাজের ক্যাপ্টেরদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে এ কোর্সের আয়োজন করা হয়েছে। বেলজিয়ামের অভিজ্ঞ ক্যাপ্টেনের সহায়তায় ১২৯টি এসটিএস সম্পন্ন করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। বাংলাদেশি ক্যাপ্টেনদের দক্ষতা অর্জনের জন্য এ কোর্সের আয়োজন করছি।’

বেলজিয়ামের এক্সমার শিপ ম্যানেজমেন্টের হেড অব ফ্লিট ম্যানেজমেন্ট শচীন মোহন বলেন, ‘এলএনজি ক্যারিয়ার ও গ্যাস খাতে আমাদের প্রচুর অভিজ্ঞতা আছে। রিমোট কনট্রোল সিস্টেমে শিপ টু শিপ গ্যাস খালাস করা হয়। বসুন্ধরা আমাদের কলিগ। সিমুলেশন কোর্সের মাধ্যমে আমরা ভালো লিডারশিপ তৈরি করতে পারব।’

ভারতের প্রশিক্ষক ক্যাপ্টেন পাওয়ান গুপ্তা বলেন, দুবাই, ওমানসহ বিভিন্ন দেশে এসটিএস করি আমরা। আমরা প্রথম শিপ টু শিপ গ্যাস ট্রান্সপারের প্র্যাকটিক্যাল অভিজ্ঞতা বিনিময় করবো। এতে ক্যাপ্টেনদের স্কিল ডেভেলপমেন্ট হবে। দ্বিপাক্ষিক মতবিনিময়ের মধ্যে আমরা চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে জানতে পারব।

ভারতের পেস মেরিন সলিউশনস প্রাইভেট লিমিটেডের চিফ অপারেটিং অফিসার ক্যাপ্টেন সৌরভ কুমার বলেন, ‘কাঠের আগুন জ্বলতে কিংবা ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগে, দেখা যায়। গ্যাসের বিস্ফোরণ ভয়াবহ, কয়েক সেকেন্ডে বড় ক্ষতি হয়ে যায়। এসটিএস সিমুলেশন কোর্স ক্যাপ্টেনদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।’

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের ম্যানেজার (টেকনিক্যাল) মেরিন ইঞ্জিনিয়ার আশিক ইমরান, মেরিন একাডেমির আতিকুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ। কোর্সে অংশ নিচ্ছেন মেরিন একাডেমির বিভিন্ন ব্যাচের ক্যাপ্টেন মুরাদ হোসেন, নূর, মইনুল, আনসারী, মনজুরুল করিম, মাসুদ রানা। 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর