শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

জাহাজশিল্পের সম্ভাবনা

লাখো মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ ঘটাবে

জাহাজশিল্পে বাংলাদেশের সামনে যে অযুত সম্ভাবনা রয়েছে তা কাজে লাগানোর চিন্তাভাবনা করছে সরকার। শত শত বছর আগেও বাংলাদেশে তৈরি হতো সমুদ্রগামী জাহাজ। কালের বিবর্তনে সে সুদিনের অবসান ঘটে। তবে কয়েক বছর ধরে জাহাজশিল্পে বৈপ্লবিক সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ। জার্মানি, লেদারল্যান্ডসের মতো সর্বোচ্চ প্রযুক্তিসমৃদ্ধ দেশে বাংলাদেশের জাহাজ রপ্তানি হয়েছে। জাহাজ নির্মাণ করে প্রতি বছর ৩৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকা আয় সম্ভব বলে মনে করছে সরকার। এজন্য সম্ভাবনাময় এ খাতকে সহায়তা দিতে একটি নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খসড়া নীতিমালায় জাহাজ নির্মাণ শিল্পের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন এবং বিনিয়োগকৃত ঋণের সুদহার সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে। দেশের বঙ্গোপসাগরে একটি দীর্ঘ উপকূলীয় সীমারেখা ছাড়াও প্রায় ২০০ ছোটবড় নদ-নদী রয়েছে, যেগুলোর দৈর্ঘ্য কয়েক হাজার কিলোমিটার। দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে নৌযান তৈরিতে ২০টি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ও ১০০ স্থানীয়মানের শিপইয়ার্ড ও ডকইয়ার্ড রয়েছে। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিপইয়ার্ডগুলো বছরে গড়ে ১০০ জাহাজ নির্মাণে সক্ষম। দেশে বর্তমানে ১০ হাজার মেট্রিক টন ক্ষমতাসম্পন্ন জাহাজ নির্মাণ হচ্ছে। বিংশ শতাব্দীর পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে শিল্প খাতে আমূল পরিবর্তনের সূচনা করে জাপান। সে সময় জাপানের কাছে বাজার হারায় ইউরোপের জাহাজ নির্মাণ খাত। ১৯৭০ সালে জাহাজ নির্মাণকে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি দেয় দক্ষিণ কোরিয়া। চীন এ মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাহাজ নির্মাতা দেশ। ২০০৮-১০ সালে বৈশ্বিক সংকট চলাকালে মাঝারি ও ক্ষুদ্র শ্রেণিভুক্ত জাহাজ নির্মাণের ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়াকে পেছনে ফেলে তারা। জাহাজ নির্মাণে বিশ্বের শীর্ষ দুই জাহাজ নির্মাণকারী দেশ চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো বাংলাদেশেরও ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। নদ-নদীর এই দেশে অসংখ্য জাহাজ নির্মাণ কারখানা সহজে স্থাপন করা সম্ভব। চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার চেয়ে বাংলাদেশে সস্তা শ্রম থাকায় স্বল্প খরচে জাহাজ নির্মাণের সুবিধা রয়েছে। জাহাজ নির্মাণ খাতে সরকার প্রণোদনা দিলে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর