শুক্রবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

উপজেলা পদ্ধতি

জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতায়ন কাম্য

উপজেলা পরিষদের ‘ঠুঁটো জগন্নাথ’ হয়ে থাকার দুর্ভোগের অবসান ঘটতে যাচ্ছে। নীতিগতভাবে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করারই পক্ষে সরকারের নীতিনির্ধারকরা। কিন্তু এ কাজটি গত ১৩ বছরেও হয়ে ওঠেনি আমলাতান্ত্রিক প্রতিবন্ধকতার কারণে। উপজেলা পদ্ধতি প্রবর্তিত হয় সেনাপতি শাসনামলে। উদ্দেশ্য ছিল এ পদ্ধতির মাধ্যম নিজেদের পায়ের তলায় মাটি আনা। স্বভাবতই রাজনৈতিক দলগুলো তাৎক্ষণিক বাস্তবতায় উপজেলা পদ্ধতির বিরোধিতা করে। তবে গ্রামগঞ্জের মানুষের কাছে এ পদ্ধতি গ্রহণযোগ্যতা পায়। নব্বইয়ে গণঅভ্যুত্থানের মুখে সেনাপতি শাসনের অবসান ঘটলেও শেষ পর্যন্ত এ পদ্ধতি টিকে যায় ওই গ্রহণযোগ্যতার কারণে। তবে রাজনৈতিক সরকারের আমলে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের পাশ কাটিয়ে ১৭টি দফতরের প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ন্যস্ত করায় অকার্যকর হয়ে পড়ে স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এ ইউনিটটি। আইনে দেওয়া চেয়ারম্যানের ক্ষমতা পরিপত্র জারির মাধ্যমে ইউএনওকে হস্তান্তর ছিল দুর্ভাগ্য। ফলে জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়েও উপজেলা চেয়ারম্যানরা কাক্সিক্ষত ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেননি। নিজেদের ক্ষমতা ফিরে পেতে আদালতের দ্বারস্থ হয় উপজেলা চেয়ারম্যানদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশন’। রায় নিজেদের পক্ষে পেলেও এখনো তারা ফিরে পাননি কাক্সিক্ষত ক্ষমতা। এ অবস্থায় সংবিধান, আইন ও আদালতের রায় বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে স্থানীয় সরকার বিভাগে চিঠি দেওয়া হয়। যার ফলে দীর্ঘ তিন বছর পর উপজেলা চেয়ারম্যানদের দাবি ও আদালতের রায় পর্যালোচনার তাগিদ অনুভব করছে সরকার। গতকাল এ নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকও হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা পরিষদ সক্রিয় করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। উপজেলায় প্রতিষ্ঠিত হবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কর্তৃত্ব। তবে এ কর্তৃত্ব যাতে আইনের আওতায় প্রতিপালিত হয় সেদিকেও সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। নির্বাচিত প্রতিনিধি কিংবা আমলা কেউ যে আইনের ঊর্ধ্বে নন, তা নিশ্চিত হওয়া জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর