রবিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

নকল-ভেজাল

সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে

নকল-ভেজালের ভিড়ে দেশে আসল পণ্য পাওয়াই যেন দায় হয়ে পড়েছে। এমন কোনো খাদ্যপণ্য নেই যেখানে নকল কিংবা ভেজালের অপছায়া নেই। সারা দেশে অপ্রতিরোধ্য গতিতে চলছে ভেজালের জমজমাট ব্যবসা। সেমাই, সরিষার তেল, গুঁড়া মসলা, সাবান, শ্যাম্পু, কসমেটিকস, গুঁড়া দুধ, শিশুখাদ্য থেকে শুরু করে জীবন রক্ষাকারী ওষুধেও ভেজাল থেকে নিস্তার নেই। নকলের ভিড়ে আসল পণ্য চেনাই দায় হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ডের মোড়ক হুবহু নকল করে ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে ভেজাল সিন্ডিকেট। অভিযান, গ্রেফতার, কিংবা শাস্তিতেও থামছে না ভেজাল পণ্যের দৌরাত্ম্য। ঘি তৈরির প্রধান উপকরণ দুধ হলেও সয়াবিন ও ডালডা দিয়ে তৈরি হয় নকল ঘি। বিএসটিআইর লোগো লাগিয়ে নামিদামি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোড়কে বাজারজাত করা হয় সেই শতভাগ ভেজাল ঘি। রাজধানীজুড়ে নকল কারখানায় পানি বোতলজাত করে ‘মিনারেল ওয়াটার’ নামে বিক্রি করা হচ্ছে। অপরিপক্ব ফল পাকাতে, মাছ সংরক্ষণে কেমিক্যাল ব্যবহার হচ্ছে অবাধে। কৃষিপণ্যেও মেশানো হচ্ছে বিষাক্ত রাসায়নিক। নকল কারখানার মালিক ও ভেজাল পণ্য বাজারজাতকারীদের বিরুদ্ধে একাধিক সরকারি সংস্থা অভিযান চালালেও রহস্যজনক কারণে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো নজির নেই। জরিমানা ও কারখানা সাময়িক বন্ধ হলেও একই ধরনের অপকর্মে তারা আবারও লিপ্ত হয়। গ্রাম পর্যায়ের মুড়ি প্রস্তুতকারক থেকে শুরু করে কিছু ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্যেও ভেজাল পাওয়া যাওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। মাছ, শাক-সবজিতে ফরমালিন, ভোজ্য তেলে অতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাট, মসলায় রং, মুড়িতে ইউরিয়া, গরুর দুধে পাউডার ও পানির মিশ্রণ ওপেন সিক্রেট। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় ভেজাল আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।  নকল-ভেজাল বন্ধে নাগরিক সচেতনতা গড়ে তুলতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠ্যসূচির মাধ্যমে এ ঘৃণ্য কাজের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।  নকল-ভেজালের বিরুদ্ধে মসজিদ মন্দিরসহ উপাসনালয়গুলোতে ব্যাপক প্রচারণা চালানো দরকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর