আল্লাহ ইমানদারদের জান্নাতে ঠাঁই দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এজন্য আল্লাহ-প্রদত্ত জীবনবিধান ইসলামে অটল থাকতে হবে। সব নবী ও রসুল আল্লাহ-প্রদত্ত দীনের কথা প্রচার করেছেন। হজরত আদম (আ.) ছিলেন প্রথম নবী। মুহাম্মদ (সা.) শেষ নবী। তাঁর প্রচারিত জীবন-বিধানকেই ইসলাম বলা হয়। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘ইসলাম পাঁচটি ভিত্তির ওপর স্থাপিত। ১. এই বলে সাক্ষ্য দেওয়া- আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রসুল ২. সালাত কায়েম করা ৩. জাকাত দেওয়া ৪. হজ করা এবং ৫. রমজান মাসের রোজা রাখা।’ বুখারি, মুসলিম, মিশকাত। ইসলাম যে পাঁচটি ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত তার প্রতি যারা অঙ্গীকারবদ্ধ তারাই ইমানদার বা মুসলমান। ইমানদারদের অবশ্যই আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা, রসুল (সা.) ও কেয়ামত দিবসের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘এক দিন রসুল (সা.) জনসম্মুখে বসা ছিলেন এমন সময় তাঁর কাছে এক ব্যক্তি এসে জিজ্ঞেস করল, ইমান কী? তিনি বললেন, ইমান হলো আপনি বিশ্বাস রাখবেন আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, (কেয়ামতের দিন) তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের প্রতি এবং তাঁর রসুলদের প্রতি।’ বুখারি, মুসলিম। ইমানদার হতে হলে আল্লাহর একাত্ম যেমন স্বীকার করতে হবে তেমন সব ক্ষেত্রে একজন দায়িত্বশীল এবং পবিত্র মানসিকতার মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘ইমানের ৭০টির বেশি শাখা-প্রশাখা রয়েছে। তার মধ্যে সর্বাপেক্ষা উত্তম হচ্ছে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা আর সর্বনিম্ন হচ্ছে পথে বা রাস্তার মধ্য থেকে কষ্টদায়ক বস্তু দূর করে দেওয়া এবং লজ্জা হলো ইমানের একটি শাখা।’ মুসলিম, বুখারি। উপরোক্ত হাদিসে স্পষ্ট করা হয়েছে, সর্বশক্তিমান স্রষ্টা আল্লাহকে মাবুদ হিসেবে নিঃসংকোচে স্বীকার করার পাশাপাশি ইমানদারদের ভালো মানুষ হিসেবেও নিজেদের প্রমাণ করতে হবে। চলার পথে মানুষের জন্য কষ্টদায়ক প্রতিবন্ধকতা অপসারণও একজন ইমানদারের কর্তব্য বলে এ হাদিসে নির্দেশ করা হয়েছে। তাগিদ দেওয়া হয়েছে ইমানদারদের লজ্জাশীল হওয়ার। যারা লজ্জাশীল তারা খারাপ অভ্যাস থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে পারে।
লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক