বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতায় যে প্রবণতা ক্রমাগত উদ্বেগ বাড়াচ্ছে তা হলো, দাবি আদায়ের নামে জনজীবনকে অবরুদ্ধ করে ফেলা। প্রতিনিয়ত রাস্তায় আন্দোলনের নামে সাধারণ মানুষের চলাচল ব্যাহত হওয়া, চিকিৎসাসেবা ও শিক্ষাকর্ম ব্যাঘাত ঘটানো কিংবা নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার ঘটনায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে গণতান্ত্রিক অধিকারের অপব্যবহার আজ একটি সাংগঠনিক অপসংস্কৃতিতে রূপ নিয়েছে। জনদুর্ভোগ সৃষ্টির এ অপসংস্কৃতিতে একদিকে যেমন মানবিকতা, সহমর্মিতা ও দায়িত্বশীলতার অভাব প্রকট হয়ে উঠেছে, অন্যদিকে তেমনি আইনের দুর্বল প্রয়োগ এবং নানা ইস্যুতে রাষ্ট্র ও প্রশাসনের নীতিনির্ধারকদের ধীর প্রতিক্রিয়া এ সংকটকে দীর্ঘস্থায়ী করছে। এখন সময় এসেছে দাবি আদায়ের জন্য জনগণকে জিম্মি করার এ সমস্যাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে না দেখে একটি সমন্বিত, অন্তর্দৃষ্টিমূলক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করার। আর এ উদ্দেশ্যে একটি ইতিবাচক ও গ্রহণযোগ্য পন্থা নির্ধারণে সবাইকে একত্রে কাজ করতে হবে। যেখানে জনশিক্ষা, রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং প্রশাসনিক কাঠামো পারস্পরিকভাবে সংযুক্ত রেখে দাবির যৌক্তিক ভিত্তি এবং বাস্তবতার আলোকে তার গ্রহণযোগ্য সমাধান বা বিকল্প বের করার মাধ্যমে একটি টেকসই সমাধানের পথ খুঁজে পেতে সহায়তা করবে। তাই এ সংকট থেকে উত্তরণের জন্য শুধু নৈতিক আহ্বান নয়, বরং আইনের কঠোর প্রয়োগ ও ন্যায়বিচারের সুস্পষ্ট প্রতিফলন প্রয়োজন। জনগণের ন্যায্য দাবিকে সম্মান জানিয়ে, নাগরিকদের স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা অধিকার নিশ্চিত করতে জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী অপসংস্কৃতিকে নিরুৎসাহিত করে নীতিমালা ও আইন প্রণয়ন এখন সময়ের দাবি।
রাষ্ট্র যদি সত্যিই ‘জনগণের জন্য রাষ্ট্র’ হতে চায়, তাহলে তার দায়িত্ব হবে জনজীবনের স্বাভাবিকতা ও সবার অধিকার রক্ষা করা এবং সেই সঙ্গে শান্তিপূর্ণ উপায়ে দাবি আদায়ের গঠনমূলক পথ নির্মাণ করা। এ মুহূর্তে প্রয়োজন এমন একটি রাষ্ট্রীয় অবস্থান, যা একদিকে মানবিক এবং অন্যদিকে কার্যকর; যেখানে সরকার অপসংস্কৃতিকে প্রশ্রয় না দিয়ে সুশাসনের নীতিতে সাধারণ নাগরিকের স্বার্থ রক্ষা করবে। মনে রাখতে হবে যে একটি জাতির রাজনৈতিক সংস্কৃতি শুধু নির্বাচন বা সংসদীয় প্রক্রিয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি প্রকাশ পায় রাজনৈতিক আচরণ, মতপ্রকাশের পদ্ধতি এবং বিরোধ নিরসনের নৈতিক সমাধানের সক্ষমতায়। বর্তমান বাস্তবতায় আমরা লক্ষ করছি, সংগঠিত ছাত্রসমাজ, কিছু গোষ্ঠী ও পেশাজীবী শ্রেণি হঠাৎ করেই সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করে দাবি আদায়ের যে কৌশল বেছে নিচ্ছে, তা ক্রমেই জনজীবনকে জিম্মি করে তোলার একটি কৌশলগত অপসংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। এ ‘জনদুর্ভোগকে কৌশল হিসেবে ব্যবহার’ করার প্রবণতা শুধু রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের পরিচায়ক নয়, বরং এটি জাতি হিসেবে আমাদের একটি সাংস্কৃতিক ও নৈতিক ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি।
রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে যখন সহনশীলতা ও যুক্তিনির্ভর সংলাপের পরিবর্তে বলপ্রয়োগ, প্রতিহিংসা ও উত্তেজনাকেই কার্যকরী কৌশল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়, তখন আন্দোলনের ন্যায্য দাবিগুলোও তাদের নৈতিক ভিত্তি হারিয়ে ফেলে। জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে যে কোনো দাবি আদায়ের প্রচেষ্টা শেষ পর্যন্ত জনসমর্থন হারায় এবং দীর্ঘ মেয়াদে রাজনৈতিক অবিশ্বাস ও সামাজিক বিভাজনের জন্ম দেয়। এতে যেমন সাধারণ নাগরিকের জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়, তেমনি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়ে এবং দেশের সামগ্রিক উৎপাদনশীলতা ব্যাহত হয়। গবেষণা ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পর্যালোচনা অনুযায়ী অনুমেয়, এক দিনের হরতাল বা সড়ক অবরোধে ঢাকাকেন্দ্রিক অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ গড়ে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার কাছাকাছি, যা জাতীয় অর্থনীতিতে দীর্ঘস্থায়ী নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এমন পরিস্থিতিতে দাবি আদায়ের আন্দোলনের মূল লক্ষ্য যদি যৌক্তিক, মানবিক ও নৈতিক অধিকার আদায়, তবে তার উপায় ও রূপ অবশ্যই জনস্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। নচেৎ তা আন্দোলন না হয়ে জনজীবনবিরোধী একধরনের অনৈতিক বলপ্রয়োগ বা ‘স্ট্র্যাটেজিক হোস্টেজ’ হয়ে দাঁড়ায়, যা কোনো সভ্য সমাজে কাম্য হতে পারে না।
দীর্ঘকাল ধরে চর্চিত অপসংস্কৃতির এ সংকট থেকে উত্তরণে কেবল প্রথাগত প্রশাসনিক কাঠামোর ওপর নির্ভর করলেই চলবে না; পাশাপাশি প্রয়োজন একটি নৈতিক কাঠামো তৈরি করা, যা সমাজের প্রতিটি স্তরে মানবিকতা, যুক্তিবোধ ও সহমর্মিতার ভিত্তিতে কাজ করবে। এ নৈতিক কাঠামোর ভিত হতে পারে জনশিক্ষা, যা রাষ্ট্রশক্তির বাইরে একটি সামাজিক আত্মশক্তি হিসেবে কার্যকর থাকে। কারণ কোনো আইন বা প্রশাসনিক ব্যবস্থা তখনই কার্যকর হয়, যখন নাগরিকদের মধ্যে নৈতিক সংস্কৃতি ও সচেতনতা থাকে। এ প্রসঙ্গে ফরাসি দার্শনিক রুশোর (১৭১২-১৭৭৮) ‘সামাজিক চুক্তি’ তত্ত্ব উল্লেখ্য, যেখানে নাগরিকদের মধ্যে দায়িত্ববোধ ও ন্যায়ের অনুভবকে রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলার পূর্বশর্ত হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। আমাদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থাকেও সংস্কারের আওতায় এমনভাবে রূপান্তর করতে হবে, যেখানে শুধু সনদ অর্জন নয়, বরং শিক্ষার উদ্দেশ্য হবে আগামী প্রজন্মের মাঝে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি রাজনৈতিক ও সামাজিক দায়িত্ববোধের বিকাশ সাধন করা।
শিক্ষাকে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রধান কলকাঠি হিসেবে ব্যবহার করে নাগরিকদের মধ্যে গণতান্ত্রিক আচরণ, পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সংলাপ চর্চা এবং আইন মান্য করার মানসিকতা গড়ে তুলতে বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা পুনর্গঠনের জন্য সচেতনভাবে নতুন করে নকশা করতে হবে। বিশেষ করে জীবনব্যাপী শিক্ষা ও সক্ষমতা বিকাশকেন্দ্রিক জনশিক্ষা হবে এ অন্তর্ভুক্তির সংস্কৃতির চালিকাশক্তি, যা রাষ্ট্রীয় আদর্শ ‘বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্য’ প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অবদান রাখতে সক্ষম হবে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি ছাড়িয়ে জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া হিসেবে শিক্ষার নানা ধারা ও উপধারাকে পরিবার, কর্মক্ষেত্র এবং সামাজিক পরিসরেও বিস্তৃত করতে হবে। জনশিক্ষার লক্ষ্য হবে মানুষের মধ্যে সেই অন্তর্গত সচেতনতা গড়ে তোলা, যার ভিত্তিতে দেশের প্রতিটি নাগরিক বুঝতে পারবে তাদের নৈতিক ও সামাজিক দায়, বিশেষ করে ‘আমার অধিকারের চর্চা যেন অন্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ না করে’। ব্যক্তির এ চেতনা যখন সামাজিক প্রবাহে পরিণত হবে, তখনই জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী অপসংস্কৃতির জায়গা দখল করবে যুক্তি, মানবতা ও সহনশীলতার সংস্কৃতি।
এ প্রেক্ষাপটে ‘সহযোগিতামূলক সুশাসন’ (কোলাবরেটিভ গভর্ন্যান্স) ধারণাটি বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক। আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় সরকার, নাগরিক সমাজ এবং সাধারণ জনগণ- এ তিনটি স্তরকে পরস্পর-নির্ভর সম্পর্কের মাধ্যমে কার্যকর নীতিনির্ধারণ ও সমস্যা সমাধানে একত্রে কাজ করতে হয়। যদি এ স্তরগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস, স্বচ্ছতা এবং সহযোগিতার সংস্কৃতি গড়ে না ওঠে, তাহলে যে কোনো দাবিদাওয়া ধীরে ধীরে আস্থাহীনতা, সংঘাত, দুর্ব্যবস্থা ও গণ-অসন্তোষের দিকে গড়ায়। ফরাসি সমাজতাত্ত্বিক এমিল দুর্খেইম (১৮৫৮-১৯১৭) একে ব্যাখ্যা করেছিলেন ‘সামাজিক সংহতির অভাব’ হিসেবে, যেখানে রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে আস্থার ঘাটতি সংকটকে বহু গুণ বাড়িয়ে তোলে। এ প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রের করণীয় হলো সুনির্দিষ্ট ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নাগরিকদের দাবিগুলো গ্রহণ, আলোচনা-পর্যালোচনা ও সমাধানের জন্য একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গঠন, যার একটি রূপ হতে পারে ‘জাতীয় দাবি কমিশন’ গঠনের মাধ্যমে কার্যকরি দাবি-ব্যবস্থাপনা প্রচলন করা। এ কমিশন হবে একটি বিশ্বাসযোগ্য, দ্রুতগতির এবং জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, যা নাগরিকদের অভিযোগ যাচাই, সংলাপ আয়োজন এবং যৌক্তিক দাবিগুলোর বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করবে।
অন্যদিকে রাষ্ট্র ও সমাজের বৃহত্তর স্বার্থে নাগরিকদেরও বিশেষ দায়দায়িত্ব রয়েছে, সেটা তাদের মাথায় রাখতে হবে। তাদের আন্দোলনের কৌশল যেন জনজীবনকে জিম্মি না করে, রাষ্ট্রীয় কল্যাণ ও অগ্রগতির প্রতিবন্ধক না হয়, বরং তাদের প্রচেষ্টা গণতান্ত্রিক ও মানবিক পথে দাবি আদায়ের ইতিবাচক সংস্কৃতিকে জোরদার করে। আন্দোলনের কাঠামো ও কৌশল নির্ধারণে ন্যূনতম শৃঙ্খলা, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা এবং সাধারণ মানুষের অধিকারকে সম্মান জানানো- এগুলো হতে হবে তাদের নৈতিক অবস্থান। এ দ্বিমুখী দায়বদ্ধতা না থাকলে জনদুর্ভোগমুক্ত দাবিদাওয়ার প্রত্যাশা ‘সোনার পাথরবাটি’ মতোই নিছক কল্পনা হয়েই থেকে যাবে। তাই রাষ্ট্র ও জনগণকে সম্মিলিতভাবে একটি নতুন সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে, যেখানে অধিকার ও দায়িত্ব, আন্দোলন ও সংলাপ সবই মানবিক যুক্তিবোধ, রাষ্ট্রীয় নীতিমালা ও নৈতিকতার ছত্রছায়ায় পরিচালিত হবে।
মার্কিন দার্শনিক জন রলসের (১৯২১-২০০২) ‘ন্যায়বিচারের নীতি’ স্মরণযোগ্য। তাঁর মতে, কোনো সামাজিক কাঠামো তখনই ন্যায়সংগত হয়, যখন তা ন্যূনতম সুযোগপ্রাপ্তকেও তার কথা বলার সমান অধিকার দেয়। ডিজিটাল মাধ্যমে সেই সুযোগটি আজ নাগরিকদের হাতে রয়েছে, তবে সেটি যেন ন্যায়ের ভিত্তিতে, তথ্য-উপাত্তকেন্দ্রিক এবং গণমুখী হয়। আর তা নিশ্চিত করতে জনশিক্ষার পাশাপাশি রাষ্ট্রকেও দায়িত্ব নিতে হবে। সুতরাং রাষ্ট্র যদি গণমুখী ও ন্যায়ভিত্তিক দাবি উপস্থাপন ও সেটা সুরাহা প্রক্রিয়ার একটি কাঠামো নির্মাণ করে, তবে নাগরিকদের উচিত হবে সেই কাঠামো অনুসরণ করে দাবি উত্থাপন করা, প্রয়োজনে আইনি পথেও সরকারের সঙ্গে যুক্তি ও তথ্য-উপাত্তভিত্তিক লড়াইয়ে অবতীর্ণ হওয়া। একুশ শতকের একটি সচেতন সমাজে জনদুর্ভোগ নয়, বরং যৌক্তিক, নৈতিক ও আইনি পথেই দাবির যথার্থতা প্রতিষ্ঠা পায়।
রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সরকারে উচিত এখন একটি দৃঢ় জাতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া, যেখানে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে দাবি আদায়ের পথকে আইনিভাবে নিষিদ্ধ করা। দাবি আদায়ে আন্দোলনকারীদের আলোচনার টেবিলে বসে যুক্তিনির্ভর, মানবিক ও অংশগ্রহণমূলক সমাধান খোঁজার রীতি মেনে চলতে বাধ্য করা, যাতে সেটা ভবিষ্যতে আমাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে। গণতান্ত্রিক সমাজে দাবি আদায়ের আন্দোলন বা প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে গণমত তৈরি করা কোনো বিচ্ছিন্ন, বিক্ষিপ্ত বা প্রতিক্রিয়াশীল ঘটনা নয়, এটি একটি কাঠামোবদ্ধ, স্বচ্ছ ও দায়বদ্ধ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করতে রাষ্ট্র, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ এবং সাধারণ নাগরিক সব পক্ষের সম্মিলিত অংশগ্রহণ অপরিহার্য। ফরাসি দার্শনিক হাবারমাসের (১৯২৯-) ‘ডিসকোর্স ইথিক্স’ তত্ত্ব অনুযায়ী, সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য সব পক্ষকে আলোচনায় অংশ নিতে হবে যেখানে যুক্তি ও সম্মানভিত্তিক সমাধান বের হবে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেও এ তত্ত্ব প্রয়োগযোগ্য, কারণ রাজনৈতিক উত্তেজনা বা দাবি আদায়ের একমুখী চাপ কখনোই টেকসই সমাধান দিতে পারে না।
তাই সময় এসেছে জনশিক্ষাকে রাষ্ট্রীয় অগ্রাধিকারের তালিকায় তুলে এনে নাগরিকদের মধ্যে ন্যায্যতা ও দায়িত্বের চর্চা প্রসারিত করার; প্রশাসনিক সংস্কারের মাধ্যমে জনবান্ধব নীতিনির্ধারণ নিশ্চিত করার; আইন ও শাস্তির ক্ষেত্রে সমতা ও কার্যকারিতা প্রতিষ্ঠার; এবং সর্বোপরি প্রযুক্তির ব্যবহার যেন তথ্যনিষ্ঠ, নৈতিক ও কল্যাণমুখী হয়, সে বিষয়ে সচেতনতা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার। শুধু আইন নয়, তার ন্যায্য প্রয়োগ; শুধু শিক্ষা নয়, তার মানবিক বিস্তার- এই দুয়ের সমন্বয়েই গড়ে উঠতে পারে এমন একটি সমাজ, যেখানে জনগণের অধিকার চর্চা আর জনদুর্ভোগ সৃষ্টির মধ্যে একটি স্পষ্ট নৈতিক রেখা টানা থাকবে।
লেখক : ভিজিটিং ফ্যাকাল্টি, ইউনিভার্সিটি অব রোহ্যাম্পটন, যুক্তরাজ্য
email : [email protected]