বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

বদলেছে ঈদগাহর রং বদলায়নি বৈষম্যের পাহাড়

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম

বদলেছে ঈদগাহর রং বদলায়নি বৈষম্যের পাহাড়

বয়স আমার যখন চার বছর, তখন থেকেই আব্বার হাত ধরে আমার ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়া শুরু। একসময় পল্টন ময়দানে ঢাকার প্রধান ঈদের জামাত হতো। দু-এক বার নবনির্মিত স্টেডিয়ামেও তা হয়েছে। পরে পল্টনে বা স্টেডিয়ামে ঈদের নামাজ বন্ধ হয়ে যায়। তার পর থেকে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হতো। তখন থেকে সব সময় আমি সেখানেই ঈদের নামাজ আদায় করে থাকি। এখন যদিও প্রধান ঈদ জামাত হাইকোর্ট-সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহতে অনুষ্ঠিত হয়, তথাপি বায়তুল মোকাররমের প্রথম জামাতে শরিক থাকার ট্র্যাডিশন আমি আজ অবধি ত্যাগ করিনি। বৃষ্টি-বাদলের কারণে দু-তিন বার ছাতা মাথায় দিয়ে পাড়ার মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়েছে। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে, জেলে বন্দী থাকার সময় এবং সত্তরের ঘূর্ণিঝড়ের পর ত্রাণকাজে নোয়াখালীর চরবাটায় অবস্থানকালে ঢাকার বায়তুল মোকাররমে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারিনি। ঈদগাহে নামাজের প্রতি ছোটবেলা থেকে বিশেষ আকর্ষণ অনুভব করে এসেছি। সেখানে আমির-ফকির, ছোট-বড় সব মানুষ পাশাপাশি দাঁড়িয়ে নামাজ আদায়ের মাধ্যমে সমতা ও সাম্যের যে নিদর্শন স্থাপন করে, সে এক অভিনব দৃশ্য। ঈদগাহের শুভ্র-শ্যামল সাদায় আচ্ছাদিত মানুষের সমুদ্রের মাঝে অবস্থান নিয়ে সে রূপ স্বপ্ন শিশু বয়সেই আমার মনে স্থান করে নিয়েছিল। শৈশবের সেই উপলব্ধি ও চেতনা আমার 'সাম্যবাদ'-এর আদর্শ গ্রহণের পেছনে একটি অন্যতম উপাদন হিসেবে যে কাজ করেছে তা আমি বেশ অনুভব করি। একসময় এ রকমটাই চল ছিল যে পুরুষের পাঞ্জাবি মানেই সেটা হবে সাদা কাপড়ের। তা সে সস্তা খাদির কাপড় বা মোটা লংক্লথ দিয়ে তৈরি হোক না কেন। আজকাল সাদা পাঞ্জাবির চল কমে গেছে। সামনে কোনো একসময় সাদা পাঞ্জাবিই যে ফ্যাশন হিসেবে ফিরে আসবে না, সে কথা কেউ বলতে পারে না।

 

সর্বশেষ খবর