করণ জোহরের ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’ ছবির বিরুদ্ধে ভারতের বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও সমিতি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এ কারণে ছবিটি মুক্তি পেলে কী পরিস্থিতি তৈরি হবে তা নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সংবাদমাধ্যমগুলোতে নানা জল্পনা চলছে। অনেকে অবশ্য ছবিটির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। এরই মধ্যে সেন্সর বোর্ড ‘ইউএ’ সনদসহ ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’কে ছাড়পত্র দিয়েছে। ফলে আগামী ২৮ অক্টোবর নির্ধারিত দিনেই ছবিটি মুক্তি পেতে যাচ্ছে। আশার কথা হলো, মুম্বাইয়ে প্রেক্ষাগৃহগুলোতে দর্শক এটি দেখতে পারবে পুলিশি পাহারায়।
মুম্বাই পুলিশের উপ-কমিশনার অশোক দুধে বলেছেন, ‘আমরা সিনেমা হলগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা রাখব। পরিস্থিতি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেব। মুম্বাইয়ের সব প্রেক্ষাগৃহ পুরোপুরি পুলিশি পাহারায় থাকবে। ছবিটি মুক্তির দিন থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করবে মুম্বাই পুলিশ।’
রাজনৈতিক দল মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস) ও শিবসেনা জানিয়েছে, পাকিস্তানি অভিনেতা ফাওয়াদ খান থাকায় ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’ মুক্তিতে তারা বাধা হয়ে দাঁড়াবে। গত ১৭ অক্টোবর এমএনএস নেতা আমে খোপকার হুমকি দিয়েছেন, কোনো মাল্টিপ্লেক্সে এটি চললে ভাঙচুর করা হবে।তার ওপর ১৪ অক্টোবর সিনেমা ওনার্স এক্সিবিটরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার (সিওইএআই) পক্ষে মহারাষ্ট্র, গোয়া, কর্ণাটক ও গুজরাটের কয়েকটি একক প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি না চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ঘুম হারাম হয়েছে করণের। তবে মুম্বাই পুলিশের সিদ্ধান্তে অবশেষে তিনি কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন বলে মনে হয়।
জানা গেছে, মুম্বাই পুলিশের যুগ্ম কমিশনারের শরণাপন্ন হয়েছিলেন ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন প্রডিউসার্স গিল্ড অব ইন্ডিয়ার সভাপতি মুকেশ ভাট ও ছবিটির পরিবেশনা সংস্থা ফংস্টার স্টুডিওর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিজয় সিং।
এদিকে উরি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে পাকিস্তানি অভিনেতা থাকায় নিজের ছবি নিয়ে চলমান বিতর্কে প্রথমবার মুখ খুলেছেন করণ জোহর। এক ভিডিওবার্তায় তিনি নিশ্চিত করেছেন, আগামীতে আর কখনো পাকিস্তানি কোনো শিল্পীকে নিয়ে কাজ করবেন না।
করণ বলেন, ‘ভীষণ বেদনা ও যন্ত্রণা থেকেই চুপ ছিলাম এত দিন। মনে হচ্ছে কিছু লোক মনে করে আমি বুঝি সত্যিই ভারতবিরোধী।
তাই দৃঢ়ভাবে বলছি, আমার কাছে দেশ আগে। দেশ ছাড়া অন্য কোনো কিছুই মুখ্য নয়।
আমি মনে করি, দেশপ্রেম তুলে ধরার সেরা মাধ্যম ভালোবাসা ছড়িয়ে দেওয়া। আমার কাজ ও ছবির মাধ্যমে এটাই চেষ্টা করি।’ যোগ করে করণ আরও বলেন, ‘গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরে যখন এ ছবির চিত্রায়ণ করি, তখন পরিস্থিতি ছিল পুরোপুরি ভিন্ন।’
এদিকে ঐশ্বরিয়া ও রণবীরের অন্তরঙ্গ দৃশ্যে কাঁচি চালানোর পাশাপাশি ছবিটিতে রণবীর ও আনুশকা শর্মার মধ্যকার বেশ কয়েকটি চুম্বন দৃশ্যের দৈর্ঘ্যও কমিয়ে দিয়েছে সেন্সর বোর্ড।