শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার - নুসরাত ইমরোজ তিশা

জীবনের অনেক কিছুই চেঞ্জ হয়ে গেছে

জীবনের অনেক কিছুই চেঞ্জ হয়ে গেছে

নন্দিত মডেল-অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। ক্যারিয়ারে পার করেছেন দুই যুগেরও বেশি সময়। গতকাল ১০টি প্রেক্ষাগৃহে মৃক্তি পেয়েছে তাঁর ‘বীরকন্যা প্রীতিলতা’, আরও বেশ কিছু সিনেমা রয়েছে মুক্তির অপেক্ষায়। মুক্তি পাওয়া সিনেমা ও সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

বীরকন্যা প্রীতিলতা চরিত্রে দর্শকের সামনে এসেছেন। আপনার ক্যারিয়ারের অন্যান্য সিনেমা থেকে এটিকে কতখানি আলাদা করে ভাবছেন?

বড় স্ক্রিনে নিজেকে দেখতে পাওয়া তো সবসময়ই খুব ভালো লাগে। এর আগের সিনেমাও যখন আমি বড় স্ক্রিনে দেখেছি তখনো একই অনুভূতি হয়েছে। তবে এই সিনেমাটি আমার কাছে একটু স্পেশাল। কারণ, লম্বা একটা গ্যাপের পর আমার সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে। এর মধ্যে আমার জীবনের অনেক কিছু চেঞ্জই হয়ে গেছে। আমি মা হয়েছি। সো, মা হওয়ার পর এটি আমার অভিনীত প্রথম সিনেমা।

 

এবার তাহলে ছোট্ট ইলহামকে নিয়ে সিনেমাটি দেখবেন...

ইলহামকে নিয়ে সিনেমাটি দেখার ইচ্ছা ছিল। তবে সমস্যা হচ্ছে ইলহাম এত্ত ছোট্ট যে, প্রচুর মানুষ, সিনেমার হলের সাউন্ড নেওয়ার মতো বয়স ওর এখনো হয়নি। তবে সে খুবই ভালো আছে। এই তো এক বছরে পড়ল কিছুদিন আগে। বড় হয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন ও নিজে নতুন নতুন কিছু শিখছে আর আমাকে সারপ্রাইজ করে দিচ্ছে।

 

প্রীতিলতাকে ধারণ করা তিশার কাছে চ্যালেঞ্জের ছিল কি?

বীরকন্যা প্রীতিলতাকে ধারণ করা আমার কাছে খুবই চ্যালেঞ্জের ছিল। যেহেতু কোনো ভিডিও ডকুমেন্ট আমাদের কাছে ছিল না, তাই বই পড়ে চরিত্রগুলো সবার ধারণ করতে হয়েছে। অনেক কিছু মাথায় রেখে কাজ করতে হয়েছে। এটা তো একটা চ্যালেঞ্জ, চেষ্টাটুকু করেছি। সেলিনা হোসেনের বই পড়ে, দাদার (নির্মাতা প্রদীপ ঘোষ) গবেষণার নথিগুলো পড়ে নিজের মধ্যে চরিত্রটি ধারণ করেছি। আমি কতটুকু পেরেছি সেটি দর্শক ভালো বলতে পারবে। তবে আমরা আমাদের পক্ষ থেকে শতভাগ চেষ্টা করেছি। আর এমন একটি চরিত্রে অভিনয় করতে পারা যে কোনো অভিনেত্রীর জন্য সম্মানের। এমন চরিত্রে অভিনয় যে কোনো অভিনেত্রীর জন্যই স্বপ্নের ব্যাপার। সেই সঙ্গে বড় দায়িত্বও। আমাকে যখন এই চরিত্রের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয় আমি দুই বার চিন্তা করিনি। বলেছিলাম, অবশ্যই আমি করব। ইতিহাসনির্ভর যে কোনো কাজ করতে আমার ভালো লাগে। আর সেটি যদি নাম ভূমিকায় হয় তাহলে ভালো লাগা তো আরও বেড়ে যায়।

 

আপনার অভিনীত আরেকটি সিনেমা ‘শনিবার বিকেল’। এটি কেন ছাড়পত্র পাচ্ছে না?

আপিল বোর্ড কিন্তু আমাদের সিনেমাটি ছিঁড়ে দিয়েছে। তার ওপর নির্ভর করে কিন্তু আমরা প্রস্তুতিও নিয়েছি। ১১-১২ দিন হয়ে গেলেও এখনো সেন্সর বোর্ড আমাদের কোনো সার্টিফিকেট দেয়নি। কেন দিচ্ছে না, সেটা তো আমারও প্রশ্ন! তবে যখনই সেন্সর সার্টিফিকেট পাব, এরপরই সিনেমাটি মুক্তি পাবে, এমন প্রস্তুতিই আমরা নিয়ে নিয়েছি।

 

লম্বা একটা গ্যাপের পর আমার সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে। এর মধ্যে আমার জীবনের অনেক কিছুই চেঞ্জ হয়ে গেছে। আমি মা হয়েছি। সো, মা হওয়ার পর এটি আমার অভিনীত প্রথম সিনেমা।

 

সেন্সর জটিলতায় দীর্ঘদিন ধরে একটি সিনেমা আটকে রাখা হচ্ছে। এটির কারণে দেশের ভাবমূর্তি কি নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছেন?

আমি সেন্সর বোর্ডকে অনুরোধ করব ‘শনিবার বিকেল’-এর সেন্সর সার্টিফিকেট দেওয়ার জন্য। কারণ, দেশের বাইরে আমাদের ভাবমূর্তিটা খুব একটা ভালো জায়গায় যাচ্ছে না। খারাপই লাগছে। সবাই এই বিষয়টি নিয়ে সমালোচনাও করছেন। কারণ, আমাদের দেশের কনটেন্ট নিয়ে বিদেশে সিনেমা তৈরি হয়ে সেটি রিলিজ হয়ে গেছে আর সেই আমাদেরই কনটেন্ট নিয়ে আমরা কিছুই করতে পারছি না। আমাদের আটকে রাখা হয়েছে। এটি কিন্তু দৃষ্টিকটু।

 

শোবিজের কোন মাধ্যমে তিশা বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন?

সব মাধ্যমেই। কারণ, আমার দর্শকরা আমাকে যেভাবে নাটকে সাদরে গ্রহণ করেছেন তেমনি করেছেন কমার্শিয়াল আর সিনেমায়। দর্শকরা আসলে আমাকে অভিনেত্রী হিসেবে পছন্দ করেন। আমার অভিনীত যে ধরনের কাজই হোক না কেন দর্শকরা পছন্দ করবেন বলে আশা রাখি।

 

রক্তজবা ও মুজিব কবে আসছে?

এই সিনেমাটি দুটির কাজ শেষ। নিয়ামুল মুক্তার ‘রক্তজবা’য় চমৎকার একটি চরিত্র করেছি। আগেও তাঁর কাজ করেছি। আমার খুবই পছন্দের নির্মাতা। রক্তজবা কবে আসছে সেটি নিয়ামুলই ভালো বলতে পারবেন। আর শ্যাম বেনেগালের ‘মুজিব’ সিনেমাটি আমার স্বপ্নের কাজ। এটির রিলিজও হয়তো সামনের যে কোনো সময় হবে।

 

শুভেচ্ছাদূত হয়েছেন...

নতুন একটি বহুজাতিক কোম্পানির একটি ব্র্যান্ডের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি।

 

সামনে নতুন কাজে দেখা যাবে কি?

কয়েকজন নির্মাতার সঙ্গে কথা হয়েছে। ধীরে ধীরে কাজে ফেরার চেষ্টা করছি। তবে খুব বড় পরিসরে নয়। আসছে ঈদুল ফিতর নিয়ে কয়েকটি কাজের বিষয়ে কথা হচ্ছে। এখনো নিশ্চিত বলতে পারছি না। তবে ধীরে ধীরে কাজে মনোযোগী হব।

সর্বশেষ খবর