শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা
এবার ঈদেও থাকছেন ড. মাহফুজুর রহমান

দর্শকদের আনন্দ দেওয়ার জন্য গেয়ে যাচ্ছি

দর্শকদের আনন্দ দেওয়ার জন্য গেয়ে যাচ্ছি

বেসরকারি টিভি চ্যানেল এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজের চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান। প্রতিবারের মতো এবারও ঈদ মাতাতে তিনি আসছেন ভিন্ন স্বাদের গান নিয়ে। সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন। লিখেছেন- পান্থ আফজাল

 

প্রতি ঈদে আপনার একক গানের অনুষ্ঠান বেশ আলোচনায় থাকে এবারের পরিকল্পনা জানতে চাই

টেলিভিশন এমন একটি মাধ্যম যেখানে দর্শকরা সব সময় নতুনত্ব খোঁজে। অনুষ্ঠানে যখন সময়োপযোগী ও ভিন্ন মাত্রা যোগ হয় তখন তা পূর্ণতা পায়, গ্রহণীয় হয়। সে লক্ষ্যেই এই ঈদে দর্শকদের জন্য আমার উপহার একক সংগীতানুষ্ঠান ‘হদয় তোমাকেই চায়’। বেশ কিছু রোমান্টিক গান রয়েছে এবারের অনুষ্ঠানে। গত বছর ‘দাইমা’ শিরোনামের মিউজিক্যাল ড্রামার রিমিক্স করেছিলাম। গানটি দর্শকমহলে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিল। এবার গানটির সিক্যুয়াল করেছি। এ ছাড়াও চমক হিসেবে রয়েছে গজল সম্রাট মেহেদী হাসানের গাওয়া গজল। আশা করি সবমিলিয়ে দর্শকদের জন্য ঈদের আনন্দ আয়োজনে বড় প্রাপ্তি হবে এই অনুষ্ঠানটি।

 

নতুন গানগুলো শ্রোতা-দর্শকদের মাঝে কেমন সাড়া ফেলবে বলে আশা করছেন?

আমার প্রতিটি অনুষ্ঠানই দর্শকরা সাদরে গ্রহণ করেন, এ জন্য আমি আমার দর্শক-শ্রোতাদের কাছে কৃতজ্ঞ। এবারের গানগুলো নিয়েও আমি প্রচ- আশাবাদী। আশা করি এবারের ঈদের অনুষ্ঠানেও এর কোনো ব্যতিক্রম হবে না। কেননা শ্রোতারাই আমার গানের প্রাণ। শ্রোতাদের অকুণ্ঠ ভালোবাসাই শিল্পী মাহফুজুর রহমানের এগিয়ে চলার পাথেয়।

 

আপনার গান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচনা হয় বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা দুটো হলেও এর মধ্যে প্রশংসাটাই বেশি। আমার ফ্যান, ফলোয়ারদের কমেন্টেই বোঝা যায় তারা আমার গান কতটা পছন্দ করেন। একসময় একটি মহল অপচেষ্টায় নেমেছিল। কিন্তু আমার ভক্তদের কাছে তারা টিকতে পারেনি। আমার দুঃখ যারা আমার সমালোচনা করেছেন তারা কেউই গঠনমূলক সমালোচনা করেননি। আমার গায়কি, সুর, তাল, লয় নিয়ে সমালোচনা করলে আমি তা সাদরে গ্রহণ করব।

 

আপনি সংস্কৃতিমনা; গানও গান গানের ভুবনে নিজেকে জড়ানোর গল্পটা আমাদের বলবেন কি?

গান আমার প্রধান হবি। ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি দুর্বলতা ছিল। বাবা গান পছন্দ করতেন। দুজন শিক্ষক আমার বোনকে বাসায় এসে গান শেখাতেন। এতে করে গানের সঙ্গে মিতালিটা আমার জন্য খুব সহজ হয়ে যায়। এখন গানই আমার স্বাচ্ছন্দ্যের প্রধান জায়গা, গান নিয়েই আমি থাকতে চাই। গানের প্রতি নিজের প্রচ- ভালোবাসা কাজ করে মন থেকে। তাই তো দর্শকদের আনন্দ দেওয়ার জন্য গেয়ে যাচ্ছি। দর্শকরাও ভালোবেসে আমার গান শুনছেন, এ জন্য আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

 

গানকে বলা হয় গুরুমুখী বিদ্যা- কথার সঙ্গে আপনি কি একমত?

আমি মনে করি গান হচ্ছে আল্লাহ প্রদত্ত। গলা না থাকলে গুরু যেমন কিছু করতে পারেন না তেমনি গুরু ছাড়া গানও হয় না। গানের জন্য নিয়মিত রেওয়াজ করার দরকার। আমি দুই যুগ ধরে সংগীতচর্চা করে আসছি।

 

চলচ্চিত্র আর নাটকের জন্য গল্প গান লিখেছেন বিষয়ে জানতে চাই...

‘ভালোবাসি তোমাকে’, ‘বিদ্রোহ চারিদিকে’সহ অনেক ছবির গল্প লিখেছি, অনেক নাটকও রচনা করেছি। এরমধ্যে ৫০০ পর্বের ধারাবাহিক ‘ঘরজামাই’ এবং বর্তমানে প্রচার চলতি ‘স্মৃতির আল্পনা আঁকি’ অন্যতম। গানও অনেক লিখেছি। শুধু লেখা নয়, টেকনিক্যাল দিকেও আমার মেধা রয়েছে। ছোটবেলা থেকেই ফটোগ্রাফির প্রতি ঝোঁক ছিল। এটিএন বাংলার সব ক্যামেরা আমি নিজে পছন্দ করে ক্রয় করি। অনেক অনুষ্ঠানের ফটোগ্রাফি আমি নিজে করেছি, কেননা আমি নিজেকে একজন ক্যামেরাম্যান মনে করি। সিঙ্গাপুর গিয়ে ডলবি সিস্টেমও রপ্ত করেছি আমি।

 

আপনার গাওয়া প্রতিটি গানে রোমান্টিকতা বিরহের প্রাধান্য থাকে, কেন?

একটি নির্দিষ্ট ধাঁচের গানের মধ্যে আমি নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখতে চাইনি। শ্রোতাদের জন্য আমি সব ধরনের গান উপহার দিতে চেয়েছি। প্রেম, ভালোবাসা মানে শুধু রোমান্টিকতা নয়, বিরহও প্রেমেরই অংশ। শুধু আমি নই, যুগে যুগে স্বনামধন্য শিল্পীরা রোমান্টিক ও বিরহের গান গেয়েছেন, লেখকরা গল্প, উপন্যাস লিখেছেন। শ্রোতাদের চাহিদার কারণেই গানে ভেরিয়েশন এনেছি।

 

গান নিয়ে আপনার আগামী পরিকল্পনা কী?

অনেক প্রতিভাবান শিল্পী রয়েছেন, যারা সুযোগের অভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারছেন না। বিগত কয়েক বছর ধরে আমি নিয়মিতভাবে প্রতি বছর দু-তিনজন নতুন শিল্পী উপহার দিয়েছি। আসলে আমি গান গাইব এটি বড় কথা নয়, আমি শিল্পী তৈরি করব এটাই আমার মূল পরিকল্পনা।

 

কোন অনুপ্রেরণা থেকে স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন?

ব্যবসার প্রয়োজনে একসময় আমি বেশির ভাগ সময় দেশের বাইরে থাকতাম। বিদেশে গেলে আমি বাংলা ভাষাকে খুব মিস করতাম। হোটেলের টেলিভিশনে কোনো বাংলা চ্যানেল ছিল না। সেই অভাববোধ আমাকে তাড়িত করত। এই উপলব্ধি থেকেই আমি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিলাম।

 

অবসর সময় আপনি কীভাবে কাটান?

একসময় প্রচুর বই পড়তাম আর গান শুনতাম। বলতে গেলে বইয়ের পোকা ছিলাম। আমার বাবা কলকাতা থেকে প্রচুর বই আর লং প্লে কিনে আনতেন। অবসর সময় এসব গল্প, উপন্যাস পড়েই সময় কাটত। এখন ব্যস্ততার কারণে বই পড়ার জন্য খুব বেশি সময় পাই না। তবে কাজের ফাঁকে এখন প্রচুর গান শুনি।

সর্বশেষ খবর