অভিনেত্রী মাহীর পা মাটিতে নেই। কি অবাক হচ্ছেন! মাটিতে পা না ফেলে তো আর হাঁটা যায় না। কিন্তু অহংকারীদের নিয়ে প্রবাদ আছে- 'অহংকারীর পা মাটিতে পড়ে না'। মাহীর ক্ষেত্রে এ প্রবাদটি মানানসই। খুব বেশিদিন হয়নি তিনি অভিনয়ে এসেছেন। কিন্তু এরই মধ্যে নিজেকে বিশাল কিছু ভাবতে শুরু করেছেন। যা কোনোদিন শাবানা-ববিতা কিংবা শাবনূর-মৌসুমীরাও করেননি। আর তাই মাহী প্রসঙ্গে এফডিসি বাসিন্দাদের মন্তব্য হচ্ছে- 'কম পানির মাছ বেশি পানিতে এসেছে তো। তাই চোখে লাল-নীল-বেগুনি বাতি দেখে ভড়কে গেছে সে।'
সম্প্রতি সংবাদকর্মীদের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে এভাবেই সমালোচিত হয়েছেন তিনি। তার সঙ্গে দেখা করতে হলে সাংবাদিকদের নাকি অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া বাধ্যতা মূলক। না হলে সে যত বড় মাপের সাংবাদিকই হোক না কেন তার সঙ্গে কথা বলা বা ছবি তুলতে দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না তার। তার এ আচরণে ক্ষুব্ধ হয়েছে মিডিয়া জগত।
গত রবিবার বেশ কয়েকজন সাংবাদিক এফডিসি গিয়েছিলেন চলচ্চিত্রের সংবাদ সংগ্রহ করতে। বিভিন্ন ফ্লোর ও এফডিসির আঙিনায় চলছিল একাধিক ছবির শুটিং। তিন নম্বর ফ্লোরে অনন্তর 'মোস্ট ওয়েলকাম টু', ৮ নম্বর ফ্লোরে ইফতেখার চৌধুরীর 'ওয়ান ওয়ে', ২ নম্বরে সৈকত নাসিরের 'দেশ দ্য লিডার' এবং কড়ইতলায় নজরুল ইসলাম খানের 'রানা প্লাজা'। এসব ছবির শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন অনন্ত, বর্ষা, বাপ্পী, মাহী, ববি, সাইমন, পরীসহ অনেকে। সবাই সাংবাদিকদের সঙ্গে আন্তরিকভাবে কুশল বিনিময় ও আলাপচারিতা করছিলেন এবং ছবি তুলতে দিচ্ছিলেন। কিন্তু উঠতি নায়িকা মাহী করে বসলেন অসৌজন্যমূলক আচরণ। তার সঙ্গে সাংবাদিকরা কথা বলতে গেলে তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠে জানতে চান আগে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া হয়েছে কিনা। ছবি তুলতে গেলে তাতেও বাধা দেন এবং তাচ্ছিল্যের সঙ্গে জানিয়ে দেন যত বড় মাপের সাংবাদিক হন না কেন তার সঙ্গে দেখা বা ফোনে কথা বলা কিংবা ছবি তুলতে হলে আগে অ্যাপয়েন্টমেন্ট না নিয়ে কোনো সাংবাদিক যেন তার ধারে-কাছে না ঘেঁষে।
এমন আচরণে হতবাক হন সংবাদকর্মীরা। তাদের কথায়, সাংবাদিকদের প্রচার প্রচারণার কারণেই মাহি আজ নায়িকার তক্তে বসেছেন। অথচ সাংবাদিকের সঙ্গেই আজ অসৌজন্যমূলক আচরণ করছেন। চলচ্চিত্রকাররাও তার আচরণে চরম অসন্তুষ্ট। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নির্মাতা আক্ষেপ করে বলেন, আসলে চলচ্চিত্রে আসতে হলে এখন বংশমর্যাদা, নাম, পরিচয়, শিক্ষা বা যোগ্যতা লাগে না। গডফাদার পেলেই হলো, সহজে খ্যাতি আর অর্থ-বিত্তের মালিক হওয়া যায়। এদের মানসম্মানবোধ বলতে কিছুই নেই। ফলে অন্যের মানসম্মান এরা বুঝবে কী করে।
মাহীর এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণে তার পাশাপাশি সমালোচিত হচ্ছে জাজ মাল্টিমিডিয়া। ভালো ছবি নির্মাণের সুনাম রয়েছে এ প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু মাহীর মতো বেয়াদব শিল্পীর পৃষ্ঠপোষক হিসেবে প্রতিষ্ঠানের দুর্নাম রটছে এখন।