বাংলাদেশের মাইলসের ব্যান্ডের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় কলকাতার ব্যান্ড ফসিলসের সমালোচনা করলেন ভারতীয় অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। গত ৭ আগস্ট রাতে নিজের ফেসবুক পেজে এ নিয়ে বড়সড় একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। ‘প্রসঙ্গ: ফসিলস আর মাইলস’ শিরোনামের এ স্ট্যাটাসের শুরুতে পরমব্রত লিখেছেন, ‘আমাদের ভারতীয়দের মধ্যে কিছু লোক প্রতিবেশী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে, তাদের অকারণে ছোট করে ভাবেন বিরাট দেশপ্রেমিক হওয়া গেলো। বিশেষ করে আজকালকার এই অতি দক্ষিণপন্থী বাজারে। এদের বিরোধিতা করে আমি অনেক কটু কথা শুনেছি, এমনকি দেশদ্রোহী তকমাতেও ভূষিত হয়েছি।’
ভারতের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আগামী ১৩ আগস্ট কলকাতায় নজরুল মঞ্চে আজাদী কনসার্টে সংগীত পরিবেশনের কথা ছিলো মাইলস, ফসিলস ও পাপনের। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতবিদ্বেষী মন্তব্যের জেরে মাইলসকে বাদ দেওয়ার দাবি তোলে ফসিলস। এ কারণে বিতর্ক এড়াতে আয়োজকরা দুটি ব্যান্ডকেই এ কনসার্ট থেকে সরিয়ে দিয়েছে। মাইলসের পরিবর্তে নেওয়া হয়েছে চন্দ্রবিন্দু।
এ ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় বইছে বলা যায়। ফেসবুকে ‘বয়কট মাইলস’ পেজও খোলা হয়। এর পেছনে ফসিলস ও গায়ক রূপম ইসলামের ইন্ধন আছে বলে অভিযোগ মাইলসের। এ নিয়ে নিজেদের ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন তারা। একইভাবে রূপমও তার ফেসবুক পেজে ভিডিও বার্তা পোস্ট করেন।
এ প্রসঙ্গে ‘কাহানি’ তারকা পরমব্রতর মন্তব্য, ‘বিগত কয়েকদিনে ফেসবুক এবং অন্যান্য মাধ্যমে এ একটি বিতর্ক এবং সেই সংক্রান্ত তর্কবিতর্ক দেখে, পড়ে আমি আজ নিরপেক্ষভাবে কিছু অন্য সুরের কথা না বলে পারছি না। ঠিক যেভাবে কোনো ভারতীয়র বিদ্বেষমূলক বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জ করবো, ঠিক তেমনি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কেউ যদি আমার দেশ ভারতের নামে অকারণে খারাপ কথা বলে, তাহলে সেটারও সমালোচনা হওয়া দরকার। আমি যদি তার পরিপ্রেক্ষিতে আমার ব্যক্তিগত জায়গা থেকে তাদের সঙ্গে একমঞ্চে পারফর্ম করতে অস্বীকার করি, তাহলে সেটা নিয়ে অত হইচইয়ের কী আছে?’
পরমব্রত আরও বলেছেন, ‘আমি মাইলসের ভক্ত নই, ফসিলসের নই। ফসিলসের সঙ্গে পরিচয় বহুদিনের। তাদের কিছু গান নিশ্চয়ই ভালো লাগে। ঠিক যেমন মাইলসেরও কিছু গান ভালোবেসে শুনে বড় হয়েছি। কিন্তু আমি যা বলছি তা আমার সাধারণ যুক্তি বলেই মনে হয়েছে।’
সবশেষে দুই বাংলা প্রসঙ্গ টেনে পরমব্রত বলেন, ‘দুই বাংলাতেই যারা ঘৃণা ছড়িয়েছেন বা ছড়াচ্ছেন, তাদের আরও একবার বলি, ইতিহাস জানুন। বাঙালির বিবর্তন জানুন। অশিক্ষার পরবশ হয়ে বিদ্বেষ ছড়াবেন না। তাতে আমরা আমাদের পরিচিতিটাকে অপমান করছি। আর কিছু নয়।’
বিডি প্রতিদিন/৯ আগস্ট ২০১৬/হিমেল-১২