"আরে ভাই, আশঙ্কা ও আপত্তি শব্দ দু'টোর পার্থক্য আগে বুঝতে হবে। আশঙ্কা হল কোন সন্দেহ প্রকাশ করা। কোন বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তা করা। সন্দেহ ও দুশ্চিন্তা থেকেই আশঙ্কা করা হয়। আমিও আশঙ্কা করেছি, আপত্তি নয়।" মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর 'ডুব' ছবি নিয়ে সেন্সর বোর্ড ইস্যুকে কেন্দ্র করে এভাবেই নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মেহের আফরোজ শাওন।
সম্প্রতি সেন্সর বোর্ডে জমা পড়ে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর 'ডুব' ছবিটি। কিন্তু কোন কোন গণমাধ্যমে খবর এসেছে যে, সেন্সর বোর্ডের কাছে এই ছবির বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে একটি পত্র দিয়েছেন মেহের আফরোজ শাওন।
এই প্রেক্ষাপটে ফারুকীও প্রশ্ন তুলেছেন যে, শাওন 'ডুব' নিয়ে আপত্তি জানানোর কে? ঠিক একই প্রশ্নের উত্তর জানতে চাওয়া হয় শাওনের কাছে।
এ প্রসঙ্গে শাওন বলেন, "আবারও বলছি, আশঙ্কা প্রকাশ করেই চিঠিটি লিখেছি। চিঠির ভাষা অনেকটা এ রকম-বেশ কিছুদিন আগে কলকাতা ও বাংলাদেশের কয়েকটি প্রভাবশালী গণমাধ্যমে 'ডুব' সিনেমার নায়কের সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। যেখানে চরিত্র ও কাহিনী বিন্যাসে প্রয়াত হুমায়ুন আহমেদের জীবনীকেই তুলে ধরা হয়েছে বলে দাবি করা হয়। কিন্তু ছবিটির পরিচালক নিজে কখনো এই বিষয়ে হ্যাঁ বা না কিছুই বলেনি। আর আমার দুশ্চিন্তা মূলত এখানেই। আমি চাই না প্রয়াত স্বামী ও আমার জীবনের স্পর্শকাতর কোন ঘটনা তুলে ধরা হোক যার কোন ভিত্তি নেই। আর এসব কারণেই 'ডুব' ছবি নিয়ে আমি আশঙ্কা প্রকাশ করেছি।"
যদি আপনার আশঙ্কা সত্যি হয় অর্থাৎ হুমায়ুন আহমেদের জীবনের সঙ্গে 'ডুব' ছবির সাদৃশ্য পাওয়া যায় তাহলে কি করবেন এমনটা জানতে চাইলে শাওন বলেন, "এমনটি হলে সেন্সর বোর্ডের ১৯৭৭ সালের নীতিমালা অনুযায়ি পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে হবে। আমার কষ্ট এখানেই যে 'ডুব' ছবি নিয়ে ফারুকী সাহেবের এত লুকোচুরি কেন? তিনি একজন গুণী নির্মাতা এতে কোন সন্দেহ নেই। সাহস করে বললেই তো হয় যে 'ডুব' সিনেমাটি হুমায়ুন আহমেদের জীবন থেকে নেওয়া কোন ঘটনা নয়। তাহলে আমি হয়তো তা মেনে নেওয়ার চেষ্টা করতে পারি। অথচ সেটা না করে তিনি সাসপেন্স তৈরি করছেন। আর বলছেন, দর্শকরা হলে গিয়েই উত্তর পাবেন।"
শাওন আরও বলেন, "হুমায়ুন আহমেদ ও তার পরিবার নিয়ে কোন বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করলে কোন অবস্থাতেই তা মেনে নিব না। আর আমি কেন, সমাজের কেউই মেনে নিবে না। আমি শুধুমাত্র আশঙ্কা থেকেই সেন্সর বোর্ডের কাছে বিষয়টি জানিয়েছি। এখন উত্তরের অপেক্ষায় আছি।"
এদিকে শাওনের এই আশঙ্কা নিয়ে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, এই অভিযোগটাই এক ধরনের বালখিল্য ব্যাপার । আমার ছবি কোনো উপন্যাস, গল্প, কবিতা, কিংবা জীবনিগ্রন্থ থেকে বানানো নয়। এটা একটা মৌলিক গল্প যার প্রধান চরিত্রের নাম জাভেদ হাসান এবং এখানে মেহের আফরোজ শাওন নামে কোনো চরিত্র নাই। সেই ক্ষেত্রে এখানে উনার এই চিঠির কোনো আইনগত ভিত্তি আছে বলে আমি মনে করি না। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, যে কেউ এখন সেন্সর বোর্ডে চিঠি লিখে বলতে পারে, এই ছবিতে বিয়ে দেখানো হয়েছে, আমিও জীবনে একখানা বিয়ে করেছি। এটা আমার সাথে মিলে গেছে, সুতরাং ছবিটা আটকে দিন।
ফারুকী আরও বলেন, এইভাবে হলে তো কোনো গল্প, উপন্যাস, সিনেমা বানানো সম্ভব হবে না। আমার মনে হয়, বাক্য ব্যয় না করে আমরা ছবিটার জন্য অপেক্ষা করি। ছবিটা দেখি। ছবির গল্প এবং চরিত্রগুলোর অসহায়ত্বে ডুব দেই।
উল্লেখ্য 'ডুব' ছবির প্রধান কয়েকটি চরিত্রে অভিনয় করছেন বলিউডের ইরফান খান, কলকাতার পার্নো মিত্র, ঢাকার নুসরাত ইমরোজ তিশা, রোকেয়া প্রাচীসহ অনেকে। প্রযোজনা করছে বাংলাদেশের জাজ মাল্টিমিডিয়া ও কলকাতার এসকে মুভিজ। সহ-প্রযোজক হিসেবে আছেন ইরফান খান।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭/ আব্দুল্লাহ সিফাত