শাকিব খান বলেছেন, ইন্ডাস্ট্রিতে আমার শত্রু যারা রয়েছে, তারা হয়তো ভেবেছেন শাকিব খানের অধ্যায় এবার শেষ! কিন্তু শেষ তো হই-ইনি, বরং নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছি।
মুক্তির অপেক্ষায় ওপার বাংলার জনপ্রিয় নায়িকা শুভশ্রীর সঙ্গে শাকিব খানের নতুন ছবি 'চালবাজ'। ছবিটির পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম এবেলাকে দীর্ঘ একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ঢালিউড সুপারস্টার। সেখানে এক প্রশ্নের জবাবে এমনটাই বলেন তিনি।
শাকিব খান আরও বলেন, আমি কীভাবে এতটা সাফল্য পেলাম, সেটাই মাঝে মধ্যে বুঝতে পারি না। আমি সেই মানুষগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞ, যারা আমাকে ভালবাসেন। কিছুদিন আগেই খুব খারাপ সময় এসেছিল আমার জীবনে। কিন্তু ওই মানুষগুলোর ভালবাসা কখনও কমেনি। জীবনে তো কম কিছু দেখলাম না। কিন্তু খারাপ সময় আমাকে স্পর্শও করতে পারেনি। কেন জানেন? ওই মানুষগুলোর নিঃস্বার্থ ভালবাসা! ওরাই আমার জীবনের সব কিছু।
এরপর ঢালিউড সুপারস্টার যোগ করেন, ইন্ডাস্ট্রিতে আমার শত্রু যারা রয়েছে, তারা হয়তো ভেবেছেন, শাকিব খানের অধ্যায় এবার শেষ! কিন্তু শেষ তো হই-ইনি, বরং নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছি। এটাই তো আল্লাহর রহমত! খারাপ সময়েই কাছের মানুষকে চেনা যায়।
বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে শাকিব খান বলেন, খুব ভগ্নদশায় আমি আমাদের ইন্ডাস্ট্রিটাকে পেয়েছিলাম। আপনি যদি ২০০০ সাল অবধি বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রিকে দেখেন, তখন আমাদের ওখানে টলিউডের চারগুণ বাজেটের ছবি তৈরি হতো। সেই সময় আমরা তখন দু’কোটি টাকায় ছবি বানাতাম। টলিউডে ছবির বাজেট তখন ৫০ লক্ষ। তখন আমাদের সুপারস্টার ছিলেন সালমান শাহ। শাহরুখ খানের সঙ্গেও ওর ভাল আলাপ ছিল।তখনকার তারকাদের হাতে প্রায় ২০-২৫টা ছবি থাকতো। আমাদের ছবি সুপারহিট হলে প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যবসা করত। ভাবতে পারছেন!
এবার সাংবাদিকের প্রশ্ন, বাংলাদেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি পিছিয়ে পড়ল কীভাবে?
সালমান শাহ মারা গেলেন। আরও যারা স্টার ছিলেন, তারা অনেকে অভিনয় ছেড়ে গেলেন। অনেকে বিয়ে করে নিলেন। আমি যখন ইন্ডাস্ট্রিতে আসি, তখন আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির একটা ক্রান্তিকাল চলছিল। তারপর কোথা থেকে একটা অশ্লীল পিরিয়ড চলে এসেছিল। আমাদের ইন্ডাস্ট্রি তখন ফাঁকা মাঠ। কোনো ভাল তারকা নেই। সেই সুযোগে কিছু দুষ্টু লোক ইন্ডাস্ট্রিতে ঢুকে পড়েছিল। তারাই অশ্লীলতাগুলো করত! মান্না ভাই(প্রয়াত নায়ক মান্না) সেই সময় ইন্ডাস্ট্রির অভিভাবক ছিলেন। তার নেতৃত্বে ইন্ডাস্ট্রি ওই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করে। সিনেমা হল রাজকীয় ব্যবসা! সারা বিশ্বে তারাই সিনেমা বানান, যাদের প্রচুর অর্থ রয়েছে, সঙ্গে একটা শিল্পী মনও রয়েছে। অনেক নামী প্রযোজকও অশ্লীলতার সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পেরে ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে দেন। ওই সময়টাতেই ইন্ডাস্ট্রি অনেকটা পিছিয়ে গিয়েছিল। তারপর ইন্ডাস্ট্রিটাকে নতুন করে সাজাতে প্রচুর সময় লেগে গেল। আজকে বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রি যে অগ্রগতিটা করেছে, সেটা আরও আগে হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু ১৯৯৫-২০০০ সালের সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখা যায়নি।
বিডি-প্রতিদিন/৩১ মার্চ, ২০১৮/মাহবুব