শাকিব খান বলেছেন, মানুষ আমাদের ভালবাসেন। সেই কারণেই আমাদের সম্পর্কে তাদের এত আগ্রহ। ভালাবাসা থেকেই আসে ব্যাপারটা। খারাপ লাগে না তা নয়, কিন্তু ঠিক আছে...!
মুক্তির অপেক্ষায় ওপার বাংলার জনপ্রিয় নায়িকা শুভশ্রীর সঙ্গে শাকিব খানের নতুন ছবি 'চালবাজ'। ছবিটির পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম এবেলাকে দীর্ঘ একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ঢালিউড সুপারস্টার। সেখানে এক প্রশ্নের জবাবে এমনটাই বলেন তিনি।
শাকিবকে প্রশ্ন করা হয়, তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে যে সংবাদ মাধ্যমে এত কাটাছেঁড়া হয়, খারাপ লাগে না? জানালা দিয়ে দূরের দিকে তাকিয়ে জবাবে শাকিব বলেন, ইট’স পার্ট অফ লাইফ! মানুষ আমাদের ভালবাসেন। সেই কারণেই আমাদের সম্পর্কে তাদের এত আগ্রহ। ভালাবাসা থেকেই আসে ব্যাপারটা। খারাপ লাগে না তা নয়, কিন্তু ঠিক আছে...!
এরপর সাংবাদিকের প্রশ্ন, অতিরিক্ত আগ্রহ তো কারও বিরক্তি বা যন্ত্রণার কারণও হতে পারে! শাকিব খান বলেন, যন্ত্রণা তো হয়ই! ভালর চেয়ে আমার সম্পর্কে খারাপ খবর আরও বেশি ছড়াবে এটা আমি মন থেকে মেনে নিয়েছি। স্টার হলে একটা কালো ছায়া পিছু ধাওয়া করবেই। এটাই নিয়ম! এই কালো ছায়ার কাজ হল স্টারকে বেইজ্জতি করা।
''আমি এগুলো গায়ে মাখি না। কারণ, জীবনে সবচেয়ে খারাপটা আমি দেখে ফেলেছি। তাই নতুন করে আর কিছু দেখার নেই! জীবনে খারাপ মুহূর্ত আসারও সুবিধা আছে। এগুলো পরিণত করে তোলে। জীবনে প্রতিটা খারাপ মুহূর্তে আমাদের একটা করে শিক্ষা দিয়ে যায়।''
পরের প্রশ্নের উত্তরের ঢালিউড সুপারস্টার বলেন, ভাল-মন্দ তো সব জায়গাতেই রয়েছে। দুষ্টুলোকেদের কাজই তো খারাপ কাজ করা। আমার মনে হয়— তাদের পিছনে সময় না দিয়ে, ভাল মানুষদের নিয়ে আলোচনা করাই শ্রেয়!
এ সময় বাংলাদেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি নিয়েও কথা বলেন শাকিব। এক প্রশ্নের জবাবে শাকিব খান বলেন, খুব ভগ্নদশায় আমি আমাদের ইন্ডাস্ট্রিটাকে পেয়েছিলাম। আপনি যদি ২০০০ সাল অবধি বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রিকে দেখেন, তখন আমাদের ওখানে টলিউডের চারগুণ বাজেটের ছবি তৈরি হতো। সেই সময় আমরা তখন দু’কোটি টাকায় ছবি বানাতাম। টলিউডে ছবির বাজেট তখন ৫০ লক্ষ। তখন আমাদের সুপারস্টার ছিলেন সালমান শাহ। শাহরুখ খানের সঙ্গেও ওর ভাল আলাপ ছিল।তখনকার তারকাদের হাতে প্রায় ২০-২৫টা ছবি থাকতো। আমাদের ছবি সুপারহিট হলে প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যবসা করত। ভাবতে পারছেন!
এবার সাংবাদিকের প্রশ্ন, বাংলাদেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি পিছিয়ে পড়ল কীভাবে? শাকিব বলেন, সালমান শাহ মারা গেলেন। আরও যারা স্টার ছিলেন, তারা অনেকে অভিনয় ছেড়ে গেলেন। অনেকে বিয়ে করে নিলেন। আমি যখন ইন্ডাস্ট্রিতে আসি, তখন আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির একটা ক্রান্তিকাল চলছিল। তারপর কোথা থেকে একটা অশ্লীল পিরিয়ড চলে এসেছিল। আমাদের ইন্ডাস্ট্রি তখন ফাঁকা মাঠ। কোনো ভাল তারকা নেই। সেই সুযোগে কিছু দুষ্টু লোক ইন্ডাস্ট্রিতে ঢুকে পড়েছিল। তারাই অশ্লীলতাগুলো করত! মান্না ভাই(প্রয়াত নায়ক মান্না) সেই সময় ইন্ডাস্ট্রির অভিভাবক ছিলেন। তার নেতৃত্বে ইন্ডাস্ট্রি ওই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করে। সিনেমা হল রাজকীয় ব্যবসা! সারা বিশ্বে তারাই সিনেমা বানান, যাদের প্রচুর অর্থ রয়েছে, সঙ্গে একটা শিল্পী মনও রয়েছে। অনেক নামী প্রযোজকও অশ্লীলতার সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পেরে ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে দেন। ওই সময়টাতেই ইন্ডাস্ট্রি অনেকটা পিছিয়ে গিয়েছিল। তারপর ইন্ডাস্ট্রিটাকে নতুন করে সাজাতে প্রচুর সময় লেগে গেল। আজকে বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রি যে অগ্রগতিটা করেছে, সেটা আরও আগে হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু ১৯৯৫-২০০০ সালের সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখা যায়নি।
বিডি-প্রতিদিন/৩১ মার্চ, ২০১৮/মাহবুব