ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে গিয়েছিলেন দেশের আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। শনিবার বিকালে তিনি রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে যান।
প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর ডিবি কার্যালয় থেকে বের হয়ে হিরো আলম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ডিবি পুলিশ আমাকে ডাকেনি। আপনারা দেখেছেন চলচ্চিত্রের কিছু লোকজন আমাকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় বিভিন্ন ধরনের কথা বলছে। আগে আমাকে কেউ বকা দিলেও প্রতিবাদ করতাম না। কিন্তু চলচ্চিত্রের কিছু পরিচালক, প্রযোজক ও অভিনেতা-অভিনেত্রী আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের কথা ছড়াচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে আমি লিখিত অভিযোগ নিয়ে এসেছি।’
‘এছাড়া আমার ফেসবুক ও ইউটিউবের কিছু কন্টেন্ট, কিছু ব্যক্তি নিজের কন্টেন্ট বলে লাইসেন্স করে নিয়েছে। তারা এখন আমার চ্যানেলে স্ট্রাইক ও রিপোর্ট করছে। সব মিলিয়ে আমি নিজেই এসেছি।’অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ করেছি। এতে যারা আমাকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কথা বলেছে তাদের নাম আছে। এছাড়া আমার কন্টেন্ট নিয়ে যারা রিপোর্ট মেরেছে তাদের নামও আছে।’ তবে তিনি কারও নাম উল্লেখ করতে চাননি।
গোয়েন্দা প্রধানের প্রশংসা করে হিরো আলম বলেন, ‘হারুন স্যার অনেক ভালো মানুষ। আমার অভিযোগ তিনি শুনেছেন। তিনি আমাকে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। এছাড়াও আগামী নির্বাচনে তিনি আমাকে সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।’
পুলিশ পরিদর্শক খুনের মামলার আসামি আরাভ খানকে ধরতে গোয়েন্দা পুলিশকে তথ্য দিয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করবেন বলেও জানিয়েছেন হিরো আলম। তিনি বলেন, ‘আমি আইনকে শ্রদ্ধা করি। আরাভ ইস্যুতে কোনো তথ্য বা সহযোগিতা লাগলে আমি করব। আরাভের বিষয়টি যেহেতু তারা তদন্ত করছেন। যেকোনো প্রয়োজনে তথ্য লাগলে আমি তাদের দেব। আজকেও এ বিষয়ে অল্প কিছু কথাবার্তা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে ডিবি থেকে আগে কিছু জানানো হয়নি। আমি আরাভের দাওয়াতেই দুবাই গিয়েছিলাম। তদন্তের স্বার্থে আরাভের বিষয়ে কিছু জানতে চাইলে আমি সহযোগিতা করব। তারা আমাকে ডাকলে আমি আসব। সে যদি আসামি হয়ে থাকে তাহলে তাকে ধরতে সহযোগিতা করা নাগরিক হিসেবে আমার দায়িত্ব।’
এরপর বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ডিবি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করেন হিরো আলম। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘ব্যক্তিগত কাজে ডিবি অফিসে আসলেন হিরো আলম। সোশ্যাল মিডিয়া ইউটিউব প্লাটফর্মে হিরো আলমকে নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর বিরুদ্ধে ডিবি হারুন সাহেবের কাছে আসছি। হারুন সাহেব অনেক আন্তরিক ও সম্পূর্ণ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন।’
উল্লেখ্য, গত বছরের জুলাই গান সংক্রান্ত বিষয়েই ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য হিরো আলমকে ডেকে পাঠানো হয়। তবে বিষয়টি ছিল ভিন্ন। সেসময় ডিবি জানিয়েছিল, অনুমতি ছাড়া পুলিশের ড্রেস পরে ঘুরে বেড়ানো এবং রবীন্দ্রসংগীতসহ সংস্কৃতি বিকৃতি করার অভিযোগে হিরো আলমকে ডাকা হয়েছিল।
এদিকে পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানের সোনার দোকান উদ্বোধন করতে সম্প্রতি দুবাই গিয়েছিলেন হিরো আলম। সেই দোকান উদ্বোধন করতে বাংলাদেশ থেকে গিয়েছেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ শোবিজ অঙ্গনের আরও অনেকেই।
গত ১৬ মার্চ ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, তদন্তের স্বার্থে সাকিব আল হাসান ও হিরো আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ