২০০৩ সালের সম্মেলনে আওয়ামী লীগে বিভিন্ন উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক পদ সৃজন হয়েছিল। আমার জানা মতে, এর উদ্দেশ্য ছিল সাবেক ছাত্রলীগ নেতৃবন্দ এবং বিভিন্ন পেশার শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, যারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির যোগ্যতা রাখেন, কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটির স্থান সংকুলানের অভাবে নেয়া যাচ্ছে না, তাদেরকে দলের মূল স্রোতধারায় রাখার জন্য ১৯টি সম্পাদকীয় পদের সাথে ৫ জন করে ৯৫ জনকে সহ-সম্পাদক করা হয়।
যারা তখন সহ-সম্পাদক হয়েছিলেন তারা সবাই ছিলেন সুপরিচিত রাজনৈতিক নেতা। অধিকাংশই ছিলেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ সারাদেশে পরিচিতমুখ। মাঝে সময়ের প্রয়োজনে লাগামছাড়া হয়ে অসংখ্য সহসম্পাদক করা হয়েছিল। যার কারণে শ্রদ্ধেয় নেতা ওবায়দুল কাদের ভাই একসময় বলেছিলেন যার সাথে ধাক্কা লাগে সেই বলে সহ- সম্পাদক। দিন বদলেছে। সহ-সম্পাদকের সংখ্যা কমার কথা শুনেছি। সম্প্রতি ফেসবুকের মাধ্যমে উপ-কমিটির সহ-সম্পাদকদের তালিকা দেখে অবাক হয়েছি। আমার মতো ক্ষুদ্র মানুষ সবাইকে চিনব-এ আশা করি না। কিন্তু অর্থ উপ-কমিটির প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ হলে দেখি, এ উপ-কমিটির পাঁচজন সহ-সম্পাদকের সবাই আমার অপরিচিত। এমনকী তাদের একজনের নামও আগে কখনো শুনিনি।
হতেই পারে। জানার আগ্রহ থেকে খোঁজ নিতে গিয়ে যা শুনলাম তাতে অবাক হলাম। মনে হলো, আপার বিশ্বাসের চরম অমর্যাদা করে ব্যক্তি স্বার্থের চরম প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে। যারা করেছে তারা এত অর্বাচীন এবং আওয়ামী রাজনীতির প্রতি চরম অশ্রদ্ধা দেখিয়ে ৫ সহ-সম্পাদকের নামের পর প্রায় ১০ জন সদস্যের পরে ড. অনুপম সেন ও খোন্দকার বজলুল হকের নাম দিয়েছেন। এতে মনে হয়, যারা এটা করেছেন তারা আওয়ামী লীগের রাজনীতির “অ আ” সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল নন। সামান্য কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া বাকি সব উপ-কমিটির দশাই এক।
আমাদের আস্থা ও বিশ্বাসের ঠিকানা জননেত্রী শেখ হাসিনা। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বোঝা যাচ্ছে, তিনিও এ বিষয়ে জানতেন না। আর সাধারণ সম্পাদকের কথায় গতকাল পর্যন্ত মনে হয়েছে তিনিও জানেন না। জননেত্রীর নির্দেশে সাধারণ সম্পাদককেও এ বিষয়টা দেখতে হবে। কে করেছে তা উদঘাটন করে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের সাধারণ সম্পাদক তৃণমূল থেকে উঠে আসা মানুষ এবং নেত্রীর বিশ্বস্ত ভ্যানগার্ড। ওনাকে অবিলম্বে নেতাকর্মীদর মনোভাব বুঝে গ্রহণযোগ্য সমাধান বের করতে হবে। তা না হলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যার পরিণতি ভোগ করতে হবে তৃণমূলকে, দলকে, নেতৃত্বকে সর্বোপরি দেশকে। কারণ, নেতাকর্মীদের মনের অবস্থা আমাদের সবার থেকে তিনিই বেশি জানেন।
শাক দিয়ে মাছ ঢাকা সম্ভব নয়। সুতরাং সত্য উদঘাটন করুন, সমাধানের চেষ্টা করুন এবং কেউ দায়ী হলে শাস্তি দিন। (Nobody is indispensable in Bangladesh Awamileague except Sheikh Hasina and Bangabondhu family)শেখ হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধু পরিবার ছাড়া আওয়ামী লীগে কেউই অপরিহার্য নয়।
(আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমের ফেসবুক পেইজ থেকে সংগৃহীত)
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন