১৮ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:৪৯

লাভ তো দূরের কথা আসল নিয়েই টানাটানি...

কাজী ওয়াজেদ

লাভ তো দূরের কথা আসল নিয়েই টানাটানি...

কাজী ওয়াজেদ

খুব রাগান্বিত হয়ে রুমে ঢুকলেন ফাহিমা আক্তার সুমি। বললেন এখনি এসআই সাইফুলকে মামলার তদন্তকারী অফিসার হিসেবে পরিবর্তন করতে হবে। অন্য কাউকে দায়িত্ব দিতে হবে।

বললাম আর ২/১ টা দিন দেখি। ছেলেটা আপনার চুরি যাওয়া জিন্স প্যান্ট উদ্ধারের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টাই করছে। ওকে আরেকটু সময় দেই। নতুন অফিসার নিয়োগ করলে বুঝতে আর তথ্য উদঘাটন করতে আরো বেশি সময় লাগবে। তখন উদ্ধার করাটা আরো কঠিন হয়ে যাবে।

এভাবে বোঝানোর পরও শুনতে চান না ফাহিমা আক্তার। এসআই সাইফুলকে বদলাতেই হবে। অনেক অনুরোধ করে একটু সময় নিলাম।

আজ এসআই সাইফুল সেই চুরি হওয়া ৫০০ প্যান্ট উদ্ধারের পর ফাহিমা আক্তার খুশির চোটে আবেগে কেঁদে ফেলে বলছে এসআই সাইফুল তার ভাই !!

ফাহিমা আক্তার সুমির স্বামীর স্বল্প রোজগারের কারণে তিন সন্তান নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খান।তাই সংসারে কিছু ভূমিকা রাখার জন্য নিজে ছোট খাটো ব্যবসায় নেমে পড়েন।

বিভিন্ন গার্মেন্টস থেকে জিন্স প্যান্ট ওয়াশ করার জন্য সাব-কন্টাক্টে কাজ নেন। এ কাজে সহযোগিতা করার জন্য রুবেল নামের একজনকে নিয়োগ করেন।

গেলো রবিবার ৫০০ জিন্স প্যান্ট রুবেলের মাধ্যমে ওয়াশ করতে পাঠান ফাহিমা আক্তার। কর্মচারী রুবেল প্যান্টগুলো নিয়ে পালিয়ে যায়।

যে লাভের আশায় ব্যবসায় নামা সেই লাভ তো দূরের কথা আসল নিয়েই টানাটানি !! কিভাবে বুঝিয়ে দেবে ৫০০ প্যান্ট ?

সৎভাবে বাঁচার পথ খুব পিচ্ছিল হলেও মাথা উঁচু করেই বাঁচতে চান এই অদম্য নারী। মনটা শক্ত করে থানায় অভিযোগ প্রদান করেন।

অবশেষে প্যান্টগুলো ফিরে পেয়ে খুশিতে কেঁদেই ফেললেন থানা কম্পাউন্ডে। একজন নারীর সৎ পথে বেঁচে থাকার আকুতি দেখে যারপর নেই অভিভূত আমরা। অসংখ্য ধন্যবাদ এসআই সাইফুলকে ফাহিমা আক্তারের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য।

লেখক: ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), যাত্রাবাড়ী থানা।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর