৩ এপ্রিল, ২০২০ ০০:১৩

‘আসুন...বাঁচার জন্য নিয়ম মানি, আইনের জন্য নয়’

পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ

‘আসুন...বাঁচার জন্য নিয়ম মানি, আইনের জন্য নয়’

পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ

‘আমি চৈত্র মাসে হঠাৎ এসে
পাশে বসে ভালোবেসে
আড্ডা টানে, বিত্তবৈভব জৌলুস না
খুলে দেবো খোঁপার চুল
গহীন অরণ্য খুঁজে তোমায়
এনে দেবো মল্লিকা ফুল’।
চৈত্রদিন ভাল যাচ্ছে না। রাত যায় শংকায়। প্রতীক্ষার ভোর আসে। প্রত্যাশিত সংবাদ আসে না। মনে মনে সবাই অপেক্ষায় থাকি।

দিন-রাত বন্দি সময়।
সময় দীর্ঘ হয়।
মুক্তির ভোর আসে না।
প্রতীক্ষারও অবসান হয় না।
মানুষ জন্মগত স্বাধীন।
এই চৈত্রে সেচ্ছা পরাধীন।
ভোরের মুক্ত বাতাস আমাদের নয়।
ঝরা পাতার মাঠ আমাদের না।
মাঠের হু হু বাতাস আমাদের না।

হু হু বাতাসে এমনি এমনি দুঃখি হবার সুযোগ নেই। চৈত্রের উত্তাপে ছায়ার ভেতর আয়েশী শরীর । এবার নয়। আগামী চৈত্রে হবে হয়ত।

এবার দুঃখি সবাই।
পৃথিবীজুড়ে স্বজনের মৃত্যুতে।
এবার বড় কঠিন চৈত্র।
মাটি চৌচির কি না জানি না।
মানুষের অন্তর চৌচির। স্বজন হারানোর বেদনায়।
বিষন্নতায়। ভয়ে,আতঙ্কে।
মানব জাতি কঠিন এক সময় অতিক্রম করছে।
ভীষণ লড়াই এ মানুষ।
বিশ্বের মানুষ লড়াই করছে। বেঁচে থাকার।

জীবনের। লড়াইতে জয় আছে। পরাজয় আছে।
কৌশল আছে।
আমরা কৌশল নিয়েছি।
সেচ্ছা বন্দিত্বের।
বেঁচে থাকতে চাই।
সবাই মিলে।
তাই সবাই আত্মগোপনে।
পরিচিত সড়কে নেই।
রেঁস্তোরাতে নেই।
জনসভায় নেই।
সঙ্গীতের আসরে নেই।
স্টেডিয়ামে এ আর রহমান নেই।
ক্রিকেটের ছক্কা হাকানোতে কেউ নেই।
আম্পায়ার বল ছুড়ার সিগনাল দেন না।

মানুষশূন্য গ্যালারির চেয়ারের রং সৌন্দর্য বিলায়। তরুণ-তরুণীরা প্লেকার্ড নিয়ে মাঠে যায় না।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্লেকার্ড দিয়েছে।
প্লেকার্ডে লেখা ঘরে থাকো। জীবন বাঁচাও।
জীবনের প্রয়োজনে ঘর এখন আনন্দ।
দমবন্ধ মনে হচ্ছে?
হতে পারে। তবে ভাবেন, জীবন অনেক সুন্দর। বেঁচে থাকা অনেক আনন্দের।

সুদিনের অপেক্ষায় আছি। সুদিন আসবেই। মানবজাতি বহুবার সংকটে পতিত হয়েছে। দিনশেষে মানুষই জয়ী হয়েছে।

এবারও আমরা জয়ী হব। মুক্তির দিন সামনে। হঠাৎ সেই ঘোষণা আসবে। মানুষ বিজয়ী। মানুষ বিজয়ী।

বিজয়ের আনন্দে দল বেধে মানুষ বের হবে।
আমাদের চেনা পথে পথে আমরা আনন্দে মিলিত হব। বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাসে। সবচে আনন্দের সঙ্গীতে গলা মেলাব।

জীবনের জয়গান করতে করতে মঙ্গলের দিকে যাত্রা করব।
নুতন পৃথিবীর স্বপ্ন তখন বুক জুড়ে।
হিংসা-বিদ্বেষ থাকবে না। মানুষ ভুলে যাবে কুৎসিত যত কাজ। কুৎসিত মন থেকে বের হয়ে আসবে কুৎসিত মানুষেরা।

বিকশিত মন নিয়ে মানুষই হবে সবচেয়ে সুন্দর।
আসুন সবাই সুন্দর আগামী বুকে নিয়ে বেঁচে থাকি।
বাঁচার জন্য নিয়ম মানি।

আইনের জন্য নয়, নিজের জন্য নিয়ম মানি। সুন্দর আগামীর চৈত্রে রবীন্দ্রনাথের ভালবাসা অন্তরে জাগ্রত হবে। ভালবেসে না হয় বলেই দিব,

"প্রহর শেষে আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্র মাস-তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ।"
ভাল থাকুন সবাই।
নিয়ম মেনে থাকুন।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

সর্বশেষ খবর