গুপ্তধন! নামটি শুনতেই প্রথমে মনে হয় যদি আমি এমন একটা গুপ্তধনের সন্ধান পেতাম। অথবা আমাদের দেশের কোথাও গুপ্তধনের সন্ধান পাওয়া যেত তাহলে তো দেশের নাগরিক হিসেবে আমরাই আর্থিকভাবে লাভবান হতাম। আর কতো না চিন্তা মাথায় কাজ করে। সম্প্রতি মাটির তলায় বিপুল পরিমান গুপ্তধন পাওয়া গেছে। তবে যদি ভাবেন বাংলাদেশে, তাহলে ভুল করবেন। কারণ দেশটি বাংলাদেশ নয়।
ব্রিটেনের পূর্ব ডেভোনের সিটন এলাকার একটি জমি থেকে রোমান সাম্রাজ্যের সময়কার প্রায় ২২ হাজার মুদ্রা পাওয়া গেছে। লরেন্স এগারটন নামের একজন ব্যক্তি তার বাড়ির পাশের জমিতে মেটাল ডিটেকটরের সহায়তায় এই মুদ্রার সন্ধান পান।
লরেন্স এই বিপুল পরিমান গুপ্তধনের সন্ধান পাওয়ার পর টানা তিনদিন-তিনরাত স্থানটি পাহারা দেন। যাতে অন্য কেউ এসে এই সম্পদ চুরি করতে না পারে। প্রত্নতাত্ত্বিকেরা আসার পর তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সবকিছু বুঝিয়ে দেন।
প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, মাটির নিচে পাওয়া রোমান সাম্রাজ্যের ২২ হাজার মুদ্রাগুলো তামার তৈরি। হয়তো কোনো সৈনিক বা কোনো ধনী ব্যক্তি এগুলো লুকিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু পরে আর তা উদ্ধার করা হয়নি।
রোমান সাম্রাজ্যে দুজন সৈনিককে তাদের এক বছরের বেতন হিসেবে চারটি স্বর্ণের মুদ্রা দেয়া হতো। অপরদিকে একজন শ্রমিককে দুই বছরের বেতন হিসেবে দেয়া হতো একটি মুদ্রা। রোমান সমাজ ব্যবস্থায় দাস বা শ্রমিকদের অবস্থা যে ভালো ছিল না তা বিভিন্ন বৈষম্যের চিত্র থেকে সহজেই জানা যায়। কিন্তু প্রত্নতাত্ত্বিকেরা বলছেন, বিপুল পরিমান মুদ্রা মানেই সরকারি প্রশাসন জড়িত। তার মানে এই মুদ্রাগুলোর সঙ্গে তৎকালীন রোমান রাজপুরুষদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। যদিও তা আজ আর জানা সম্ভব নয়।
এদিকে রয়্যাল আলবার্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়াম রোমান সাম্রাজের এই মুদ্রাগুলো কেনার জন্য সাধারণের কাছ থেকে অর্থ উত্তোলন করছে।
মূলত ২০১৩ সালেই এগারটন এই সম্পদের খোঁজ পান। কিন্তু জমিজমা সংক্রান্ত কিছু জটিলতার কারণে তিনি এবিষয়ে মুখ খুলতে পারেননি। ব্রিটেনের ১৯৯৬ সালের গুপ্তধন আইন অনুযায়ী, এই মুদ্রাগুলোর মালিক ডেভন কর্তৃপক্ষ।
বিডি-প্রতিদিন/২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪/মাহবুব