শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা
ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকীর মূল্যায়ন

পরিকল্পনা অনুযায়ী বাড়ছে না বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান

সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়ছে না। সে কারণে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় জিডিপি প্রবৃদ্ধির যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেটিও অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না। ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মধ্যবর্তী মূল্যায়নে গতকাল এসব বিষয় তুলে ধরা হয়।
কাক্সিক্ষত প্রবৃদ্ধি অর্জিত না হওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করে মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালের বিশ্ব মন্দার ঢেউ বাংলাদেশেও পড়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতাও অর্থনীতির গতি টেনে ধরেছে। তবে আলোচ্য সময়ে দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়নে সন্তোষজনক অগ্রগতি হয়েছে।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) এই মধ্যবর্তী মূল্যায়ন তুলে ধরে। পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অংশ নেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান, অর্থ সচিব মাহাবুব আহমেদ, পরিবেশ ও বন সচিব নজিবুর রহমান, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ। জিইডির সদস্য অধ্যাপক শামসুল আলম ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকীর এই মধ্যবর্তী মূল্যায়ন উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিগত পাঁচ বছরে ৯১ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। কিন্তু এটা পর্যাপ্ত নয়। কর্মসংস্থান আরও বেশি হওয়া দরকার ছিল। কারণ এর সঙ্গে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার জড়িত।’ কাক্সিক্ষত বিনিয়োগ না হওয়ার জন্য ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদ হারকে দায়ী করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘১৭ থেকে ১৮ শতাংশ হারে ব্যাংকের ঋণ নিয়ে আর পরিশোধ করতে পারে না অনেকে। ফলে ঋণ খেলাপি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।’ তিনি ব্যাংকিং খাতে সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘আমাদের অর্জিত প্রবৃদ্ধি ব্যাপক না হলেও হতাশ হওয়ার কিছু নেই। যেটুকু হয়েছে তা গুণগত মানের দিক থেকে অনেক ভালো। কেননা এ প্রবৃদ্ধি বৈষম্য বাড়ায়নি ববং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বৈষম্য কমেছে।’ ২০১১ সাল থেকে বাস্তবায়ন শুরু হওয়া ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় বলা হয়েছিল, ২০১৫ সাল নাগাদ সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ জিডিপির ৩২ শতাংশে উন্নীত করা হবে। ওই বছর বিনিয়োগ ছিল জিডিপির ২৪ শতাংশ। কিন্তু মধ্যবর্তী মূল্যায়নে দেখা গেছে, তিন বছর পর এখন সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ হয়েছে জিডিপির ২৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ। অন্যদিকে, তিন বছরে দেশে প্রায় ৬১ লাখ কর্মসংস্থানের লক্ষ্য ছিল। এর বিপরীতে কর্মসংস্থান হয়েছে ৪৭ লাখ ৫০ হাজার জনের। বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে কাক্সিক্ষত গতি না আসায় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী জিডিপি প্রবৃদ্ধিও অর্জিত হয়নি।
 সরকারের পরিকল্পনায় প্রতিবছর গড়ে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে যা ৮ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য রয়েছে। গত অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ১৮ শতাংশ। মধ্যবর্তী মূল্যায়নে সরকারকে বেশ কয়েকটি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কার্যকর ও শক্তিশালী করা এবং বিচারিক কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করার কথা বলা হয়েছে। আরএমজির পাশাপাশি নিুপর্যায়ে থেকে উচ্চপর্যায়ের রপ্তানিপণ্য বহুমুখীকরণে গুরুত্ব দিতে হবে। সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প চিহ্নিত করে সেগুলোতে প্রয়োজনীয় অর্থায়নের মাধ্যমে দ্রুত বাস্তবায়নে সরকারকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর