ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের মর্গে এখনো রয়ে গেছে জুলাই-আগস্ট গণ অভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া ছয়জনের লাশ। প্রায় এক বছরেও পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় লাশগুলোর দাফনের কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি সরকার। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জুলাই গণ অভ্যুত্থানবিষয়ক বিশেষ সেল এবং পুলিশ লাশগুলোর দাফনের বিষয়ে সরকারের কাছ থেকে পাওয়া সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে। মর্গের হিমাগারে থাকা লাশগুলোর পাঁচ পুরুষ ও এক নারী রয়েছেন। যাদের বয়স ২০ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে।
মর্গের দায়িত্বে থাকা শাহবাগ থানার কনস্টেবল সালাউদ্দিন বলেন, লাশগুলোর ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। চেহারা বিকৃত হওয়ায় চেনার উপায় নেই। ডিএনএর সঙ্গে তাদের পরিহিত আলামতও সংগ্রহ করা হয়েছে। এখনো পর্যন্ত তাদের কোনো দাবিদার পাওয়া যায়নি এবং সরকারের সিদ্ধান্ত না পাওয়ার কারণে দাফনও করা যায়নি। ঢামেক সূত্র জানায়, মর্গে আটটি অজ্ঞাত লাশ ছিল। এর মধ্য থেকে বিভিন্ন সময় দুটি লাশ ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ) পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করে নিয়ে গেছে পরিবার ও স্বজনরা। মর্গের ইনচার্জ সেকেন্দার বলেন, সবই জুলাই-আগস্টে আন্দোলনের সময়কার লাশ। লাশগুলোর ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে কারও পরিচয় শনাক্ত হয়নি। শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর বলেন, ছয়টি লাশের ময়নাতদন্তে ছয় ধরনের মৃত্যুর কারণ পাওয়া গেছে। কেউ আঘাতে, কেউ গুলিতে এবং কেউ ওপর থেকে পড়ে মারা গেছেন। ফিঙ্গার প্রিন্ট থেকেও তাদের শনাক্ত করা যায়নি। লাশগুলোর দাফনের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে আলোচনা চলছে, শিগগির একটি সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে। এর আগে গত ৯ মার্চ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জুলাই গণ অভ্যুত্থানে অজ্ঞাত শহীদদের পরিচয় শনাক্তের উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তবে এখন পর্যন্ত লাশের দাবি নিয়ে তাদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি এবং ওই ছয় লাশের কোনো স্বজনও নিজেদের ডিএনএ নমুনা জমা দেননি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জুলাই গণ অভ্যুত্থানবিষয়ক বিশেষ সেলের সদস্য নাফিসা ইসলাম বলেন, মর্গে থাকা বেওয়ারিশ ছয় লাশের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। তবে এখন আমরা সেগুলো দাফন করতে চাচ্ছি। উপদেষ্টাদের বিষয়টি জানিয়েছি। আগামীকাল (রবিবার) বিষয়টির একটি সুরাহা হবে। এ ছাড়া লাশগুলোর ডিএনএ, পরিহিত আলামত এবং ছবি আমরা সংগ্রহে রেখেছি। দাফনের পরও যে কেউ দাবি করলে তা যাচাই করে শনাক্ত করা সম্ভব হবে।