হাজার বছরের বাংলা ভাষা ও কবিতা। কিন্তু আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার বয়স মাত্র ছয় দশক পেরিয়েছে। ছয় দশক আগে আমরা বুকের রক্ত দিয়ে মাতৃভাষাকে প্রতিষ্ঠা করেছি। এ এক অনন্য ইতিহাস। পৃথিবীতে এর কোনো দ্বিতীয় দৃষ্টান্ত নেই। ভাষার জন্য শহীদ হয়েছে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউর প্রমুখ। বাঙালিরা প্রাণ দিয়ে মুখের ভাষাকে কালজয়ী মহিমা দিয়েছে। বাঙালির জীবনে এ এক অপার গৌরব। আমরা সবাই এ গৌরবের উত্তরাধিকারী। ১৯৫২ সালে একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির নবজাগরণ ঘটে, আত্মপরিচয়ের নতুনমাত্রা যোগ হয়। কিন্তু আজও আমাদের এই মুখের ভাষাকে জীবনে পূর্ণাঙ্গভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারিনি, যে বিশিষ্ট মর্যাদা দেওয়ার কথা আমরা সেই সম্মান দিতে পারিনি আমাদের মায়ের ভাষাকে। আমাদের এই মাতৃভাষা আমাদের এই মাতৃভূমির মতোই অসহায়। তাকে পূর্ণ করে তোলার, তার মুখে হাসি ফোটানোর বহু কাজ এখনো বাকি। নানা মাত্রায় নানাভাবে বাংলা ভাষার পরিধি আমরা প্রসারিত করতে পারি, তাকে করে তুলতে পারি আরও গৌরবমণ্ডিত, আরও ঐতিহ্যময়। সে কাজের জন্য গভীরতর চর্চা অনুশীলন ও সাধনা প্রয়োজন। বাংলা ভাষার অফুরন্ত সম্ভাবনা রয়েছে। এই ভাষায় কবিতা লিখেছে চণ্ডীদাস, হায়াৎ মামুদ, আবদুল হাকিম, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশসহ আরও অনেক মহৎ কবি। বঙ্কিম, রবীন্দ্রনাথ, শরত্চন্দ্র, বিভূতিভূষণ, তারাশঙ্কর, মানিকের হাতে সমৃদ্ধ ও বিকশিত হয়েছে বাংলা গদ্য। হয়ে উঠেছে অশেষ শোভামণ্ডিত-অনবদ্য। বিশ্বের যে কোনো সাহিত্যের সঙ্গে তুলনায় বাংলা সাহিত্য সমমানের। বাংলা কবিতা অশেষ সৌন্দর্যখচিত, পশ্চিমের পাঁচ রোমান্টিক ওয়ার্সওয়ার্থ, কোলারিজ, কিটস, শেলী, বায়রণ যা করেছেন রবীন্দ্রনাথ একাই অর্জন করেছেন সমপর্যায়ের কৃতিত্ব। তার হাতে প্রস্ফুটিত হয়েছে বাংলা কবিতার অপরূপ শস্যরাশি। আধুনিকতায় ও মানবিকতায় বাংলা কবিতার গুরুত্ব অপরিসীম। এই ভাষার যথাযোগ্য মূল্য ও মর্যাদা আমাদের কর্মে এবং সাধনায় এখনো পরিপূর্ণ করে তুলতে পারিনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও স্বাধীনতার পঁয়তাল্লিশ বছরে বাংলা ভাষার মর্যাদা বৃদ্ধিতে আমাদের অর্জনও একেবারে কম নয়। বাংলা এখন বিশ্বে বহু দেশে আদৃত। কোনো কোনো দেশের জাতীয় ভাষার সঙ্গে বাংলা ভাষাকে নিজেদের ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়। একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃত। জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষা হিসেবেও বাংলাকে গ্রহণ করার জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাংলা সেরা সাহিত্যকীর্তি বিদেশি ভাষায় অনুবাদ করা প্রয়োজন। এখন পর্যন্ত বাংলা ভাষায় রচিত সেরা লেখাগুলোর পাঠক বাঙালিরাই। তবে বিদেশি ভাষায় অনুবাদ করা গেলে আমাদের পরিচয় বেড়ে যাবে। বিশ্বের বুকে আমাদের সম্মান আরও বাড়বে। তাই সার্থক অনুবাদ ও তার প্রসারে আরও সক্রিয় উদ্যোগ নেওয়া হলে এই ভাষার প্রতি পৃথিবীর মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা আরও সহজ হবে, এই ভাষা হয়ে উঠবে বিশ্বজনীন। ভাষার মাসে বাংলা ভাষা নিয়ে এই আমাদের প্রত্যাশা। লেখক : কবি
শিরোনাম
- জলবায়ু অর্থায়নের নামে ভয়াবহ ঋণের ফাঁদ
- চায়ের আড্ডায় টুকুর গণসংযোগ
- মোংলায় লিফলেট বিতরণ ও ধানের শীষের প্রচারণা
- সারাদেশে পুলিশের বিশেষ অভিযান, গ্রেফতার ১৭০০
- বরিশালের তিন অসহায় নারীর স্বামীকে রিকশা বিতরণ
- নারী কাবাডি বিশ্বকাপের ট্রফি উন্মোচন করলেন প্রধান উপদেষ্টা
- র্যাবের অভিযান টের পেয়ে সন্ত্রাসীর ছোড়া গুলি লাগলো গৃহবধূর বুকে
- রোহিঙ্গা ভোটার চিহ্নিত করতে মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশ ইসির
- প্রেষণে জনবল নিয়োগে বাংলাদেশ ও কাতার সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর
- ভবিষ্যতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থাকবে না : আমিনুল
- গণতন্ত্র উত্তরণের পথ হলো সফল জাতীয় নির্বাচন : মান্না
- ‘হিংসার রাজনীতি করে শেখ হাসিনা বগুড়ার উন্নয়ন করেনি’
- তৃণমূল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান সেলিমের
- একটি দল ধর্মকে পুঁজি করে রাজনীতি করছে: তৃপ্তি
- নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধ হয়ে মোকাবিলা করতে হবে : মোশাররফ
- কুমিল্লা বোর্ডে ফেল থেকে পাশ ১০৮ জন
- আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন অভিনেত্রী মেহজাবীন
- সোমবার সারা দেশে যানবাহন চলবে : পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন
- ব্রিতে নবান্ন উৎসব উদযাপিত
- বগুড়ায় গ্রামীণ ব্যাংকে আগুন দিল দুর্বৃত্তরা
আ-মরি বাংলা ভাষা
সেরা বাংলা সাহিত্যকীর্তি বিদেশি ভাষায় অনুবাদ করা প্রয়োজন
মহাদেব সাহা
প্রিন্ট ভার্সন
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর