শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ফাঁস প্রশ্নের ডাক্তারে রোগী মরণাপন্ন

—সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

ফাঁস প্রশ্নের ডাক্তারে রোগী মরণাপন্ন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মন্জুরুল ইসলাম বলেছেন, ফাঁস হওয়া প্রশ্নের সাহায্যে হওয়া ডাক্তারের হাতে রোগী হবে মরণাপন্ন। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ওভাবে যে ডাক্তার  হয়ে যায় ভবিষ্যতে তার উত্কৃষ্ট ডাক্তার হওয়া কোনো সম্ভাবনা নেই। সে হবে যেন-তেন ডাক্তার। তার হাতে রোগী মরে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। ভবিষ্যতে এরাই দেশের জন্য বিশাল বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। এ শিক্ষাবিদ আরও বলেন, যারা ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দিল তাদের নৈতিকতা সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছে গেল। যারা ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দেয় তাদের না আছে আত্মতৃপ্তি, না আছে বিশ্বাস। সুনীতির চর্চার কাছেও তারা যায় না। তাদের কাছে আশা-প্রত্যাশা করতে পারি না। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা দেশের উপকার করবে না। তার দুর্নীতি একসময় দেশের জন্য অপকার হয়ে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে অযোগ্য ব্যক্তিরা অনেক বড় পদে পৌঁছে যাচ্ছে। যে শিক্ষার্থীর বিজ্ঞান নিয়ে ধারণা নেই, সে প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে প্রকৌশলী হলেও দেশের কোনো কাজে আসবে না। ভবিষ্যৎ দেশ গড়ার জন্য নীতিবান মানুষ প্রয়োজন। এ জন্য প্রশ্নফাঁস অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। মন্জুরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছে এত পরীক্ষা এসে গেছে যে, তিন থেকে চার বছর পরপর একটি পাবলিক পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে তাদের। আর পরীক্ষায় ভালো করার তাড়া কাজ করে ছাত্র-ছাত্রীদের পেছনে। দুর্বল শিক্ষার্থীরা ভালো ফল করতে প্রশ্নফাঁসের পেছনে ছোটে। এত পরীক্ষার কারণেই কিছু দুর্বল শিক্ষার্থীর কাছে প্রশ্নফাঁসের দাবি তৈরি হয়েছে। প্রশ্নফাঁসের জন্য অনেক পরিবারও দায়ী। অভিভাবকরা সন্তানের ভালো ফলের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে। ভালো ফল করতে অনেক অভিভাবকও প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িয়ে যায়। তিনি বলেন, এমন প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে যে, সমাজ এখন আর আলোকিত মানুষ চায় না। শিক্ষার্থী আর তার পরিবার চায় পাস করে ভালো চাকরি করতে। কোচিং সেন্টার আর শিক্ষকরাও প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকেন উল্লেখ করে এ শিক্ষাবিদ বলেন, পাবলিক পরীক্ষার সংখ্যা কমাতে হবে। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষার কোনো প্রয়োজন নেই। এসব পরীক্ষা তুলে দিতে হবে। গ্রামাঞ্চলেও এর কারণে কোচিংয়ের প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর