বুধবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
বাংলাদেশ-পাকিস্তান ফাইনালে ওঠার লড়াই

হাইভোল্টেজ ম্যাচ আজ

হাইভোল্টেজ ম্যাচ আজ

ছয় বছরের পুরনো ছবি। তবুও স্মৃতিতে তরতাজা। মনে হয়, এই তো সেদিনকার তোলা। মিরপুর স্টেডিয়ামের ফ্লাড লাইটের আলোয় সাকিবকে জড়িয়ে মুশফিকের অঝোর ধারায় কান্নার ছবিটি এখনো ভাইরাল! ২০১২ সালের এশিয়া কাপের ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে ২ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। হারের পর কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন সাকিব, মুশফিকরা। কিন্তু জয় করে নিয়েছিলেন বাঙালির হৃদয়। ওই দলের অনেকে এখনো খেলছেন দাপটের সঙ্গে। ছয় বছর আগে এশিয়া কাপের ব্যর্থতা বাংলাদেশ ভুলেছিল তিন বছর পর ঘরের মাটিতে। তিন ম্যাচ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছিল পাকিস্তানকে। মাশরাফির নেতৃত্বে টাইগাররা যে উজ্জীবিত ও উদ্দীপ্ত ক্রিকেট খেলে বিশ্ব শাসনের ইঙ্গিত রেখেছিলেন, সেই ধারাবাহিকতায় এখন এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের স্বপ্ন দেখছেন মাশরাফিরা।

 সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নকে আজ অলিখিত সেমিফাইনালে হারালেই স্বপ্ন পূরণের পথে এক ধাপ এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।      

বিশ্বকাপ ফুটবলের দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলতে নাইজেরিয়াকে হারাতেই হতো লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনাকে। গ্রুপ পর্বে আইসল্যান্ডের সঙ্গে ড্র এবং ক্রোয়েশিয়ার কাছে হারে কাস্পিয়ান সাগরের তীরে এসে দাঁড়িয়েছিলেন মেসিরা। দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের সেই বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে জয়ের বিকল্প ছিল না আলবিসেলিস্তাদের। বিশ্বসেরা ফুটবলার মেসির জাদুতে সুপার ঈগলদের হারিয়ে নক আউট পর্বে জায়গা করে নিয়েছিল আর্জেন্টিনা। অবশ্য খুব বেশিদূর এগোতে পারেননি মেসিরা। তবে মেসিদের ওই ম্যাচ থেকে আত্মবিশ্বাসের রসদ নিতেই পারেন মাশরাফিরা! আজ অলিখিত সেমিফাইনালে আবুধাবির প্রচণ্ড গরমের সঙ্গে হারাতে হবে পাকিস্তানকেও। টানা দুই ম্যাচ জিতে ভারত সবার আগে ফাইনালে। সুপার ফোরে আফগানিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে টিকে আছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। আবুধাবিতে বাংলাদেশ রোমাঞ্চকর জয় পায় শেষ ওভারে মুস্তাফিজুর রহমানের জাদুকরী বোলিংয়ে। শেষ ওভারের সমীকরণ ছিল ৮ রানের। দুই আফগান ব্যাটসম্যান রশীদ খান ও সামিউল্লাহ শেনওয়ারি মুস্তাফিজের জাদুতে হতবিহ্বল হয়ে ৪ রানের বেশি নিতে পারেননি। খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে থেকে ‘অবশ্যই জয় চাই’ ম্যাচটি মাশরাফিরা জিতে নেয় ৩ রানে। ওই জয়ে আত্মবিশ্বাসে টগবগ করছে টাইগারশিবির। গরমের ক্লান্তি দূর করতে কাল ক্রিকেটারদের অনুশীলন ছিল ঐচ্ছিক। প্রচণ্ড গরম এড়াতে আইসিসি ক্রিকেট একাডেমিতে অনুশীলন করেননি মাশরাফি, সাকিব। তবে তারা এখন অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। কাল ঐচ্ছিক অনুশীলনের পর কোচ স্টিভ রোডস মিডিয়ার মুখোমুখিতে বলেন, ‘আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়টি আমাদের দলকে মানসিকভাবে চাঙা করেছে পুরোপুরি। এই জয় আমাদের আত্মবিশ্বাসী করবে পাকিস্তানের বিপক্ষে।’ ১৯৮৬ সাল থেকে বাংলাদেশ খেলছে এশিয়া কাপে। তখন থেকেই পাকিস্তানের বিপক্ষে নিয়মিত খেলছে টাইগাররা। ২০১৫ সালে সর্বশেষ মুখোমুখি দুদল এখন পর্যন্ত খেলেছে ৩৫ ম্যাচ। তাতে জয় সাকল্যে ৪টি এবং হার ৩১টি। বাংলাদেশ প্রথম জিতেছিল ১৯৯৯ সালে বিশ্বকাপে।

টাইগারদের বর্তমান ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজনের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ৭ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। এরপর টানা ২৫ ম্যাচে হার। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের পর ঘরের মাঠে মাশরাফির নেতৃত্বে হোয়াইটওয়াশ করে চমকে দেয় পাকিস্তানকে। ওই সিরিজে দুরন্ত ক্রিকেট খেলেছিলেন তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম। টানা দুই সেঞ্চুরিসহ একটি হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন তামিম। একটি সেঞ্চুরি ও হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন মুশফিকও। দুবাই এসেছিলেন তামিম। কিন্তু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কব্জি ভেঙে যাওয়ায় দেশে ফিরে গেছেন দেশসেরা ব্যাটসম্যান। তার জায়গায় খেলছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু তিন ম্যাচ খেলে দুই অংকের রান করতে পারেননি। মুশফিক খেলছেন এবং সেঞ্চুরি করে আলোও ছড়িয়েছেন। ফাইনালে খেলতে পাকিস্তানকে হারাতে উপরের সারির ব্যাটসম্যানদের রান করার তাগিদ দিলেন কোচ, ‘জিততে হলে অবশ্যই আমাদের শুরুটা ভালো হতে হবে। এজন্য টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের রান করতে হবে।’ ৩২ বছর ধরে এশিয়া কাপ খেলছে টাইগাররা। ফাইনাল খেলেছে দুবার, ২০১২ ও ২০১৬ সালে। প্রথমবার পাকিস্তান এবং দ্বিতীয়বার ভারতের কাছে হেরে রানার্স আপে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে বাংলাদেশকে। তৃতীয়বার ফাইনাল খেলতে আজ জিততে হবে অলিখিত সেমিফাইনালে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর