বৃহস্পতিবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

খালেদা জিয়া অসুস্থ, আদালতে হাজির হননি

নিজস্ব প্রতিবেদক

পরোয়ানা থাকার পরও অসুস্থতাজনিত কারণে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানিতে হাজির করা যায়নি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে। গতকাল ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ সৈয়দ দিলজার হোসেনের আদালতে মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য দিন ধার্য থাকলেও তা পিছিয়ে ২৪ জানুয়ারি ঠিক করেছেন বিচারক। পুরান ঢাকার বকশিবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে অস্থায়ী এজলাসে বিচার চলছে এ মামলাটির। খালেদা জিয়ার পায়ে ফোঁড়া হয়েছে বলে আদালতকে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী। গতকাল বেলা ১১টা ৪৭ মিনিটে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়ে চলে ১২টা ১০ মিনিট পর্যন্ত। শুরুতেই দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, খালেদা জিয়ার পায়ে ফোঁড়া হয়েছে। তাই তাকে হাজির করা সম্ভব হয়নি। মামলাটি দীর্ঘদিন চার্জ শুনানির জন্য রয়েছে। এখন মামলাটি সম্পূর্ণ শুনানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। খালেদা জিয়া না এলেও আসামিপক্ষের অন্যদের চার্জ শুনানির অনুরোধ জানান তিনি। এ সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবী বলেন, চার্জ শুনানির জন্য প্রত্যেক আসামির উপস্থিত থাকার দরকার রয়েছে। একজন অনুপস্থিত থাকলে চার্জ শুনানি করা যায় না। খালেদা জিয়া অসুস্থ রয়েছেন, তিনি সুস্থ হলে আদালতে উপস্থিত হবেন। এ জন্য সময়ের আবেদন জানান তিনি। এ সময় আসামি পক্ষের অন্য আইনজীবীরাও চার্জ শুনানি পেছানোর জন্য সময়ের আবেদন করেন। বিচারক আইনজীবীদের বলেন, মামলাটি হাই কোর্টে দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত ছিল। আপনারা এখনো চার্জ পিটিশন দাখিল করবেন বলে সময় চাচ্ছেন? এর আগে পিটিশন দিতে পারতেন? এই মামলাটি হাই কোর্ট ৬ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলেছে। এ জন্য আপনারা (আইনজীবীরা) সহযোগিতা করবেন। পরে বিচারক উভয় পক্ষের শুনানি শেষে সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে শুনানির জন্য ২৪ জানুয়ারি দিন নির্ধারণ করেন। ওই তারিখে সবাইকে হাজির হওয়ার জন্যও আদেশ দেন বিচারক আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন। এর আগে, গত ১০ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে হাজির করতে পরোয়ানা জারি করে আদালত। আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জয়নুল আবেদীন মেসবাহ, তাহেরুল ইসলাম, আকরাম হোসেন, আবদুল হান্নান ভূঁইয়াসহ অন্যরা। দুদকের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মোশাররফ হোসেন কাজল। ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী সাবেক চারদলীয় জোট সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় এ মামলা করেন। মামলার পরদিন খালেদা জিয়া ও কোকোকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি করেছেন।

কুমিল্লার মামলার জামিন শুনানি ৪ ফেব্রুয়ারি : আমাদের কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুরে নৈশকোচে পেট্রলবোমা মেরে আটজন পুড়িয়ে হত্যা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি ও মামলার চার্জ গঠন ৪ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করেছে আদালত। গতকাল কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আলী আকবর এ আদেশ দেয়।

 বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাইমুল হক রিংকু। তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের চার্জ গঠন করা এবং আসামি পক্ষের জামিন শুনানির আবেদন ছিল। কিন্তু বিচারকের অনুপস্থিতির কারণে ১৬ জানুয়ারি পরবর্তী দিন ধার্য করে। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার শুনানি না করে নতুন তারিখ ধার্য করেন বিচারক।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে ২০-দলীয় জোটের অবরোধের সময় জগমোহনপুরে একটি বাসে পেট্রলবোমা ছুড়ে মারে দুর্বৃত্তরা। এতে আটজন যাত্রী দগ্ধ হয়ে মারা যান, আহত হন ২০ জন। এ ঘটনায় চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই নুরুজ্জামান বাদী হয়ে ৭৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় খালেদা জিয়াসহ বিএনপির শীর্ষস্থানীয় ছয়জন নেতাকে হুকুমের আসামি করা হয়। ৭৭ জন আসামির মধ্যে তিনজন মারা যান, পাঁচজনকে চার্জশিটকে থেকে বাদ দেওয়া হয়। খালেদা জিয়াসহ অপর ৬৯ জনের বিরুদ্ধে কুমিল্লা আদালতে তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক ফিরোজ হোসেন চার্জশিট দাখিল করেন।

সর্বশেষ খবর