নামি-বেনামি ঋণ এখন ব্যাংকিং খাতের গলার কাঁটা। এসব ঋণ আদায় করতে না পারায় বাধ্য হয়ে ৫০ হাজার কোটি টাকা অবলোপন (রাইট অফ) করেছে ব্যাংকগুলো। এর ফলে ব্যাংকের ওপর আস্থাহীনতা আরও বাড়ছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি উভয় খাতের ব্যাংকের পরিচালকদের হস্তক্ষেপে বৃহৎ আকারের নামি-বেনামি ঋণ অনুমোদন করে পরিচালনা পর্ষদ। কাগজপত্র ঠিক না থাকলেও প্রকল্প প্রোফাইল তৈরি করে এসব ঋণপ্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে মোটা অঙ্কের ঋণ নেওয়া হচ্ছে। পরে ওইসব গ্রাহককে আর খুঁজে পাচ্ছেন না ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক পরিদর্শন প্রতিবেদনে এরূপ শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম পাওয়া গেছে, যারা ব্যাংক থেকে বিপুল অঙ্কের ঋণ নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। কেউ কেউ দেশের বাইরে পালিয়ে গেছেন। আবার কেউ কেউ দেশেই রয়েছেন কিন্তু তাদের দেওয়া কাগজপত্রের সঙ্গে নাম-ঠিকানা এমনকি নমিনীর কোনো তথ্যই ঠিকমতো মেলে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ঋণগ্রহীতার ছবি পর্যন্ত পাল্টে ফেলার ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে ব্যাংকিং খাতে রেকর্ড পরিমাণ ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে খেলাপি ঋণের পাহাড় জমেছে। অন্যদিকে অনাদায়ী দেখিয়ে ৫০ হাজার কোটি টাকার ঋণ অবলোপন (মূল হিসাব থেকে বাদ দেওয়া) করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘ঋণ অবলোপন করা নতুন বিষয় নয়। তবে এখন যে হারে অবলোপন করা হচ্ছে, তাতে একসময় ব্যাংকিং খাত মারাত্মক সংকটে পড়বে। এজন্য ঋণ দেওয়ার আগে তা অধিক যাচাই-বাছাই করার তাগিদ দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর নজরদারি বাড়াতে হবে।’ জানা গেছে, বিভিন্ন সময় অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিতরণকৃত ঋণ ব্যাংকগুলো আদায় করতে না পারায় নিয়মিত হিসাব থেকে প্রতিনিয়তই বাদ দিয়ে দিচ্ছে। ফলে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ অবলোপনের (রাইট অফ) পরিমাণ প্রতি বছরই বাড়ছে। মূলত আর্থিক অবস্থা ভালো দেখাতে খেলাপি ঋণ অবলোপনের এ কৌশল প্রয়োগ করছে ব্যাংকগুলো। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যমতে, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলো ৪৯ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ অবলোপন করেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোই অবলোপন করেছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালার আলোকে ২০০৩ সাল থেকে ব্যাংকগুলো ঋণ অবলোপন করে আসছে। নীতিমালার আওতায় পাঁচ বছর বা তার বেশি সময় ধরে থাকা খেলাপি ঋণের বিপরীতে শতভাগ প্রভিশন রেখে এবং মামলা দায়ের করে তা অবলোপন করতে হয়। একটি সময় মামলা দায়ের না করে কোনো ঋণ অবলোপন করা যেত না। তবে মামলার খরচের চেয়ে অনেকাংশে বকেয়া ঋণের পরিমাণ কম হওয়ায় ২০১৩ সালের শেষ ভাগ থেকে মামলা না করেই ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ অবলোপনের সুযোগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৫৬ হাজার ৭২০ কোটি টাকা। পাঁচ বছর পর ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৯ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। এখন সে খেলাপি ঋণ ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
শিরোনাম
- বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য জবির বিশেষ পরিবহন সেবা
- ঢাকার ইন্দিরা রোড থেকে গাজীপুরের আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার
- যৌথ বাহিনীর অভিযানে সারা দেশে আটক ২৯ জন
- জয়ের পরই বাবার মৃত্যুর খবর পেলেন লঙ্কান ক্রিকেটার
- বাংলাদেশ ও চীন হাতে হাত রেখে এগিয়ে যাবে : প্রধান উপদেষ্টা
- বাংলাদেশকে নিয়ে শেষ চারে শ্রীলঙ্কা
- সরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ ভাতা পুনর্নির্ধারণ
- রাবিতে পোষ্য কোটা পুনর্বহাল, উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও
- নেপালকে ৪ গোলে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ
- ইসলামি দলগুলোর ঐক্য নিয়ে যে বার্তা দিলেন হেফাজত আমির
- সিলেটে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলবে না : পুলিশ কমিশনার
- যে সকল ভারতীয়দের ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র
- ৯১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে আফগানিস্তান
- জুলাই বিপ্লব পরবর্তীতে র্যাবের কার্যক্রম প্রশংসিত হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- সার সংকটে ঝিনাইদহের কৃষক, উৎপাদন খরচ বাড়ার শঙ্কা
- ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক মতভিন্নতার শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে : প্রেস সচিব
- লিবিয়ায় মাফিয়াদের গুলিতে নিহত মাদারীপুরের যুবক
- ট্রাম্পের সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই: ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট
- ফিকি লিডারশিপ একাডেমি চালুর উদ্যোগ
- জাপানের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন তাকাইচি
ব্যাংক খাতের গলার কাঁটা নামি-বেনামি ঋণ
নিরুপায় হয়ে ৫০ হাজার কোটি টাকা রাইট অফ
মানিক মুনতাসির
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর