রবিবার, ১০ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

উত্তাল ক্যাম্পাস শেষ মুহূর্তের প্রচারণায়

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

ডাকসু নির্বাচনে গতকাল শেষ দিনের মতো জমজমাট প্রচারণা চালিয়েছেন প্রার্থীরা। সকাল থেকে ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, কোটা সংস্কার আন্দোলন ও বামপন্থি জোটসহ অন্যান্য প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ক্যাম্পাসে ও হলগুলোতে প্রচারণা চালান। বিভিন্ন হলে প্রজেকশন মিটিং করেছেন তারা। ছুটির দিন হলেও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। অনেক প্রার্থী মিছিলও করেছেন।

চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের দিন থেকেই প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত প্রচারণা চালিয়েছেন তারা। প্রশাসনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ভোটগ্রহণের ২৪ ঘণ্টা আগে প্রচারণা শেষ করতে হবে। সে অনুযায়ী গতকাল রাতেই শেষ হয়ে গেছে প্রচারণার সময়। আজ কোনো প্রার্থী নিয়মানুযায়ী প্রচারণা চালাতে পারবেন না।

গতকাল ক্যাম্পাসের মধুর ক্যান্টিনসহ বিভিন্ন স্পটে প্রচারণা চালিয়েছেন সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদ সমর্থিত ছাত্রলীগের শোভন-রাব্বানী-সাদ্দাম পরিষদের নেতা-কর্মীরা। মধুর ক্যান্টিনের সামনে তারা একটি মিছিল করেন। এ ছাড়া নির্বাচনের প্রচারণার অংশ হিসেবে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে পরিচিতি সভা করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। এর আগে মধুর ক্যান্টিন থেকে মিছিল করে সেখানে যান নেতা-কর্মীরা। পরে সংগঠনটির প্যানেলের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। পরিচিতি সভা শেষে আরেকটি মিছিল নিয়ে কার্জন হলের দিকে যান তারা। সেখানে আরেকটি পরিচিতি সভার আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের ভিপি পদপ্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান, জিএস প্রার্থী আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক ও এজিএস প্রার্থী মো. খোরশেদ আল সোহেলসহ কেন্দ্রীয় ও হল সংসদের প্রার্থীরা। ডাকসুতে নির্বাচিত হলে শিক্ষার্থীবান্ধব নানা প্রতিশ্রুতি পূরণের আশ্বাস দেন তারা।

জাতীয় পার্টির ছাত্রসংগঠন জাতীয় ছাত্রসমাজের ২০-২৫ জন নেতা-কর্মী ডাকসু নির্বাচনে প্রচারণা চালাতে গতকাল দুপুরে ক্যাম্পাসের মধুর ক্যান্টিনে আসেন। তবে বামপন্থি ছাত্র সংগঠনগুলোর জোট ‘প্রগতিশীল ছাত্রজোট’ ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএলের ধাওয়ার মুখে ছত্রভঙ্গ হয়ে যান তারা। পরে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতা-কর্মীরা সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রসমাজের নেতা-কর্মীদের এ সময় লাঠিসোঁটা নিয়ে ধাওয়া করেন প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও বিসিএলের নেতা-কর্মীরা।

সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্স বলেন, ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রশাসন নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠনকে ফিরিয়ে আনতে চাইছে। প্রশাসনের নীরব ভূমিকার কারণে এসব সংগঠন ক্যাম্পাসে এসে প্রচারণা চালানোর বৈধতা পেয়েছে। আমরা এটা কোনো দিন মেনে নেব না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিষদে অলিখিতভাবে এরশাদপন্থি জাতীয় ছাত্রসমাজকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে আসছে কয়েকটি ছাত্রসংগঠন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে তাদের নিষিদ্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। এবারের ডাকসু নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে নকিবুল হাসান নিলয় এবং সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে মো. মামুন ফকিরকে প্রার্থী করে প্যানেল দিয়েছে তারা।

নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে গতকাল সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী এ আর এম আসিফুর রহমান। তিনি চার দাবি তুলে ধরেন। এসবের মধ্যে রয়েছে- ভোটগ্রহণের সময় বাড়ানো, নির্বাচনে প্রার্থীদের এজেন্ট নিয়োগ, পর্যবেক্ষকদের কাজ করার সুযোগ, সংবাদ সংগ্রহের অবাধ সুযোগ নিশ্চিত করা। এসব দাবি মেনে নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর