বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

খালেদা জিয়ার হাত-পায়ের জয়েন্টে ব্যথা কমেনি

বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে ১৮ দিন

মাহমুদ আজহার

খালেদা জিয়ার হাত-পায়ের জয়েন্টে ব্যথা কমেনি

১৮ দিন ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ওষুধ খেয়ে প্রেশার ও ডায়াবেটিস এখন নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে। ঘুমও হচ্ছে ওষুধ খেয়ে। এখন খাওয়ায় কিছুটা রুচি আসছে। তবে মাঝেমধ্যেই  তিনি বমি করছেন। হাত-পায়ের জয়েন্টে জয়েন্টেও আগের মতো ব্যথা রয়েছে। এটা কমছেই না। উঠে বসতে-দাঁড়াতে কারও সহযোগিতা নিতে হচ্ছে। হাত, পা-ও স্বাভাবিকভাবে নাড়াচাড়া করার চেষ্টা করছেন বেগম জিয়া। হাসপাতালে আসার পর কয়েক দিন বেগম জিয়ার ফিজিওথেরাপি বন্ধ ছিল। এখন নিয়মিত ফিজিওথেরাপি দেওয়া হচ্ছে। আগের ওষুধপত্রেও কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। গতকাল দুপুরে সরকার গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বেগম জিয়াকে দেখে আসেন। আবার শনিবারও তারা বেগম জিয়াকে দেখতে যাবেন। মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ও বিএনপি সমর্থিত একাধিক চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। ১ এপ্রিল চিকিৎসার জন্য কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। তার জন্য কেবিনের ৬২১ নম্বর কক্ষ বরাদ্দ করা হয়। ওই কক্ষেই থাকছেন তিনি। তার সঙ্গে রয়েছেন গৃহকর্মী ফাতিমা। পাশের ৬২২ নম্বর কেবিনে তার নিরাপত্তায় নিয়োজিত কারারক্ষীরা রয়েছেন। কারাবিধি অনুযায়ী, তাকে একটি টিভি দেওয়া হয়েছে, যাতে তিনি শুধু বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) দেখতে পাচ্ছেন। এ ছাড়া আরও একটি বাংলা দৈনিকও তার জন্য বরাদ্দ রয়েছে। হাসতাপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া খাবারই খাচ্ছেন বিএনপিপ্রধান। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. জিলন মিঞা সরকারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দেখভাল করছে। গতকাল দুপুরেও তারা বেগম জিয়াকে দেখে আসেন। এ মেডিকেল বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন- রিউমাটোলজি মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ আতিকুল হক, কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিলা পারভিন, ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বদরুন্নেসা আহমেদ ও অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক চৌধুরী ইকবাল মাহমুদ। খালেদা জিয়া কেমন আছেন- জানতে চাইলে মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. জিলন মিঞা সরকার গতকাল বিকালে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এখন আগের চেয়ে ভালো আছেন। হাসিখুশি নিয়ে কথাবার্তা বলেছেন। তার হাত-পায়ের জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা আগের মতোই রয়েছে। ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রণে আসছে। আগের চেয়ে তার স্বাস্থ্যের অনেক উন্নতি হয়েছে।’ বিএনপি সমর্থিত চিকিৎসক সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সাবেক মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসনের হাত-পায়ের ব্যথা কোনোভাবেই কমছে না। ওষুধ খেয়ে ঘুম হচ্ছে, প্রেশার ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। এখনো ঠিকমতো খেতে পারেন না তিনি। বমিও করছেন মাঝেমধ্যে। তার সুচিকিৎসার জন্য দীর্ঘমেয়াদি ট্রিটমেন্ট করতে হবে এবং সেটি কোনো বিশেষায়িত হাসপাতাল হলে ভালো হয়।’ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের তৈরি করা খাবারই খাচ্ছেন বেগম জিয়া। এ নিয়ে বিশেষ কোনো আগ্রহ নেই তার। রুটি, সবজি, সুপ, মাছের ঝোল, লাউয়ের তরকারি ও মুরগির মাংস তার পছন্দের। তার পছন্দসই খাবারই সরবরাহ করা হচ্ছে। আগের মতোই তিনি একা উঠে বসতে কিংবা দাঁড়াতে পারছেন না। তাকে সব সময়ই গৃহকর্মী ফাতিমার সহযোগিতা নিতে হচ্ছে। তবে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে এখন তিনি হাসিমুখে কথা বলছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর