মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

চিন্তায় বিরোধীরা, দিল্লির মসনদে বসতে তবুও দৌড়ঝাঁপ

নয়াদিল্লি ও কলকাতা প্রতিনিধি

চিন্তায় বিরোধীরা, দিল্লির মসনদে বসতে তবুও দৌড়ঝাঁপ

লোকসভা নির্বাচন-পরবর্তী ভোটের ফলাফল নিয়ে ভারতজুড়ে এখন তীব্র উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। ২৩ মে কী ফল আসবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক পক্ষগুলোও চিন্তিত। বিশেষ করে মোদিবিরোধীরা ‘বুথ জরিপের ফলাফলকে’ উড়িয়ে দিয়ে রণকৌশল গ্রহণ করছেন। তারা ক্ষমতায় যেতে সক্ষম হলে কী করবেন, আবার হেরে গেলে কীভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করবেন- তা নিয়ে বৈঠকের পর বৈঠক করছেন। সূত্র : ভারতীয় গণমাধ্যম। খবরে বলা হচ্ছে, আঞ্চলিক দলগুলোর হাতেই থাকছে সরকার গঠনের চাবিকাঠি। বিজেপিবিরোধী দলগুলো এ সম্ভাবনাই ধরে নিয়েছে। আর তাই লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের আগেই রাজনৈতিক তৎপরতা এখন তুঙ্গে। প্রকৃত ফল প্রকাশ হবে ২৩ মে। গতকাল ছিল বুথফেরত সমীক্ষা। গোটা দেশের চোখ ছিল এক্সিট পোলের দিকে। রাজনৈতিক মহলও ফল প্রকাশের আঁচ পেতে সেদিকে অমনোনিবেশ করলেও পাশাপাশি আসন্ন সরকার গঠনের প্রস্তুতি ও সব সম্ভাবনার কথা ভেবে সমীকরণ বদল নিয়েও সক্রিয় থেকেছে। গতকাল বিজেপিবিরোধী জোটে সব থেকে উদ্যোগী ছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু। তেলেগু দেশম সুপ্রিমো এদিনই রাহুল গান্ধী ও অন্য বিরোধী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর চলে গিয়েছিলেন লক্ষেèৗতে মায়াবতী ও অখিলেশ যাদবের মন বুঝতে। উত্তরপ্রদেশের ওই দুই নেতানেত্রীর জোট এবার দিল্লির সরকার গঠনের অনতম প্রধান ফ্যাক্টর। কারণ উত্তরপ্রদেশে যদি বিজেপি ফল আশানুরূপ করতে না পারে তাহলে দিল্লির সরকার গড়াও কঠিন হবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর বিশেষ করে মায়াবতী এখন পর্যন্ত তার ভোট পরবর্তী অবস্থান কী হবে তা স্পষ্ট করেননি। তবে আজ দিল্লিতে সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করবেন বিএসপি সুপ্রিমো মায়াবতী। সোনিয়া ও মায়াবতীর ওই বৈঠকের দিকেই অধীর আগ্রহে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল। জানা গেছে, মমতা ব্যানার্জির সঙ্গেও কথা বলবেন সোনিয়া গান্ধী।

কার্যত ভোটের ফল বেরোনোর আগেই ইউপিএ জোটের বাইরে থাকা দলগুলোর মনোভাব জেনে রাহুল ও সোনিয়া গান্ধীকে জানানোর জন্যই নাইডু উদ্যোগী। তাই অখিলেশ যাদব ও মায়াবতীর সঙ্গে আলোচনার পর গত রাতে দিল্লিতে ফিরে এসে গতকাল আবার রাহুল গান্ধী, সোনিয়া গান্ধী, শারদ পাওয়ারদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার বৈঠক করেন। এর আগে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। আবার মমতার সঙ্গে আজকালের মধ্যেই কথা বলবেন তিনি। বস্তুত কংগ্রেস নেতৃত্ব জানতে চাইছে, বিজেপি বিরোধী দলগুলোর কে কোন অবস্থানে দাঁড়িয়ে। অর্থাৎ কোন দল কংগ্রেসের নেতৃত্ব মেনে নিয়ে কংগ্রেসের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীকেই সমর্থন দিতে রাজি, আর কোন দল সেটায় রাজি নয়। কংগ্রেস সূত্রের খবর অবশ্য ফল প্রকাশ হওয়ার পরও কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রী পদ নিয়ে কোনো রকম টানাপড়েনের মধ্যে যেতে চাইছে না। বরং যদি দেখা যায় সত্যিই এনডিএ জোটের কাছে সরকার গঠনের মতো সংখ্যা নেই এবং আঞ্চলিক দলগুলোকে নিয়ে বিরোধীরা সরকার গড়তে পারে, তখনই কংগ্রেস প্রাথমিকভাবে চাইবে আঞ্চলিক দলগুলোকে নিয়ে জোটই আলোচনা করে স্থির করুক কে হবেন প্রধানমন্ত্রী। তবে মায়াবতী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকৃত ফলাফল আগে দেখে নিতে ইচ্ছুক। চন্দ্রবাবু নাইডু অবশ্য কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের সঙ্গে কথা বলেননি। নবীন পট্টনায়কও আগাম ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি বিজেপি ও কংগ্রেস উভয়ের থেকেই সমদূরত্ব বজায় রাখবেন। যদিও এসব অবস্থান ফল প্রকাশের পর বদলে যেতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের জল্পনা।

আরেক খবরে বলা হয়েছে, ২৩ মে ফলাফল ঘোষণার আগে, রবিবার সন্ধ্যায় প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন এক্সিট পোলের ফল। আর তাতে যেমন মুখে চওড়া হাসি ফুটেছে মোদি-শাহদের, তেমনই মাথায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বিরোধীদের। তাই পরবর্তী ঘুঁটি সাজাতে গতকাল সকাল থেকেই তৎপর হন বিরোধীরা। রাজধানী থেকে উত্তরপ্রদেশ হয়ে বাংলার উদ্দেশে ছুটতে দেখা গেছে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুকে। তবে থেমে নেই শাসক দলও। রণকৌশল সাজাতে আজ এনডিএ জোটের সব সদস্যের সঙ্গে নৈশভোজ সারতে চলেছেন অমিত শাহ। নয়াদিল্লিতে আয়োজিত সেই ভোজের আসরে আমন্ত্রণ পেয়েছেন মন্ত্রিসভার সব সদস্য এবং বিজেপির জাতীয় ও রাজ্যস্তরের শীর্ষ নেতারা।

সর্বশেষ খবর