মঙ্গলবার, ১৮ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তদন্ত

পাইলটের পাসপোর্ট রেখে যাওয়ায় দুটি ভুল দেখছে কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ বিমানের বহুল আলোচিত ফজল মাহমুদ ভুল করে পাসপোর্ট ঢাকায় রেখে গেছেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে। একই সঙ্গে এ কথাও বলা হয়েছে, ভুল একটি নয়, দুটি হয়েছে। প্রথম ভুল করেছেন পাইলট আর ইমিগ্রেশন পাসপোর্ট ছাড়াই তাকে যেতে দেওয়া হচ্ছে দ্বিতীয় ভুল। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে এসব তথ্য। তদন্ত কমিটির প্রধান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোসাম্মাৎ নাসিমা বেগম

রবিবার বিকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলমের কাছে প্রতিবেদনটি জমা দেন। এই প্রতিবেদনে অন্তত নয়টি সুপারিশ করেছে কমিটি। এসব সুপারিশে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব গতকাল জানিয়েছেন, তিনি এখনো প্রতিবেদনটি দেখেননি। দেখার পর এ বিষয়ে মন্তব্য করবেন। ফিনল্যান্ড সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দোহা থেকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ৬ জুন বিমানের একটি বোয়িং ৭৮৭ উড়োজাহাজ নিয়ে ঢাকা থেকে কাতারের রাজধানী দোহা যান পাইলট ফজল মাহমুদ। কিন্তু দোহায় পৌঁছার পরই তিনি দেখতে পান, তার পাসপোর্ট সঙ্গে নেই। এ নিয়ে হুলস্থূল অবস্থার সৃষ্টি হয়। বিমান থেকে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়, পাইলট ভুল করে পাসপোর্ট ঢাকায় রেখে গেছেন। এ ঘটনায় একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করে সরকার। মন্ত্রিপরিষদের অতিরিক্ত সচিব নাসিমা বেগমের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি নির্ধারিত পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যেই রবিবার তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কমিটি পুরো ঘটনা তদন্ত করে যেটা পেয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, পাইলট ভুল করেই পাসপোর্ট রেখে গেছেন। কমিটির জিজ্ঞাসাবাদে পাইলটও একই বক্তব্য দিয়েছেন। পাইলট দোহার আকাশে পৌঁছার পর মনে পড়ে তিনি পাসপোর্ট রেখে গেছেন। তখন তিনি তার সহকর্মীদের অবহিত করেন এবং ঢাকায় বিষয়টি জানান। তবে তদন্ত কমিটি মনে করে, ভিভিআইপিকে আনতে যাওয়া একটি ফ্লাইটে পাইলটের এমন ভুল কাম্য নয়। এটি কোনো সাধারণ ফ্লাইট ছিল না। কমিটি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, এখানে দুটি ভুল হয়েছে। পাসপোর্ট না নিয়ে পাইলট একটি ভুল করেছেন। আর ইমিগ্রেশনে যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা তার প্রয়োজনীয় তথ্য যাচাই না করে, বিশেষ করে পাসপোর্ট না দেখে তাকে ছেড়ে দিয়েছেন এটি হচ্ছে দ্বিতীয় ভুল। এ রকম ভুল করা কাম্য নয়। কারণ কেউ দেশের বাইরে গেলে অবশ্যই তার পাসপোর্ট থাকতে হবে এবং চেক করতে হবে। সে যে-ই হোক। কিন্তু ইমিগ্রেশন ওই পাইলটের বেলায় তা করেনি।  বেসিক হচ্ছে পাসপোর্ট থাকতে হবে। পাইলটরা রেগুলার যান। অনেক সময় হয়তো ইমিগ্রেশন তাদেরটা দেখতে চান না। কিন্তু সেটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। রেগুলার দেখতে হবে। পাইলটের পাসপোর্ট ছাড়া যাওয়াটা আইনের লঙ্ঘন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে তদন্ত কমিটি। তবে পাইলটের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা- সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলা হয়নি তদন্ত প্রতিবেদনে।

সর্বশেষ খবর