বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস ঠেকাতে বিজ্ঞানীরা দেশে দেশে ভ্যাকসিন আবিষ্কারে আরও সাফল্যের পথে রয়েছেন। এরই মধ্যে চীন তাদের আবিষ্কৃত ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে সফলও হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী, চীন থেকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বিশ্বের অন্তত ২০০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। করোনায় চীনে মারা গেছে ৩ হাজার ৩২৬ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৮১ হাজার ৬৩৯ জন। তবে চীনে প্রথমবার করোনার ভ্যাকসিন নেওয়া ব্যক্তিরা ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। মোট ১০৮ জনের মধ্যে এই পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার ১০৮ জনের মধ্যে মোট ১৮ জন তাদের কোয়ারেন্টাইনের পর্ব শেষ করে বাড়ি ফিরে গেছে। উহানে তারাই ছিলেন প্রথম ব্যক্তি, যাদের দেহে পরীক্ষা করা হয়েছিল এই সম্ভাব্য করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন। বিশেষজ্ঞদের দল আরও ছয় মাস ওই ব্যক্তিদের ওপর নজরদারি চালাবে বলে জানানো হয়েছে। আগামী ছয় মাস ওই ব্যক্তিদের রক্ত নিয়ে তাতে নিয়মিতভাবে অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করা হবে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই ভ্যাকসিন কার্যকর এবং নিরাপদ প্রমাণিত হলে, তারা বিদেশে অতিরিক্ত পরীক্ষা করার পরিকল্পনা করছেন। গত ১৭ মার্চ এই ভ্যাকসিনের পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে বয়স এমন মোট ১০৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি স্বেচ্ছায় এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। এ বিষয়ে চীনা মিডিয়া জানিয়েছে, তাদের মোট ৩ ভাগে ভাগ করে পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। এদেরকে উহানে হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল। আরেক খবরে বলা হয়েছে, প্রাণঘাতী নোভেল করোনাভাইরাসের টিকা উদ্ভাবনে কাজ করছেন রাশিয়া ও চীনের বিজ্ঞানীরা। এরই মধ্যে চীন করোনাভাইরাসের জেনোম রাশিয়ার বিজ্ঞানীদের কাছে হস্তান্তর করেছে।
তারা আশা করছেন, শিগগিরই ভাইরাসটির প্রতিষেধক উদ্ভাবন করা সম্ভব হবে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রাণঘাতী নোভেল করোনাভাইরাসের টিকা উদ্ভাবনের জন্য রাশিয়ার নোভোসিবিস্কের ভাইরোলজি ও বায়োটেকনোলজি বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ভেক্টর ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন। এরই মধ্যে তারা পরীক্ষামূলকভাবে দুটি টিকার প্রোটোটাইপ উদ্ভাবন করেছেন। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক রিনাত মাকসুইতভ জানান, আগামী জুনে টিকাগুলোর প্রোটোটাইপ প্রথমবারের মতো পরীক্ষা করা হবে। তিনি জানান, ভেক্টর ইনস্টিটিউট এরই মধ্যে নোভেল করোনাভাইরাসের দুটি প্রকারভেদ আবিষ্কার করেছে। ভাইরাসটি প্রতিরোধে টিকা উদ্ভাবনের জন্য রাশিয়া ও চীনের বিজ্ঞানীরা যৌথভাবে কাজ করছেন বলে জানানো হয়। এ ছাড়া প্রতিষেধক আবিষ্কারে আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীরাও নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন। এর ফলে নতুন ভাইরাস ঠেকাতে প্রতিষেধক কম সময়ে তৈরি হয়ে যাবে বলে আশা বিজ্ঞানীদের।