বুধবার, ২৯ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

বছর শেষে আসবে করোনার টিকা

প্রতিদিন ডেস্ক

কোনোভাবেই দমছে না করোনা। বরং দিনদিন দাপট বাড়িয়ে চলছে। প্রতিদিনই লাখ লাখ মানুষ এই ভাইরাসের কবলে পড়ছেন। আর এ থেকে আশার আলো দেখাতে পারে কেবল ভ্যাকসিন বা টিকা। কিন্তু কবে আসবে এই ভ্যাকসিন। এর মধ্যে ব্রিটিশ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন মাস চারেক লাগবে। এর মধ্যেই করোনার প্রতিষেধক নিয়ে আশার বাণী শোনাল মার্কিন দুই সংস্থা মডার্না আইএনসি এবং ফাইজার আইএনসি। সংস্থা দুটির দাবি, চলতি বছরের শেষের দিকেই তাদের তৈরি ভ্যাকসিন সাধারণ মানুষের ব্যবহারের উপযুক্ত হয়ে যাবে। তারা আলাদা আলাদা করে ৩০ হাজার মানুষের শরীরে ‘বৃহৎ’ আকারে ট্রায়াল শুরু করেছে। এর আগে বিশ্বের  কোনো সংস্থা এত বেশি মানুষের শরীরে এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু করেনি। স্থানীয় সময় সোমবার সকালে জর্জিয়ার সাভানায় এক ব্যক্তির ওপর এই টিকা পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়। আগামী দিনে আমেরিকার ৮৯টি জায়গায় এই পরীক্ষা হবে। সব মিলে ৩০ হাজার। তাতে সাফল্য এলে চলতি বছরের শেষ দিকে করোনভাইরাসের টিকা বাজারে এনে ফেলতে পারবে ওই দুই সংস্থা। তৃতীয় পর্যায়ে মানব শরীরের ওপর টিকার এই পরীক্ষামূলক প্রয়োগকে ফেজ থ্রি কোভ স্টাডি বলা হচ্ছে। এর আগে কখনো কোনো টিকা তৈরির অভিজ্ঞতা নেই মডার্নার। তবে মার্কিন সরকারের কাছ থেকে প্রায় ১০০ কোটি ডলার অর্থ সাহায্য পেয়েছে তারা। গত ১৬ মার্চ বিশ্বের প্রথম সংস্থা হিসেবে করোনাভাইরাসের ‘ভ্যাকসিন’ মানুষের শরীরে প্রয়োগ করে মডার্না। প্রথম পর্যায়ে মোট ৪৫ জন স্বেচ্ছাসেবীকে ‘ভ্যাকসিনের’ ডবল ডোজ দেওয়া হয়। মার্কিন সংস্থাটির দাবি, ‘‘প্রথম পর্যায়ের সেই ট্রায়াল সফল হয়েছে। যাদের শরীরে এই ‘ভ্যাকসিন’ প্রয়োগ করা হয়েছিল, তাদের করোনা প্রতিরোধ ক্ষমতা আগের তুলনায়  বেড়েছে। তাছাড়া যাদের ওপর পরীক্ষা হয়েছিল, তাদের কারও শরীরে তেমন গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই। সামান্য মাথাযন্ত্রণা, বমিভাব, খিঁচুনি এবং ব্যাথা ছাড়া আর  কোনো সমস্যাই দেখা যায়নি।” মডার্না জানিয়েছে, প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষায় আশানুরূপ ফল পাওয়ার পর এবার বড় আকারে ট্রায়াল শুরু হবে। সূত্রের খবর, সোমবার থেকেই প্রায় ৩০ হাজার মানুষের শরীরে এই ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করেছে সংস্থাটি। একই পথে হেঁটেছে ফাইজারও। এই পরীক্ষা সফল হলে ২০২১-এর মধ্যে ৫০ থেকে ১০০  কোটি ডোজ বাজারে আনা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন মডার্নার চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার স্টেফান বানচেল। কিন্তু কৃত্রিম এমআরএনএ দিয়ে তৈরি টিকা মানবশরীরের পক্ষে আদৌ নিরাপদ কিনা, প্রাপ্তবয়স্কদের পক্ষে এই টিকা কতটা উপযোগী এবং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াই বা কী হতে পারে, তৃতীয় পর্যায়ে তা-ই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরীক্ষা সফল হলে চুক্তি অনুযায়ী ২০০ কোটি ডলারের বিনিময়ে মার্কিন নাগরিকদের জন্য ৫ কোটি ডোজ সরকারকে দিতে বাধ্য ফাইজার। তারা জানিয়েছে, পরীক্ষা সফল হলে অক্টোবরের মধ্যে ৫ কোটি করোনা রোগীর ওপর টিকা প্রয়োগে অনুমতি চাইবে তারা।

২৮ দিন অন্তর দুটি করে ডোজ দেওয়া হবে ওই রোগীদের। ২০২১ শেষ হওয়ার আগে তারা ১৩০ কোটি ডোজ তৈরি করে ফেলবে বলে দাবি ফাইজারের। করোনার প্রকোপ রুখতে এই মুহূর্তে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সব মিলিয়ে ১৫০টি সম্ভাব্য টিকা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর