বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
বাংলাদেশ প্রতিদিন ফেসবুক লাইভ

আগামী বছর চালু হবে পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেল

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী বছর চালু হবে পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেল

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অর্থাৎ ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেল (আংশিক) চালুর বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিন (অনলাইন) বিজনেস টক-এর আলোচনায় এ আশার কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী বছরের ডিসেম্বরে আমাদের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী। সে সময় পদ্মা সেতু চালু করতে পারলে ভালোই হবে। আমি আশা করছি এটি হবে। তবে রেলসংযোগ যেহেতু পরে শুরু হয়েছে, সেটি করতে বিলম্ব হবে। আপাতত সড়কপথ চালু করা যাবে।’ আলোচনাকালে মন্ত্রী জানান, তিনি গত সপ্তাহে পদ্মা সেতু প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন। ওই সময় প্রকল্পের পিডি তাঁকে জানিয়েছেন, আর ১০টি স্প্যান বসালেই সেতুর কাজ শেষ হবে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই স্প্যান বসানো সম্ভব বলে প্রকল্প পরিচালক নিশ্চিত করেছেন। মেট্রোরেল সম্পর্কে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, করোনার কারণে কাজ বন্ধ থাকায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ এ মেগা প্রকল্পটির কাজও কিছুটা পিছিয়ে গেছে।

‘মেট্রোরেল প্রকল্পে আগের টার্গেট মিস হয়েছে। যেটি এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল, কিন্তু তা সম্ভব নয়। এখন আবার কাজ শুরু হয়েছে। আমরা আশা করছি আগামী বছরের জুন-জুলাইয়ের মধ্যে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু করা সম্ভব,’ বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী। ‘বিজনেস টক’ অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার কাজ চলতি বছরের এডিপি দিয়ে শুরু হয়েছে। তবে প্রথম প্রান্তিকে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির অগ্রগতি ভালো নয় বলে জানান তিনি। নতুন পঞ্চবার্ষিকে স্বাস্থ্য ও কৃষিতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলেন মন্ত্রী। বাজেট ব্যবস্থাপনা, রাজস্ব ঘাটতি ও ঋণ নিয়েও কথা বলেন। তিনি জানান, বাজেট ঘাটতি নিয়ে বড় ধরনের কোনো সমস্যা হবে না। অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উৎস থেকে প্রয়োজনীয় ঋণসহায়তা পাওয়া যাবে। আর রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হবে বলে বাজেট ঘাটতি বাড়বে বলে জানান তিনি। ‘রাজস্ব আদায় একটি পুরনো চ্যালেঞ্জ। তারা (এনবিআর) পুরো টার্গেট পুট আপ করতে পারে না। এবার ঘাটতি বেশি হবে। কারণ বাজারে টাকা কম,’ বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী। ‘রাজস্ব আয়ের যে তিনটি খাত আছে- আয়কর, ভ্যাট ও আমদানি শুল্ক এ তিনটিই এবার কমবে। আমাদের বাজেট ঘাটতি ৫ শতাংশ ধরা হয়। এবার হয়তো ৫ থেকে ৬ শতাংশ হতে পারে। ঘাটতি ১০ শতাংশ হলেও সমস্যা নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতি ও অপচয় কমানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন। যদি অপচয় কম হয়, দুর্নীতি কম হয়, তবে ঘাটতি বাজেট দিয়েও উন্নয়ন সম্ভব।’

রাজস্ব ঘাটতি মোকাবিলার জন্য তিনি এনবিআর কর্মকর্তাদের দিনের কাজ দিনে করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘দিনের কাজটি দিনে করে ফেলুন। এটি প্রাইমারি লেসন অব লাইফ।’ ‘অনেকে টেবিলে কাগজ নিয়ে বসে থাকেন সারা দিন। তিন-চার দিন সময় নেন। এগুলো ছেড়ে দিতে হবে। এজন্য মোটিভেশন দরকার।’ এ ছাড়া প্রযুক্তি সহায়তা কাজে লাগিয়েও রাজস্ব আয় বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

কভিড-১৯-এর কারণে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অর্থনীতিতে যেমন ঝুঁকি তৈরি হয়েছে, তেমনি সম্ভাবনাও রয়েছে বলে মনে করেন সাবেক এই আমলা। তার মতে, ডিজিটাল মাধ্যমে কাজ করার ফলে সরকারের ব্যয় কমেছে, অপচয় কমেছে; যা অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। তিনি বলেন, ‘কভিডের প্রথম দিকে স্বাস্থ্যব্যবস্থায় ঘাটতি ছিল। একেবারে তছনছ অবস্থা যেটি বলে। সে সময় প্রধানমন্ত্রী গণভবনে বসে একটি সভা করলেন। সারা দেশের ডিসি, ইউএনও, স্বাস্থ্যকর্মী সবার সঙ্গে তিনি সংযোগ স্থাপন করলেন। স্বাভাবিক সময়ে কি তিনি (প্রধানমন্ত্রী) এটি করতেন? এখানে কত খরচ সাশ্রয় হলো। আর প্রধানমন্ত্রীর একটি নির্দেশনায় সারা দেশে সিভিল সার্জন, চিকিৎসক, স্থানীয় প্রশাসন মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করলেন।’ বাংলাদেশ প্রতিদিনের এই ‘বিজনেস টক’ অনুষ্ঠানটি গতকাল বিকাল ৪টায় সরাসরি অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রচার করা হয়। এটি সঞ্চালনা করেন শামীমা দোলা।

সর্বশেষ খবর