মঙ্গলবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

বিক্ষোভে অচল মিয়ানমার

ফের শক্ত ব্যবস্থার হুমকি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের

প্রতিদিন ডেস্ক

নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত এবং অং সান সু চিসহ রাজনীতিকদের আটকের প্রতিবাদে গতকাল মিয়ানমারে সর্বাত্মক সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়েছে। এতে পুরো অচল হয়ে পড়ে দেশটি। ধর্মঘটের পাশাপাশি রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে। এর আগে সারা রাত সামরিক শাসনের প্রতিবাদে মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করা হয়। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ফের মিয়ানমার সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে ‘শক্ত ব্যবস্থা’ গ্রহণের হুমকি দিয়েছে। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, এএফপি, আলজাজিরা।

খবরে বলা হয়, গতকাল ভোর থেকে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। তারা বিক্ষিপ্ত সমাবেশ করে অবিলম্বে সামরিক জান্তাকে ক্ষমতা ছাড়ার আহ্বান জানায়। দেশের প্রধান প্রধান সব শহরে একই ধরনের কর্মসূচি পালন করা হয়। এর আগেই দিনভর সর্বাত্মক ধর্মঘট পালনের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছিল। সে অনুযায়ী মানুষ কর্মস্থল ত্যাগ করে রাস্তায় নামে। ফলে বন্ধ থাকে সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম। বন্ধ থাকে ব্যবসা-বাণিজ্য, কলকারখানা, অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজসহ সবকিছু। এতে গোটা দেশ অচলাবস্থার মুখে পড়ে। সংবাদসূত্রগুলো জানান, চলমান বিক্ষোভ আর নাগরিক অসহযোগ আন্দোলন সামাল দিতে ব্যর্থ হয়েছে জান্তা সরকার। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশের দূতাবাসের রাস্তা সেনারা ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দিয়েছে বলে জানান ইয়াঙ্গুনের বাসিন্দারা।

আরেক খবরে বলা হয়, অভ্যুত্থানবিরোধী আন্দোলনের পরিচিত মুখ মং সৌংখা গতকালের ধর্মঘট ও বিক্ষোভে যোগ দিতে সবার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। এ আহ্বানে তিনি এও বলেন, ‘যাদের বাইরে আসার সাহস নেই তারা ঘরে থাকুন। যেভাবেই হোক আমি বাইরে বের হব। আমি জেনারেশন জেডকে (চলতি শতকের দ্বিতীয় দশকে যারা প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছে) প্রত্যাশা করছি। পার্টনাররা চল একত্রিত হই।’ রবিবার রাতে ফেসবুক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।

শক্ত ব্যবস্থা নেবে যুক্তরাষ্ট্র : মিয়ানমারের সামরিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শক্ত ও জোরালো ব্যবস্থা নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। রবিবার রাতে টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে নিজ দেশের এমন অঙ্গীকারের কথা জানান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। টুইটে তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে পুনর্বহালের দাবি করায় যারা মিয়ানমারের মানুষের বিরুদ্ধে সহিংসতা চালায়, যুক্তরাষ্ট্র তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রাখবে। আমরা মিয়ানমারের জনগণের পাশে আছি।’ মিয়ানমারের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট এবং দেশটির ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ১০ দিনের মাথায় নিজ দেশের এমন অবস্থানের কথা জানান অ্যান্টনি ব্লিনকেন।

সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা ছাড়ার আহ্বান যুক্তরাজ্যের : গতকাল জাতিসংঘে মানবাধিকার কাউন্সিলে দেওয়া ভাষণে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজ দেশের এমন অবস্থান তুলে ধরেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব। তিনি আগেই জানান, মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে অবশ্যই দেশটির গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চিকে মুক্তি দিতে হবে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সম্মান প্রদর্শন করে বর্মি সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ গ্রহণযোগ্য নয়। সামরিক বাহিনীর অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারের পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো ঘটনা ঘটছে। গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে বিরুদ্ধমত রুদ্ধ করার প্রয়াস নিয়েছে জান্তা সরকার। এমন বাস্তবতায় আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে বর্মি সামরিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আরও ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবে যুক্তরাজ্য।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর