মঙ্গলবার, ৪ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

কথা বলা অপরাধ নয়

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

কথা বলা অপরাধ নয়

সম্প্রতি গ্রেফতার শিক্ষার্থীদের ঈদের আগেই জামিনে মুক্তির দাবি জানিয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, আমি মামলা প্রত্যাহারের কথা বলছি না, মামলায় যদি তারা অপরাধী হয়- হবে। কথা বলা অপরাধ নয়। কথা বলা যদি অপরাধ হয়ে থাকে তবে জেল জুলুম ফাঁসি দিয়ে দেন।

গতকাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘উদ্বিগ্ন অভিভাবক সমাজ’র ব্যানারে এক অবস্থান কর্মসূচিতে এই কথা বলেন তিনি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে গ্রেফতার ছাত্র-জনতার নিঃশর্ত মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।

কর্মসূচিতে অংশ নেন নাগরিক ঐক্যের আহ্‌বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম বাবলু, বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর প্রমুখ।

গ্রেফতার হওয়া ছাত্রদের ব্যাপারে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, তারা কী করেছে? তারা কি কাউকে খুন করেছে? কাউকে বলাৎকার করেছে, নাকি ছিনতাই করেছে? তারা মানুষের অধিকারের কথা বলেছে।

এটা যদি অপরাধ হয়ে থাকে, তাহলে তো আমিও সেই একই অপরাধে অপরাধী। এই ছাত্ররাই আমাদের কথা বলা শিখিয়েছে। ছাত্ররাই মানুষের অধিকারের কথা বলেছিল বলেই বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না।

অনুষ্ঠানে ছাত্রদের ঈদের আগে জামিন দেওয়ার ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে তাকে অনুরোধ করার কথা বলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

নাগরিক ঐক্যের আহ্‌বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, একটি সরকার কতটা দুর্বল হলে ৫৬ জন ছাত্রের ভয়ে কাঁপতে থাকে। ছাত্রনেতারা এমনকি করেছে যে, তারা জামিন পাবে না? তাদের জামিন দেওয়া হবে না কেন? রিমান্ডে অত্যাচার করে অভিযুক্তদের স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়। আদালত এ বিষয়ে জানেও। রিমান্ড ব্যবস্থা তুলে না নিলে দেশে রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করা মুশকিল হয়ে যাবে। তিনি বলেন, রাজনীতির নামে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির নামে বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মীদের জেলের মধ্যে আটকে রাখার কোনোই কারণ নেই। এ সময় তিনি গ্রেফতার ছাত্রনেতাদের মুক্তির দাবি জানান।

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, আজ বাংলাদেশে যে একটি ভয়ার্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, তাতে আমাদের কারও মনোবল দুর্বল হয়নি। যদি সরকার ভেবে থাকে, এই ৫৬ জন ছাত্রনেতাকে গ্রেফতার করে দেশের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করবে, সেটা কখনোই হবে না। ছাত্রনেতাদের মুক্তির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের যদি মুক্তি দেওয়া না হয়, তাহলে আমাদের ঈদ হবে গণভবনের সামনে।

পরে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ছাত্রদের ঈদের আগে জামিন দেওয়ার ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে তাকে অনুরোধ জানান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর