বাংলাদেশসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে করোনাভাইরাসের ৭০ লাখ ডোজ টিকা পাবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত বৃহস্পতিবার তার দেশের বৈশ্বিক টিকা বণ্টনের যে পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন, তা থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র : এএফপি।

প্রেসিডেন্ট বাইডেন জানিয়েছেন, তার দেশ বিশ্বজুড়ে ৮ কোটি ডোজ টিকা বণ্টনের পরিকল্পনা করেছে। আগামী জুলাইয়ের আগেই এসব টিকা সরবরাহ করা হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভ্যাক্স কর্মসূচির আওতায় এসব টিকার ৭৫ শতাংশ বণ্টন করা হবে। কোভ্যাক্সের আওতায় টিকা প্রাপ্তির অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চল। যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা অনুসারে, প্রথম চালানের আড়াই কোটি ডোজ টিকার ৭০ লাখ যাবে এশিয়ায়। বিশেষ করে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পাঁচ দেশ বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, আফগানিস্তান ও ভিয়েতনাম অগ্রাধিকার পাবে। ৬০ লাখের মতো টিকা যাবে দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকা এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলে। এসব অঞ্চলে অগ্রাধিকার পাবে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়া, কোস্টারিকা ও হাইতি। ৫০ লাখ ডোজ টিকা সংরক্ষিত থাকবে আফ্রিকার জন্য। আফ্রিকান ইউনিয়নের সহযোগিতায় এসব টিকা বণ্টন করা হবে বলে জানিয়েছেন বাইডেন প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। বাকি প্রায় ৬০ লাখ টিকা এমন সব দেশে সরাসরি বণ্টন করা হবে, যেখানে মহামারী আবারও নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি প্রতিবেশী কানাডা ও মেক্সিকো এবং দক্ষিণ কোরিয়া, ইউক্রেন, গাজা ও ইরাকের মতো অংশীদার গ্রাহকেরা টিকা পাবে বলে জানান সুলিভান।

করোনা মহামারী মোকাবিলায় হোয়াইট হাউসের সমন্বয়ক জেফ জিয়েন্টস সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রথম চালানে আড়াই কোটি ডোজ টিকা রপ্তানির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আমরা জুনের শেষ নাগাদ প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রতিশ্রুত ৮ কোটি ডোজ টিকা সরবরাহ করব।’ তিনি জানান, প্রথম চালানে জনসন অ্যান্ড জনসন, মডার্না এবং ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা থাকবে। এই তিন টিকা যুক্তরাষ্ট্রে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের অনুমোদন পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মজুদে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা থাকলেও তা এখনো অনুমোদন পায়নি।

বাইডেনের ওই ঘোষণার পরপরই টিকার সুষম বণ্টনের বৈশ্বিক জোট গ্যাভি (জিএভিআই) স্বাগত জানিয়েছে। এই জোটের প্রধান নির্বাহী সেথ বার্কলে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের ফলে আমরা করোনা মহামারীর ইতি টানতে পারব।’ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রিয়াসুস বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ প্রশংসার দাবিদার।