দীর্ঘ ৫৪ দিন এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এখন থেকে বাসায় তাঁর চিকিৎসা চলবে। তবে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁকে আবারও হাসপাতালে নেওয়া হতে পারে বলে মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য জানিয়েছেন।
এদিকে দলীয় চেয়ারপারসনের হাসপাতাল ছাড়ার আগাম খবরে এভারকেয়ার হাসপাতাল ও ফিরোজার সামনে নেতা-কর্মীরা জমায়েত হন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, আমিনুল হক, শহীদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাতে ফিরোজার সামনে সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালে থাকলে ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে চিকিৎসকরা মনে করছেন। সে কারণেই তারা তাঁকে (খালেদা জিয়া) বাসায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। বাসায় থেকে তিনি চিকিৎসা নেবেন। পোস্ট কভিড নানা জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে খালেদা জিয়া গত ২৭ এপ্রিল থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এক সময় তিনি শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে তাঁকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। প্রায় এক মাস পর গত ৩ জুন তাঁকে সিসিইউ থেকে কেবিনে ফিরিয়ে আনা হয়। এর আগে গত ১৪ এপ্রিল ফিরোজায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন তিনি। বেগম জিয়া করোনামুক্ত হন ৯ মে।মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য বলেন, গতকাল দুপুরে মেডিকেল বোর্ড নিয়মিত ফলোআপ বৈঠক করে। খালেদা জিয়াকে বাসায় নেওয়ার বিষয়ে সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়। প্রথমত, অনেক দিন হাসপাতালের সিসিইউ ও কেবিনে থাকার পর বাসায় ফিরতে এক প্রকার ব্যাকুল হয়ে পড়েন বেগম জিয়া। দ্বিতীয়ত, চিকিৎসকরা মনে করছেন দীর্ঘদিন হাসপাতালে থাকার ফলে নতুন কোনো সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ারও আশঙ্কাও রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট একজন চিকিৎসক বলেন, আমরা গত চার-পাঁচ দিন ধরে বিএনপি চেয়ারপারসনকে পর্যবেক্ষণে রেখেছিলাম। মেডিকেল বোর্ড সর্বশেষ স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদনে মোটামুটি সন্তুষ্ট হয়ে বাসায় নেওয়ার অনুমতি দেয়। তবে ছাড়পত্রে লেখা আছে, এক মাস পর তাঁকে (খালেদা জিয়া) হাসপাতালে ফলোআপ পরীক্ষার জন্য আসতে হবে। এর মাঝেও কোনো প্রয়োজন পড়লে অবশ্যই আসবেন। তবে এখন বাসাতেই তাঁর চিকিৎসা দেওয়া হবে। ওই চিকিৎসক আরও জানান, বেগম খালেদা জিয়া পুরোপুরি সুস্থ না হলেও শারীরিক পরীক্ষার প্যারামিটারগুলো সহনীয় পর্যায়ে আছে। ফুসফুসে আগের মতো সমস্যা নেই। লিভার, কিডনি ও হার্টে সমস্যা আছে। বাসায় সংশ্লিষ্ট রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা চিকিৎসা দেবেন। বাসায়ও যথাসম্ভব সে ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি আইসোলেশনে চিকিৎসকের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকবেন।