সোনিয়া আক্তার (ছদ্মনাম) বিউটি পারলারে চাকরি নিয়ে গেছেন ভারতের বেঙ্গালুরুতে। কিন্তু সাত দিন পরই ঢাকায় খবর আসে সোনিয়া ভীষণ অসুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সোনিয়ার মা আর ছোট বোন দীপা (ছদ্মনাম) বেঙ্গালুরুতে যোগাযোগ ঠিকমতো করতে পারছেন না। সোনিয়ার মা নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। এমন এক পরিস্থিতিতে নদী নামে এক তরুণী সোনিয়াদের ঢাকার বাসায় হঠাৎ এসে হাজির। এই নদীর মাধ্যমেই সোনিয়া চাকরি নিয়ে যায় বেঙ্গালুরুতে। অসুস্থ সোনিয়ার সুচিকিৎসার জন্য রক্তের সম্পর্কের কাউকে কাছে থাকতে হবে। মা নিজেই যেতে চান বেঙ্গালুরু। কিন্তু নদী বাধা দেয়। ছোট বোন দীপাকে যেতে বলে তার সঙ্গে। বড় মেয়ের খোঁজে মা তার ছোট মেয়ে দীপাকে তুলে দেন নদীর হাতে। তবে নিরাপত্তার জন্য সোনিয়ার এক খালাও দীপার সফরসঙ্গী হন। তাদের দুজনকে যশোরের সেই চোরাইপথে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বেঙ্গালুরুতে। মাঝে বিজিবির হাতে ধরাও পড়েছিল তারা। বেঙ্গালুরুর একটি বাসায় অসংখ্য মেয়েকে দেখে প্রথমে কিছু বুঝতে পারেননি দীপা আর তার খালা। তারা সোনিয়াকে দেখতে হাসপাতালে যেতে উদগ্রীব। হাসপাতালে না নিয়ে দীপা আর তার খালাকে আলাদা করে যখন দুটি হোটেলে পাঠানো হলো, তখনই বুঝতে পারেন তারা পাচার হয়ে গেছেন। এর পরের ঘটনা মর্মান্তিক। যৌন নির্যাতনের শিকার দীপা ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এক দিন হোটেলের জানালা ভেঙে পালান দীপা। পেছন ফিরে চাননি। বড় বোন সোনিয়া বা তার খালা কোথায় আছেন জানেন না দীপা। এই দীপা হাতিরঝিল থানায় মামলা করেছেন। বলেছেন তার পাচারের রোমহর্ষক কাহিনি। একই সঙ্গে পালিয়ে এসেছেন আরেক তরুণী। তিনিও একই থানায় মামলা করেছেন। হাতিরঝিল থানায় দায়ের করা মামলা দুটির নম্বর হলো ৩৮ ও ৩৯। ২০১২ সালের মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে গত শনিবার মামলা দুটি দায়ের হয়। দীপাদের বাসা ঢাকার যাত্রাবাড়ীর কাজলায়। চার বোন ও বাবা-মা ছয়জনের সংসার তাদের। অভাব অনটনের জন্য তারা লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারেননি। দীপার বড় বোন সোনিয়ার সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় নদী নামে এক তরুণীর। নদী তাকে বেঙ্গালুরুতে চাকরির প্রলোভন দেখায়। পারলারে নদী নিজেই ৩০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করে বলে জানায় সোনিয়াকে। সোনিয়া তার প্রস্তাবে রাজি হন। কিন্তু সোনিয়ার মা রাজি ছিলেন না। এরপরও অভাবের কারণে রাজি হন। দ্রুত না গেলে চাকরি পাবে না বলে বারবার নদী তাগাদা দেয় সোনিয়াকে। পাসপোর্ট ছাড়াই গত বছরের ২০ নভেম্বর বেঙ্গালুরুর উদ্দেশ্যে রওনা দেন সোনিয়া। নদীর কথামতো বাসে চড়ে যশোর। সেখানে তাদের লোকজনের মাধ্যমে সীমান্তের ওপারে নেওয়া হয়। সেখান থেকে পথে পথে হাতবদল হতে হতে বেঙ্গালুরু পৌঁছে যান। দুই দিন যোগাযোগ হলেও পরে আর যোগাযোগ করতে পারেন না। এরপর নদীর মাধ্যমেই ছোট বোন দীপা আর তার খালা বেঙ্গালুরু গিয়ে হোটেলে যৌন ব্যবসা করতে বাধ্য হন। সেখানে তাদের শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। এক পর্যায়ে সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়েন দীপা। সেখানেই কদিন পর দেখা হয় বড় বোন সোনিয়ার সঙ্গে। সোনিয়াকে চাকরির প্রলোভনে বেঙ্গালুরু নিয়ে যৌন ব্যবসায় নিয়োজিত করা হয়। তাতে করে তিনি সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েন। দীপা এক সময় অসুস্থ অবস্থায় বেঙ্গালুরু থেকে পালান। গত ৫ জুন দীপা বাংলাদেশে এসে পৌঁছান। এদিকে আরেক তরুণী টিকটক হৃদয় বাবুর ফাঁদে পড়ে বেঙ্গালুরুতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হন। বেঙ্গালুরু থেকে দুই তরুণী একই কায়দায় পালিয়ে আসেন বাংলাদেশে। এদের একজন হাতিরঝিল থানায় মামলা দায়ের করেন।
শিরোনাম
- সাড়ে ৯ ঘণ্টা পর ঢাকা-ময়মনসিংহে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
- নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে খালেদা জিয়া
- সাদিয়া আয়মানের অভিনয়ে মুগ্ধ অনিরুদ্ধ রায়
- গাইবান্ধা কারাগারে অসুস্থ হয়ে আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু
- আদাবরের শীর্ষ ছিনতাইকারী ‘চোরা রুবেল’ গ্রেপ্তার
- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
- শিক্ষার্থীদের বাড়ি পৌঁছে দিতে বিভাগীয় শহরে বাস দিল জবি
- ভূমিকম্প অনিশ্চিত তাই বিদ্যালয় বন্ধের সুযোগ নেই: প্রাথমিক শিক্ষা উপদেষ্টা
- ঢাকা মেডিকেলে একাডেমিক কার্যক্রম আগামী ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ
- বাগেরহাটে ৩ বান্ধবীকে শ্লীলতাহানি ও একজনকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা
- হাসিনা-কামালকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি দেওয়া হয়েছে : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
- পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ কার্নিভাল-৩ অনুষ্ঠিত
- নভেম্বরের ২২ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২১৩ কোটি ডলার
- ফ্যাসিজম সহ্য করা হবে না, নিজেরাও ফ্যাসিষ্ট হবো না: তানিয়া রব
- বন্ধ কারখানা চালুর দাবিতে শ্রমিকদের মানববন্ধন
- ৮১ দেশি পর্যবেক্ষকের সঙ্গে ইসির সংলাপ ২৫ নভেম্বর
- ‘ফ্যামিলি ম্যান থ্রি’: মনোজ নয়, জয়দীপের সিজন?
- টিকটক ইউজারদের জন্য চালু হলো টাইম অ্যান্ড ওয়েল-বিয়িং ফিচার
- পটুয়াখালীতে হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন
- বাংলাদেশের কাল ব্রুনাই চ্যালেঞ্জ