রবিবার, ১১ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

তথ্য নয় দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

তথ্য নয় দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করুন

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান স্বাস্থ্য খাতের তথ্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা না করে অনিয়ম-দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্‌বান জানিয়েছেন। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে কভিড-১৯ মহামারীর সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে এবং আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় প্রতিদিনই রেকর্ড ছাড়াচ্ছে। এমন সময় ঢাকার সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও রোগীর সেবাবিষয়ক যে-কোনো তথ্য গণমাধ্যমের কাছে প্রকাশে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। যা মুক্ত গণমাধ্যম ও অবাধ তথ্য প্রবাহের সাংবিধানিক অধিকার এবং তথ্য অধিকার আইনলব্ধ ‘তথ্য জানার অধিকার’-এর পুরোপুরি লঙ্ঘন। একই সঙ্গে তা স্বাধীন ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং গণমাধ্যমের অবাধ তথ্য সংগ্রহ ও প্রচারে ইচ্ছাকৃতভাবে বাধা প্রদানের শামিল। অবিলম্বে সরকারি হাসপাতাল থেকে গণমাধ্যমে তথ্য প্রদানে নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে প্রত্যাহার করুন। বিবৃতিতে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অবাধ তথ্য প্রবাহের মাধ্যমে সামষ্টিকভাবে মহামারী নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক প্রয়াস চালানোর বিপরীতে কাদের স্বার্থে এ ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো- এটা খতিয়ে দেখে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। মহামারী নিয়ন্ত্রণে চলা লকডাউনে এমনিতেই সাধারণের জন্য তথ্যপ্রাপ্তির সুযোগ সংকুচিত, সেখানে গণমাধ্যমকে তথ্য না দেওয়ার এমন নির্দেশ মানুষকে স্বাস্থ্যসেবার হালনাগাদ তথ্যপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত করবে। মাঠপর্যায়ের হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতার সত্যিকারের চিত্র পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। কী উদ্দেশ্যে স্থানীয়ভাবে তথ্যের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছেন? সেটি জরুরি ভিত্তিতে পরিষ্কার করতে হবে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, নির্দেশনা জারির পরদিনই স্বাস্থ্য অধিদফতর ১০টির বেশি জাতীয় দৈনিকে রাষ্ট্রীয় তথা জনগণের অর্থ ব্যয়ে ‘করোনার ভয়াবহতা ঠেকাতে বিধিনিষেধ আন্তরিক ও কঠোরভাবে পালনের আকুল আবেদন’ শীর্ষক বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে সাম্প্রতিক সময়ে স্বাস্থ্য খাতে কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি সংঘটিত হয়নি বলে সাফাই গাওয়ার অপচেষ্টা করেছে। অথচ গত এক বছরে স্বাস্থ্য খাতের নিয়োগ, ক্রয়, অবকাঠামো নির্মাণ ও সেবাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগুনতি অনিয়ম-দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার সংবাদ পত্রিকার পাতা খুললেই পাওয়া যায়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে উত্থাপিত প্রতিবেদনেও যা প্রতিভাত হয়েছে। টিআইবির সাম্প্রতিক গবেষণাগুলোতেও এ খাতে সুশাসনের ঘাটতির নানা চিত্র উঠে এসেছে, যা বিভিন্ন মহলে ব্যাপক আলোচিত হয়েছে। তাই অবিলম্বে এ ধরনের স্বেচ্ছাচারী আদেশ প্রত্যাহার করে অবাধ তথ্য প্রবাহের মাধ্যমে কার্যকরভাবে মহামারী নিয়ন্ত্রণে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। বিধিনিষেধের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহে বাধা সৃষ্টি স্বাস্থ্যসেবায় বিদ্যমান অনিয়ম-দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার তথ্য গোপন করে দুর্নীতিবাজদের বিশেষ সুবিধা দেবে।

সর্বশেষ খবর