মঙ্গলবার, ১২ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

সমুদ্রে ভাসমান সুইমিংপুল

রাশেদুর রহমান, মালদ্বীপ থেকে

সমুদ্রে ভাসমান সুইমিংপুল

মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে ভারত মহাসাগরে ভাসমান নান্দনিক সুইমিংপুল -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ভারত মহাসাগরের বিশাল ঢেউয়ের ধাক্কা সামলাতে তীর থেকে বেশ খানিকটা দূরে পাথরের স্তূপ ফেলা হয়েছে। তবে পানির গতিবিধিতে পুরোপুরি বাধা দেওয়া হয়নি। সমুদ্রের নোনাজল সারাক্ষণই আসা-যাওয়া করছে সেই পাথরের স্তূপের ফাঁক গলে। রংবেরঙের মাছ সাঁতার কাটছে। এর মধ্যেই ভাসমান সুইমিংপুল তৈরি করেছে মালদ্বীপ। মালে শহরের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত এই ভাসমান পুলটিই স্থানীয়দের জন্য সাঁতার প্রশিক্ষণের একমাত্র উপায়। সাঁতার শেখার জন্য এখানেই ছুটে আসেন সবাই। সারা দিন এই পুল উন্মুক্ত থাকে জনসাধারণের জন্য। কেবল বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সুইমিং অ্যাসোসিয়েশন অব মালদ্বীপ এটা ব্যবহার করে। এই সময়টা জাতীয় দলের সাঁতারুদের জন্য বরাদ্দ। চারদিকেই জলরাশি থাকায় এতদিন মালদ্বীপ সাঁতারের অবকাঠামো নিয়ে খুব একটা ভাবেনি। সমুদ্রে ভাসমান সুইমিংপুলেই কাজ চালিয়েছে। ন্যাচারাল ট্যালেন্টদের নিয়েই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতা করেছে। কিন্তু উন্নতমানের সুইমিংপুল ছাড়া আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতা করা যে প্রায় অসম্ভব এটা দুয়েক বছর আগে বুঝতে পেরেছে তারা। হুলহুমালে দ্বীপে গড়ে তুলেছে পাঁচ লেন বিশিষ্ট ২৫ মিটারের একটি সুইমিংপুল। সুইমিং অ্যাসোসিয়েশন অব মালদ্বীপের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হাসান সিরার বললেন, ‘গত বছর থেকে আমরা ২৫ মিটারের সুইমিংপুল ব্যবহার করছি। এর আগে সমুদ্রে ভাসমান সুইমিংপুলই ছিল আমাদের একমাত্র উপায়। এখানেই আমরা ট্রায়াল করতাম। এখানেই অনুশীলন করতাম। তবে আন্তর্জাতিক কোনো টুর্নামেন্টের প্রস্তুতির জন্য আমরা বিদেশে ক্যাম্প করতাম আগে।’ তিনি জানালেন শিগগিরই মালেতেও সুইমিংপুল তৈরি হবে। এটা হবে ৫০ মিটারের। মহাসমুদ্রের বুকে অবস্থান হলেও সাঁতারের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তেমন কোনো সাফল্য নেই মালদ্বীপের। গত এস এ গেমসে কোনো পদকই পায়নি তারা। এর কারণ হিসেবে অবকাঠামোর কথাই বললেন হাসান। তিনি বলেন, ‘সমুদ্রে যে পুল আছে তা দিয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া যায় না। কারণ, এখানে ফ্রেশ ওয়াটার নেই। ভাসমান এই পুলে পানির ঘনত্ব আর সুইমিংপুলের পানির ঘনত্বে অনেক তফাৎ। এসব কারণে আমরা ঠিকভাবে প্রস্তুতি নিতে পারি না।’ মালদ্বীপের আরও পাঁচটি দ্বীপে এমন ভাসমান সুইমিংপুলের ব্যবস্থা আছে।

সকালে অনুশীলন শেষ করে মালদ্বীপ ক্রিকেট দলের ওমর সুইমিংপুলে এসে বললেন, ‘আমরা অনুশীলন শেষ করে এখানে প্রতিদিনই সাঁতরাতে আসি। নোনাজলে সাঁতার দিয়ে শরীরের ছোটো খাটো ব্যথা দূর করি।’ পেশাদার সাঁতারুদের জন্য উপযুক্ত না হলেও এই স্ইুমিংপুল সাধারণ মানুষের বিনোদনের জন্য আদর্শ এক স্থান। ছেলে-বুড়ো, নারী-পুরুষ সবাই এখানে এসে সাঁতার দিয়ে শরীর ও মনের ক্লান্তি দূর করে। দুপুরটা এখানে ফাঁকা থাকলেও সকাল-সন্ধ্যায় ভিড় লেগেই থাকে।

সর্বশেষ খবর