বাংলাদেশের পর্বতারোহী শায়লা বিথী হিমালয়ের আইল্যান্ড পিক জয় করেছেন। তিনি সোমবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে পর্বতটির চূড়ায় পৌঁছান। কাঠমান্ডু থেকে রওনা দিয়ে ১১ দিনে হিমালয়ের ৬১৬০ মিটার উঁচু এই পর্বতটি জয় করলেন তিনি। এই অভিযানে শায়লা বিথী হিমালয়ের বিখ্যাত ‘থ্রি পাস’ পাড়ি দেন। তিনি গত ৬ নভেম্বর কংমালা পাস, ৪ নভেম্বর চোলা পাস, ২ নভেম্বর রেঞ্জোলা পাস পাড়ি দেন। অভিযানে শায়লা বিথীর সঙ্গে একজন নেপালি শেরপা ও একজন পোর্টার ছিলেন। এ অভিযানে আইল্যান্ড পিকের চূড়ায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি পৌঁছে দিয়েছেন শায়লা। তিনি ধর্ষণ, সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী এবং পরিবেশ রক্ষায় নানা বার্তা সম্বলিত প্ল্যাকার্ডও বহন করেন। শায়লা বিথী গত ২৫ অক্টোবর নেপালের কাঠমান্ডুর উদ্দেশে ঢাকা থেকে যাত্রা করেন। এরপর ২৮ অক্টোবর ভোরে কাঠমান্ডু থেকে বিমানে করে লুকলা গিয়ে পৌঁছেন। লুকলা থেকেই মূলত অভিযাত্রীদের ট্রেকিং শুরু হয়। লুকলা নেমে সেখান থেকে ফাকদিন নামের একটি গ্রামে রাত্রিযাপন করেন। পর দিন তারা নেপালের বিখ্যাত পাহাড়ি শহর নামচে বাজার পৌঁছান। ৭ নভেম্বর বিকাল ৪টার দিকে আইল্যান্ড পিকের হাই ক্যাম্পে পৌঁছান শায়লা বিথী। সেখান থেকে পরদিন রাত ২ টা ২০ মিনিটে পর্বত চূড়ার দিকে যাত্রা শুরু করেন। সকাল ৮ টা ৩৫ মিনিটে চূড়ায় পৌঁছে যান। পরে তিনি সেখান থেকে সফলভাবে নেমে আসেন। এখন তিনি ফেরার পথে রয়েছেন। আগামী ১২ নভেম্বর শায়লা বিথীর কাঠমান্ডুতে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। সেখান থেকে তিনি ১৫ নভেম্বর ঢাকায় ফিরবেন।
গত বছর স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে একটি ৬ হাজার, একটি ৭ হাজার ও একটি ৮ হাজার মিটার পর্বত অভিযানের ঘোষণা দেন শায়লা বিথী। এ অভিযানের অন্যতম লক্ষ্য পৃথিবীর সর্বোচ্চ স্থান এভারেস্টের চূড়ায় বাংলাদেশের পতাকা ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি পৌঁছে দেওয়া। ঢাকা ট্রাভেল অ্যান্ড ট্রেকিং ক্লাব এ অভিযানটির তত্ত্বাবধান করছে। শায়লা বিথী প্রথম পর্বত জয় করেন ২০১৬ সালে। এ বছর তিনি হিমালয়ের ৬৪৭৪ মিটার উঁচু মেরা পিক জয় করেন। এরপর ২০১৮ সালে তিনি তিব্বতের ৭০৪৫ মিটার উঁচু লাকপারি পর্বত জয় করেন। ২০১৯ সালে তিনি প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে হিমালয়ের দুর্গম তাশি লাপচা পাস অতিক্রম করেন। এক বিবৃতিতে শায়লা বিথী বলেন, একজন পর্বতারোহী হিসেবে এদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির জনকের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আমি এ অভিযানের পরিকল্পনা করি। এ অভিযানে যারা সহযোগিতা করেছেন আমি প্রতি কৃতজ্ঞ।
