সোমবার, ৩ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনা চেয়ে চিঠি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র‌্যাব এবং এর বর্তমান-সাবেক সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনকে চিঠি দিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। বড়দিন ও নববর্ষের ছুটির পর যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিজে গিয়ে চিঠিটি দিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। গতকাল সিলেটে নিজেই সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে গত ১৫ ডিসেম্বর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের সঙ্গে ফোনালাপ হয় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিনকেনের। সেই ফোনালাপের কথা  উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওই ফোনালাপের পর পরই চিঠিটি তৈরি করা হয়েছিল। আমাদের আলাপটাও পজিটিভ ছিল। উনি বলেছেন, অনেক ল মেকার এটা ম্যান্ডেট করেছেন, পরে সিদ্ধান্তটা হয়েছে। আমরা বললাম, বিভিন্ন ব্যাপারে আপনাদের (যুক্তরাষ্ট্র) সঙ্গে আমাদের ৫০ বছরের সম্পর্ক। বেশ উত্তম সম্পর্ক। বিভিন্ন ডায়ালগের সুযোগ আছে। আমরা কোনো কিছু না জেনে হঠাৎ করে অপ্রত্যাশিত এই সিদ্ধান্ত জেনে আমরা বিস্মিত হয়েছি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, এটাও বললাম, র‌্যাব একটি ক্রেডিবল অর্গানাইজেশন, এদের কারণে সন্ত্রাস কমেছে। এদের কারণে ড্রাগ মোটামুটি নিয়ন্ত্রিত, মানব পাচারও নিয়ন্ত্রিত- যেটা তাদেরও নীতি। দুই দেশেই বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড ঘটার কথা ব্লিনকেনের কাছে ফোনালাপে তুলে ধরার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এখানেও পুলিশ মেরে ফেলে। ওখানেও মারে। আপনার দেশে তো হাজারখানেক লোক মেরে ফেলে, আর আপনারা বলেছেন যে, ১০ বছরে কয়েক শ লোক, ৪০০ লোক মেরে ফেলেছে। অনেকটা মনে হচ্ছে ওদের জিনিসটা ঠিক হয়নি। মানবাধিকার প্রশ্নে সরকারের সোচ্চার থাকার কথা চিঠিতে তুলে ধরার কথা জানিয়ে মোমেন বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের কোনো ছাড় নেই। এমনকি র‌্যাবের যারা কিছু বাজে কাজ করেছে, তাদের শাস্তি হয়েছে। শক্তিশালীদের ক্ষেত্রেও আইন ছিল অন্ধ। আমরা সে কথাই লিখেছি উনাকে। আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, তারা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবে কি-না, সেটা তাদের বিষয়। আমরা সরাসরি বলিনি, প্রত্যাহার করো। আমরা বলেছি র‌্যাব ভালো প্রতিষ্ঠান, তারা তাদের সিদ্ধান্ত পুনঃপরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারে। তিনি বলেন, আমি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছি, এটা মনে হয় ঠিক হয়নি এবং এটি পুনর্বিবেচনার সুযোগ আছে। যে কথাগুলো ওনার সঙ্গে হয়েছে সেগুলো আবার চিঠিতে লিখেছি।

গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‌্যাব ও সংস্থাটির সাবেক-বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর গত বছরের ১০ ডিসেম্বর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে পৃথকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দফতর। নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা কর্মকর্তাদের মধ্যে আছেন র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বর্তমান পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ, র‌্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আনোয়ার লতিফ খান ও র‌্যাব-৭ এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদ।

সর্বশেষ খবর